ভূপেন হাজারিকাকে 'ভারতরত্ন'
ভারতের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রয়াত ভূপেন হাজারিকাকে এবার ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হলো। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে তা জানানো হয়েছে। এবার আরও দুজনকে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে। ‘ভারতরত্ন’ পাওয়া অন্য দুজন বিশিষ্টজন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং সমাজসেবী নানাজি দেশমুখ। ভূপেন হাজারিকা আর নানাজি দেশমুখকে দেওয়া হবে মরণোত্তর সম্মান।
ভূপেন হাজারিকার জন্ম আসামের সাদিয়ায় ১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। তিনি প্রয়াত হন ৮৫ বছর বয়সে, ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে। ভূপেন হাজারিকা আসামের মানুষ হলেও তিনি ছিলেন বাঙালিদের ভালোবাসার শিল্পী। গেয়েছেন প্রচুর বাংলা গান। অসমিয়া, বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রের জন্যও তিনি অনেক গান গেয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যে গানগুলো গেয়েছিলেন, তা শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রেখেছে এ দেশের মানুষ। সেই অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০১১ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ দিয়েছে।
এ ছাড়া ১৯৯২ সালে তিনি পেয়েছেন ভারতের সংস্কৃতি অঙ্গনের সর্বোচ্চ সম্মান ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পদক। আরও পেয়েছেন ২০০৯ সালে ‘আসামরত্ন’ পদক, ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মভূষণ’ পেয়েছেন ২০০১ সালে, ‘পদ্মবিভূষণ’ পেয়েছেন ২০১২ সালে। পেয়েছেন সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।
ভূপেন হাজারিকা এবার পেলেন মরণোত্তর ‘ভারতরত্ন’। এই সম্মানপ্রাপ্তির খবরে এক টুইটবার্তায় অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন, ‘ভূপেন হাজারিকার গান ও সংগীত প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর এই গানে ন্যায়, ঐক্য আর সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা বিভিন্ন সময় ধ্বনিত হয়েছে। তিনি ভারতীয় সংগীতকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ভূপেনদাকে ভারত রত্নœদেওয়ার সিদ্ধান্ত যথাযথ হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তে আমি খুশি হয়েছি।’
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ভূপেন হাজারিকাকে এই সম্মান দেওয়ায় খুশি হয়ে বলেছেন, আসামবাসীর দীর্ঘদিনের এক দাবি পূরণ হলো। ভূপেন হাজারিকা সারা জীবন মানুষের গান গেয়েছেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধের এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন সব ধর্ম আর মানুষের এক মিলনসেতু।