বিরতির পর এন্ড্রু কিশোরের কেমো শুরু
ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অসুবিধার কারণে বিগত এক মাস কেমোথেরাপি বন্ধ ছিল। এ সময়ে কেমো নেওয়ার মতো তাঁর শারীরিক অবস্থা ছিল না। শারীরিক সমস্যার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকাল হাসপাতালে কেমোথেরাপি প্রস্তুত রাখা হয়। আজ শনিবার সকাল থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পুনরায় কেমোথেরাপি শুরু হয়েছে।
প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন এন্ড্রু কিশোরের শিষ্য, কণ্ঠশিল্পী মোমিন বিশ্বাস। তিনি আজ দুপুরে জানান, এটি এন্ড্রু কিশোরের ১৮তম কেমোথেরাপি। এটি সফলভাবে শেষ হলে ক্রমান্বয়ে বাকি আরও ৬টি কেমো দেওয়া হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। মোমিন বিশ্বাস সরকারের সঙ্গে দেশের চলচ্চিত্র, সংগীত, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন অঙ্গনের লোকজনকে এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসার সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছেন।
মোমিন বিশ্বাস বলেন, ‘এর আগে মূলত বাসায় থেকে চিকিৎসা চলছিল। কেমো দেওয়ার সময় বা কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হতো গুণী এ শিল্পীকে। দু-এক দিন থাকতেন, তারপর আবার বাসায় চলে যেতেন। কিন্তু এক মাস ধরে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি হাসপাতালেই ভর্তি আছেন। কেমোর পরিমাণও বাড়িয়েছেন চিকিৎসকেরা। এসব নানা কারণে দাদার চিকিৎসার খরচও অনেক বেড়ে গেছে। সেটার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে পরিবার। আমরাও আশা করেছিলাম ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দাদাকে দেশে নিয়ে আসতে পারব। আর তা সম্ভব হচ্ছে না। সবাই দাদার জন্য দোয়া করবেন। শিগগিরই যেন সুস্থ হয়ে তিনি নিজের দেশে ফিরতে পারেন। আগের মতো যেন গাইতে পারেন।’
এন্ড্রু কিশোর বর্তমানে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। শরীরে নানা ধরনের জটিলতা নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছিলেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার শরীরে নন-হজকিন লিম্ফোমা ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। গত তিন মাস একনাগাড়ে তাঁর চিকিৎসা চলে। চিকিৎসার শুরুতে জানানো হয়েছিল, এন্ড্রু কিশোরকে ৬টি ধাপে ২৪টি কেমো দিতে হবে। ইতিমধ্যে ৪টি ধাপে তার ১৭টি কেমো সম্পন্ন হয়েছে। এক মাস আগে পঞ্চম ধাপে প্রথম কেমোথেরাপির প্রস্তুতি চলছিল। তবে তা তখন শুরু করা যায়নি। আজ শুরু হলো। এটি সফলভাবে দেওয়া হলে পর্যায়ক্রমে বাকি ৬টি কেমো দেওয়া হবে।
সংগীতজীবনের শুরুতে আবদুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে প্রাথমিকভাবে সংগীত চর্চা শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। চলচ্চিত্রে তাঁর প্লে-ব্যাক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে আলম খান সুরারোপিত ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে। এরপর তাঁর গাওয়া অনেক গান জনপ্রিয় হয়। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদান রাখার জন্য তিনি কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।