ফকির আলমগীরের ইচ্ছা পূরণ করলেন মেয়র

নিজের নামে একটি সড়কের নামকরণ হোক—এমনটাই চেয়েছিলেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে আলাপে আলাপে এমন একটি ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছিলেন শিল্পী। কিন্তু করোনার কারণে দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকায় জীবিত অবস্থায় তা দেখে যেতে পারেননি এই সংগীতশিল্পী। মৃত্যুর দুই মাসের মাথায় সিটি করপোরেশন বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফকির আলমগীরের নামে একটি সড়কের নাম করেছে।

ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন
ছবি : সংগৃহীত


ঢাকার খিলগাঁও চৌধুরীপাড়ার ৬ নম্বর সড়কটি মুক্তিযোদ্ধা ও গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের নামে রাখা হয়েছে। এই সড়কেই ফকির আলমগীরের বাসা। গতকাল রোববার গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের অষ্টম বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। আতিকুল ইসলাম জানান, শুধু নামকরণ নয়, সড়কে একটি ফলকও থাকবে, সেখানে একনজরে ফকির আলমগীর সম্পর্কে জানতে পারবেন পথচারীরা।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বোর্ড সভায় আমরা ফকির আলমগীরের নামে সড়কের সিদ্ধান্ত নিই। এটা করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি
ফাইল ছবি

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফকির আলমগীর গান গেয়ে দেশের মানুষের মনে প্রাণের সঞ্চার করতেন। বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিল চোখে পড়ার মতো। মারা যাওয়ার আগে তিনি একবার আমার কাছে এসেছিলেন, এ ধরনের একটি অনুরোধও করেন। আমিও তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলাম, বোর্ড সভায় আপনার প্রস্তাব আমরা ওঠাব। করোনার কারণে বোর্ড সভা বারবার পিছিয়ে যায়। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চালু হওয়ার পর প্রথম বোর্ড সভায় আমরা ফকির আলমগীরের নামে সড়কের সিদ্ধান্ত নিই। এটা করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।’

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর

ফকির আলমগীর ষাটের দশক থেকে সংগীতচর্চা করেছেন। গান গাওয়ার পাশাপাশি বংশীবাদক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। বাংলাদেশের সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে তিনি তাঁর গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন–সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। উনসত্তরের গণ–অভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচার শাসনবিরোধী গণ–আন্দোলনে তিনি শামিল হয়েছিলেন তাঁর গান নিয়ে।