ভারতীয় আয়কর বিভাগ মাদ্রাজ হাইকোর্টে এ আর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অস্কারজয়ী এই সংগীত পরিচালকের বিরুদ্ধে ২০১১-১২ অর্থবছরে একটি বিশেষ আয়ের কর ফাঁকির অভিযোগ করা হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে এর জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সংগীত ব্যক্তিত্বকে।
২০১১ সালে লিবরা নামের একটি ব্রিটিশ মোবাইল কোম্পানির সঙ্গে তিন বছরের জন্য চুক্তি করেন এ আর রহমান। কোম্পানিটির জন্য রিংটোন বানানোর দায়িত্বে ছিলেন এই সংগীতশিল্পী। কথা ছিল, এ জন্য এ আর রহমানের ইংল্যান্ড সফরের সব খরচ বহন করবে এই টেলিকম ব্র্যান্ড। আর প্রতিবার ওই রিংটোন ডাউনলোড বাবদ একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেবে। সব মিলিয়ে প্রথম বছরে এ আর রহমান পান সাড়ে সাত লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ সময়ে যা প্রায় ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকার সমান। অভিযোগ উঠেছে, এ আয় বাবদ কোনো কর দেননি এই সংগীত তারকা।
২০০৬ সালে এ আর রহমান একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান খোলেন। নাম ‘এ আর রহমান ফাউন্ডেশন’। বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করা ও দরিদ্র শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়া এ সংস্থার কাজ। এ আর রহমান তাঁর নিজের ব্যাংক একাউন্টে টাকা না নিয়ে এ সংস্থার একাউন্টে টাকা নেন। ইনকাম ট্যাক্সের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে যে অর্থ যাবে, তা দান হিসেবে বিবেচিত হবে। আর এর কোনো আয়কর দেওয়া লাগবে না।
কিন্তু কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে আয়ের পর সরাসরি সেই অর্থ কোনো ফাউন্ডেশনের ব্যাংক একাউন্টে নেওয়া যাবে না। লিবরা কোম্পানি তো এ ফাউন্ডেশনে এই অর্থ দান করেনি। পারিশ্রমিক আগে নিজের ব্যাংক একাউন্টে রেখে আয়কর দিয়ে তারপর ওই অর্থ দাতব্য সংস্থায় দেওয়া যাবে।
আইনি ওই নোটিশে লেখা হয়েছে, ‘তিনি যে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে যা আয় করেছেন, সেটা সম্পূর্ণ আয়করের অধীনে। এই অর্থ দিয়ে তিনি যা খুশি তা–ই করতে পারেন, তবে আয়কর পরিশোধের পর। কিন্তু সরাসরি কর ফাঁকি দিয়ে তিনি ফান্ডে তাঁর পারিশ্রমিক নিতে পারেন না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। ২০১১ সালের ভারতীয় মুদ্রায় তিনি ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন, যার আয়কর পরিশোধযোগ্য।’
অন্যদিকে এ আর রহমান ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব এই কর পরিশোধের ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যে চেন্নাই শাখার ইনকাম ট্যাক্স অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে এ আয়কর সমন্বয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি।’
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘১৪ বছর ধরে আমাদের সংস্থাটি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করাচ্ছে। তাদের গান শেখাচ্ছে। চেন্নাইয়ের বন্যায় আমাদের সংস্থা দারুণ সহযোগিতা করেছে। আর এ মহামারিকালেও সাহায্য নিয়ে অসংখ্য মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।’