বিয়ন্সে ছাড়া আর কে হতেন
সব পরিসংখ্যান তাঁর পক্ষেই কথা বলবে, কিন্তু বিয়ন্সেকে ঠিক পুরস্কার আর টপ চার্টের অবস্থান দিয়ে বোঝানো যায় না। গত দুই যুগে কৃষ্ণাঙ্গ গায়িকা হিসেবে বিয়ন্সে যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন, পপ কালচারে তাঁর যে প্রভাব, সেটা বোঝাতে কোনো পরিসংখ্যানই যথেষ্ট নয়। এই সময়ের বিচারে হয়তো সবচেয়ে জনপ্রিয় পপ তারকার জরিপ করলে টেলর সুইফট এগিয়ে থাকবেন, কিন্তু হিসাবটা যখন এই শতকের; বিয়ন্সে সেখানে অনায়াসে সবাইকে টেক্কা দেবেন। অনুমিতভাবেই বিলবোর্ডের একুশ শতকের সেরা পপ তারকার তালিকায় শীর্ষে জায়গা পেয়েছেন ৪৩ বছর বয়সী গায়িকা।
২০০০ সালের ১৮ মার্চ। এই শতকে প্রথমবার বিলবোর্ড হট ১০০ তালিকার শীর্ষে উঠে আসেন বিয়ন্সে। গায়িকা তখন ছিলেন নারীদের ব্যান্ড ডেস্টিনিস চাইন্ডের সদস্য। ‘সে মাই নেম’ নামে গানটি প্রকাশের পরই ঝড় তুলেছিল। বিলবোর্ড, রোলিং স্টোনসহ সব গণমাধ্যমের বিচারেই সর্বকালের সেরা গানের তালিকায় জায়গা পেয়েছে এটি। এবার আসা যাক চলতি বছরের মার্চে। ২ মার্চ বিয়েন্সের গান ‘টেক্সাস হোল্ড ’এম’ বিলবোর্ড হট ১০০-এর শীর্ষে উঠেছিল, যা ছিল এই শতকে বিলবোর্ডের হট ১০০ তালিকার শীর্ষে জায়গা পাওয়া বিয়ন্সের ১২তম গান। এ ছাড়া বিলবোর্ডের অ্যালবাম চার্টে ছিল বিয়ন্সের ১০টি অ্যালবাম।
গানের কথা তো গেল, এবার আসা যাক পুরস্কার প্রসঙ্গে। গত মাসেই গ্র্যামি মনোনয়নে রেকর্ড গড়েছেন বিয়ন্সে। ৬৭তম গ্র্যামির মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়। যেখানে সর্বোচ্চ ১১ মনোনয়ন পেয়েছেন বিয়ন্সে।
সব মিলিয়ে গায়িকার গ্র্যামি মনোনয়নের সংখ্যা হলো ৯৯। এত মনোনয়ন নেই আর অন্য কোনো শিল্পীর। এখন পর্যন্ত ৩২টি গ্র্যামি জিতেছেন বিয়ন্সে, ৩০টি এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস এবং বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস আছে ২৭টি।
১৯৮১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে জন্ম বিয়ন্সের। চলতি বছরের ২৯ মার্চ মুক্তি পাওয়া নিজের সর্বশেষ অ্যালবাম ‘কাউবয় কার্টার’ দিয়ে গায়িকা যেন ফিরে গেছেন নিজের শৈশবে। অ্যালবামটিতে গানে গানে মূলত কৃষ্ণাঙ্গ কাউবয়দের সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন বিয়ন্সে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে লোকসংগীত, রক অ্যান্ড রোল, জ্যাজ, পপসহ নানা ধরনের গান শুনে বড় হয়েছেন বিয়ন্সে। অ্যালবামটিতে শৈশব আর কৈশোরে শোনা সেসব গানের মূল ভাব ছড়িয়ে দিয়েছেন এই প্রজন্মের শ্রোতাদের কাছে। কণ্ঠে মাদকতা, মঞ্চে বুনো পারফরম্যান্স, গানের কথায় শিকড়ের গন্ধ, নারী স্বাধীনতা মিলিয়ে এমন গায়িকা বিশ্বসংগীত আর কবে পাবে, কে জানে।
সেরা পাঁচে আরও যাঁরা
তালিকার দুইয়ে আছেন টেলর সুইফট। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সংগীতে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর দুর্দান্ত সব গান, একের পর এক পুরস্কার, রেকর্ড কোম্পানির সঙ্গে লড়াই মিলিয়ে সুইফট হয়ে উঠেছেন বিশ্বসংগীতের অন্যতম শীর্ষ তারকা। তিনি তৈরি করেছেন অবিশ্বাস্য এক ভক্ত-অনুরাগীর দল, যারা পরিচিতি পেয়েছে ‘সুইফটিজ’ নামে। তাঁর চলমান ‘দ্য ইরাস ট্যুর’ কনসার্ট নানা বিচারেই হয়ে উঠেছে এই শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কনসার্ট ট্যুর।
বিলবোর্ড–এর তালিকার তিনে রয়েছেন ক্যারিবিয়ান গায়িকা রিয়ানা। ইদানীং তিনি গান নয়; বরং ব্যবসা নিয়েই বেশি ব্যস্ত। তবে গান, নানা দাতব্য কার্যক্রম দিয়ে তাঁর যা সামাজিক অবদান, তাতে রিয়ানাকে ভোলা কঠিন। গায়িকাদের মধ্যে প্রথম বিলিয়নিয়ার তিনি। টপ চার্টে শীর্ষ স্থান, পুরস্কারের বিচারে কাগজে–কলমে তাঁর চেয়ে অনেক শিল্পী আছেন, কিন্তু একেবারে ভিন্নধর্মী গায়কি আর মাদকতা মিলিয়ে রিয়ানার বিকল্প আসলে কেউই নেই। তাই অনেক দিন গানে সেভাবে সক্রিয় না থেকেও ঠিকই তালিকার তিনে আছেন ৩৬ বছর বয়সী তারকা।
সেরা পাঁচে থাকা একমাত্র পুরুষ সংগীতশিল্পী ড্রেক। এই কানাডীয় র্যাপার আছেন ৪ নম্বরে। শুরুতে অভিনয় করতেন, তবে ২০১০, ২০১১ ও ২০১৩ সালে তিন অ্যালবাম দিয়ে বলা যায় রাতারাতি বিশ্বসংগীতে নিজের অস্তিত্ব জানান দেন তিনি। গত ১৫ বছরে হয়ে উঠেছেন তরুণদের অন্যতম প্রিয় শিল্পী।
অদ্ভুত পোশাক দিয়ে বারবার চমকে দেন তিনি। হালে অভিনয় দিয়েই বেশি আলোচিত। শৈশবটা কেটেছে নানা যন্ত্রণায়। গানে গানে সেসব ঘটনার অনেক কিছুই তুলে এনেছেন লেডি গাগা। তাঁকে বলা হয় পপ গানের রানি, ‘বিতর্কের রানি’ বললেও ভুল হয় না। তবে প্রতিভাবান এই খ্যাপাটে তারকা নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে সব ভুলিয়ে দিয়েছেন বারবার। তিনি আছেন তালিকার পাঁচে।
এই শতকের সেরা ২৫ পপ তারকা
বিয়ন্সে
টেলর সুইফট
রিয়ানা
ড্রেক
লেডি গাগা
ব্রিটনি স্পিয়ার্স
কেনি ওয়েস্ট
জাস্টিন বিবার
আরিয়ানা গ্রান্দে
অ্যাডেল
আশার
এমিনেম
নিকি মিনাজ
জাস্টিন টিম্বারলেক
মাইলি সাইরাস
জে-জেড
বিটিএস
ব্রুনো মার্স
লিল ওয়েন
ব্যাড বানি
এড শিরান
কেটি পেরি