জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র কল্যাণে দেশজুড়ে পরিচিতি পাওয়া কণ্ঠশিল্পী আকবরের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে উপস্থাপক হানিফ সংকেত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আকবরের সংগীতজীবনের উত্তরণের পথটা সহজ ছিল না। ২০০৩ সালে যাত্রার পর থেকে অনেকটা একাই ওকে নিয়ে যুদ্ধ করেছি। আকবর খুব বেশি গান করেনি। তবে যে কটা করেছে, তা সব প্রজন্মের শ্রোতাদের আবেগ-অনুভূতি ছুঁয়ে গেছে, যা তাকে বাঁচিয়ে রাখবে অনেক দিন।’
রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আকবর। তিনি ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। দুই বছর ধরে শরীরে বাসা বেঁধেছিল জন্ডিস। এ ছাড়া কিডনিতে সমস্যা, রক্তের প্রদাহসহ ছিল নানা শারীরিক জটিলতা।
২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।
এক ফেসবুক পোস্টে হানিফ সংকেত লিখেছেন, ‘আজ দুপুরে আকবরের স্ত্রী হঠাৎ ফোন করে অঝোরে কাঁদছিল, বলল, “আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গ্যাছে।” ফোনটা যখন পাই, তখন আমি রংপুরে পরবর্তী “ইত্যাদি”র জন্য একটি প্রতিবেদন ধারণ করছিলাম। ফোন পেয়েই বুঝেছিলাম, আকবর আর নেই। কারণ, বেশ কিছুদিন থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। ক্রমেই অবনতি হচ্ছিল। নিয়মিত খোঁজ রাখছিলাম। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা হচ্ছিল। লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, সবকিছু মিলিয়ে শারীরিক অবস্থা ছিল অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে এটুকু সান্ত্বনা, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আকবরের চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং আর্থিক সহায়তাও দিয়েছিলেন। এ ছাড়া অনেকেই তাকে সাহায্য–সহযোগিতা করেছেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। গান শেখা হয়নি। তবে আকবরের ভরাট কণ্ঠের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন তিনি।