হাতিরপুল সেশনসের তৃতীয় মৌসুমে কী থাকছে?

হাতিরপুল সেশনসের তৃতীয় মৌসুম থেকে প্রকাশিত প্রথম গান ‘বিরতি’র সেটে মিউজিশিয়ানরা। ছবি: হাতিরপুল সেশনস
প্রথম দুই মৌসুমে ‘উপ’, ‘শহরের দুইটা গান’, ‘মনোহর’-এর মতো গান প্রকাশ করে শ্রোতৃমহলে পরিচিতি পেয়েছে সংগীত প্ল্যাটফর্ম হাতিরপুল সেশনস। ১০ অক্টোবর ‘বিরতি’ শিরোনামের গান নিয়ে শুরু করেছে তৃতীয় মৌসুম। তৃতীয় মৌসুম নিয়ে প্ল্যাটফর্মের চার প্রতিষ্ঠাতা অনয় চৌধুরী, অনিরুদ্ধ অনু, মার্ক রাতুল সিনহা ও শাহানাজ পারভীন জোনাকির সঙ্গে কথা বলেছেন মকফুল হোসেন
প্রথম আলো:

হাতিরপুল সেশনসের তৃতীয় মৌসুমে কী থাকছে?

অনু: গতবারের মতো এবারও ১২টি গান থাকবে। হাতিরপুল সেশনস সব সময় বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন রুচির মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে কাজ করতে চায়। একেকজন যেহেতু একেক ধরনের গান করেন, সেহেতু বিভিন্ন জনরার অনুপ্রেরণা এক হয়ে এই মৌসুমের গানের সৃষ্টি হয়েছে। এই মৌসুমে প্রায় ২৫ মিউজিশিয়ান কাজ করেছেন। তাঁদের সবার কাজের প্রতিফলন ১২ গানে দেখা যাবে।

জোনাকি: সেটের ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন করা হয়েছে। গতবারের টু–ডি দেয়ালে পেইন্টিংয়ের জায়গায় থ্রি-ডি মডিউল দিয়ে কাজ করেছি। মডিউলগুলো তৈরি করা থেকে সেগুলো দেয়ালে বসানো খুব সহজ ছিল না। অনেক রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল। আমাদের কাজের ক্ষেত্রে শহর অনেক বড় একটা অনুপ্রেরণা। মডিউলগুলোর ডিজাইন ও সেটে এবারও সেই জিনিসটা আছে। সেটটা তৈরি করতে বড় একটা টিম কাজ করেছে টানা এক মাস। অদ্ভুত একটা সময় কাটিয়েছি আমরা।

অনয়: প্রথম মৌসুম থেকে দ্বিতীয় মৌসুম, এরপর তৃতীয় মৌসুমেও গ্রোথটা দেখবেন। আমরা যেমন আমাদের কাজে পরিণত হচ্ছি, আমাদের শিল্পী ও শ্রোতারাও তেমনই হচ্ছেন। একসঙ্গে আমরা বেড়ে উঠছি। এটা খুবই দারুণ একটা জার্নি।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

তৃতীয় মৌসুমের কাজ শুরু করেছেন কবে, শেষ হয়েছে কবে? প্রথম গান ‘বিরতি’ প্রকাশ করেছেন, বাকি গানগুলো কত দিন পরপর আসবে?

রাতুল: ২০২৩-এর শেষে কাজ শুরু হয়। শিল্পী খোঁজা, তাঁদের সঙ্গে বসা; এত বড় জার্নি আমাদের নিজেদের পক্ষে একা শেষ করা কঠিন ছিল। শেষ পর্যন্ত কাজটা করতে পেরেছি।

জোনাকি: ২০২৪ সালের ১ মে থেকে আমরা সেটে কাজ করা শুরু করি। ১৩ জুলাই দৃশ্যধারণ শেষ হয়েছে। স্পেসের ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের মতো করে কাজ করার জায়গা করে দিয়েছে গ্রাউন্ড জিরো। প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর বৃহস্পতিবারে গানগুলো আসবে। গানগুলো পাওয়া যাবে ইউটিউব ও স্পটিফাইয়ে।

হাতিরপুলের এক চায়ের আড্ডা থেকেই প্ল্যাটফর্মটির ধারণা পেয়েছেন চার বন্ধু মার্ক রাতুল সিনহা, শাহানাজ পারভীন জোনাকি, অনিরুদ্ধ অনু ও অনয় চৌধুরী; ফলে প্ল্যাটফর্মের নামও দেওয়া হয়েছে, ‘হাতিরপুল সেশনস’। প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো:

প্রথম ও দ্বিতীয় মৌসুমের চেয়ে তৃতীয় মৌসুম কতটা আলাদা?

অনু: দু–একটা ব্যতিক্রম ছাড়া সব কটি গানের কাজ এবার প্রায় শূন্য থেকে শুরু করেছি, তাই গানগুলোতে মিউজিশিয়ানদের কোলাবরেশনের পরিমাণ আগের চেয়ে বেশি থাকবে। তাতে সবার গানটা নিয়ে নিজস্ব যে দৃষ্টিভঙ্গি, সেটা বাকিদেরটার সঙ্গে মিলে নতুন কিছু একটা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সব সময় যে তৈরি হয়, সেটাও নয়, কিন্তু যাত্রাটা খুব উপভোগ করা যায়। আর যাঁরা গান শোনেন, তাঁরাও হয়তো নতুন কোনো অভিজ্ঞতা পান।

অনয়: ক্যারেক্টারকে আরও ফুটিয়ে তোলার জন্য ও কমলাকে আরও জোরালোভাবে উপস্থাপনের জন্য আমাদের কোর কমলার সঙ্গে নীল নিয়ে এসেছি। একই সেটে মিনিমাল চেঞ্জে গানগুলোকে তাদের মুড অনুযায়ী ট্রিট করার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রথম আলো:

প্রথম ও দ্বিতীয় মৌসুম মিলিয়ে হাতিরপুল সেশনসের ‘উপ’, ‘শহরের দুইটা গান’, ‘মনোহর’-এর মতো বেশ কিছু গান শ্রোতাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তৃতীয় মৌসুমে শ্রোতাদের প্রত্যাশার চাপকে কীভাবে নিয়েছেন?


জোনাকি: চাপ না ভেবে আসলে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছি। আমরা এই সাড়া পেয়ে মনোযোগ দিয়ে নিজেদের কাজটাই আসলে করতে চেয়েছি। আশা করি, এবারের গানগুলোকেও মানুষ সাদরে গ্রহণ করবেন।

প্রথম আলো:

হাতিরপুল সেশনস নিয়ে পরিকল্পনা কী?

রাতুল: আপাতত গানগুলো রিলিজ করা এবং আমরা কিছু সলো শো করতে চাই। আমাদের যে মডালিটি, আমাদের জন্য নরমাল কনসার্ট করা কঠিন হয়ে যায়। অনেক আর্টিস্টকে বাদ দিতে হয়। যেটা আমরা একদমই চাই না। প্রয়োজনে হয়তো করতে হতে পারে সেটা। কিন্তু আমরা নিজেরা কিছু কিউরেটেড সলো শো করব। যেখানে আর্টিস্টদের সঙ্গে দর্শকেরা একই কাতারে থাকবেন এবং সবাই মিলে পুরো সিজনের সব গান একই সঙ্গে উপভোগ করবেন।