‘অবাক ভালোবাসা’ গানের পেছনের গল্প জানেন কি
১৯৯৪ সালে প্রকাশিত ওয়ারফেজের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘অবাক ভালোবাসা’র শিরোনাম সংগীত ছিল এটি। অ্যালবামটি প্রকাশের পর শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া ফেলে। মূল গানটি ওয়ারফেজের সাবেক ভোকালিস্ট বাবনা করিমের লেখা ও সুর করা। তিন দশক পর আবার নতুন করে আলোচনায় গানটি।
কোক স্টুডিও বাংলায় গানটির নতুন সংস্করণ প্রকাশের পর থেকেই এ আলোচনার সূত্রপাত। গানটি অনেককেই ভাসিয়েছে নস্টালজিয়ায়। নতুন সংস্করণটির সংগীতায়োজন ও পারফরম্যান্সে ওয়ারফেজের পাশাপাশি ছিল কোক স্টুডিও বাংলা টিম। কিন্তু এত আলোচনা হওয়া গানটির পেছনের গল্প জানেন কি?
২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে ‘দ্য ডেইলি স্টার’-কে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার দেন বাবনা করিম। সেখানেই তিনি জানান গানটির পেছনের গল্প। বাবনা বলেন, ‘সুরটা আগেই করা ছিল। লিরিক্সটা আগে মাথায় এসেছিল কি না, মনে নেই। তখন আমরা বুয়েট থেকে ১৭ জন মিলে কক্সবাজার যাই।
সেবারই প্রথম আমি কক্সবাজার যাই। দুপুরে পৌঁছে বন্ধুরা সবাই সমুদ্রসৈকতে চলে গেল। আমি থেকে গেলাম, আমার মনে হলো বসলে হয়তো গানটা নিয়ে কিছু হতেও পারে। আমার বন্ধু শুভ তার গিটারটা নিয়ে গিয়েছিল, আমারটা লজ্জায় নিইনি, মানুষ কী বলবে ভেবে (হাসি)। শুভ গিটারটা না নিলে হয়তো গানটা অন্যভাবে লেখা হতো। গিটারটা যেহেতু ছিল, আমি ঠিক সন্ধ্যার আগে গুনগুন করতে করতে গানটা লিখে ফেলি। রাতে বন্ধুরা ফেরার পর শোনাই। ওরাই গানটির প্রথম শ্রোতা।’ বাবনা আরও বলেন, সমুদ্রের যে বিশালতা, এটিই তাঁর গানটি লেখার প্রেরণা জুগিয়েছে।
অনেকে মনে করেন, ‘অবাক ভালোবাসা’ গানটি ভালোবাসার গান। আসলে কি তা–ই? এ প্রসঙ্গে বাবনা বলেন, ‘অনেকে এটাকে ভালোবাসার গান হিসেবে নেয়। ঠিক আছে। কিন্তু গানটা আসলে বেঁচে থাকার আনন্দ নিয়ে। আমি, আপনি যে বেঁচে আছি, আমরা তো আসলে এটার জন্য কাজ করিনি, তারপরও জীবন আমাদের উপহার দেওয়া হয়েছে। আমরা এটা এখন উপভোগ করছি। এই জীবন দেওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা আছে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই একটা উপহার। গানটি আসলে এটা নিয়েই।’
কথায়–কথায় বাবনা আরও জানান, তাঁর কাছে মনে হয়েছে, পুরুষদের চেয়ে নারীরা ‘অবাক ভালোবাসা’ গানটির অর্থ ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার কাছে কোনো জরিপ নেই। তারপরও নারী শ্রোতারা পুরুষদের চেয়ে গানটির মানে ভালো বুঝতে পেরেছেন। এর কারণ কী আমি জানি না।’
বাবনা জানান, গানটি লেখার সময় তিনি ভাবেননি ‘অবাক ভালোবাসা’ এতটা জনপ্রিয়তা পাবে। তবে যা হয়েছে, সে জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।