তাপসের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ
রোববার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় গায়ক ও গানবাংলা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপসকে। ঢাকার ভাটারা থানাধীন গানবাংলা টেলিভিশন কার্যালয়ের সামনে থেকে ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের করা মামলা নম্বর ৯। তাপসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। এ ঘটনায় ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন ১ নম্বর আসামি এবং এরপর যথাক্রমে সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। তাপস এই মামলার ৯ নম্বর আসামি।
তাপসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বাদী ইশতিয়াক মাহমুদ লিখেছেন, ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আমিসহ অন্যান্য ছাত্র–জনতা উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৪ নম্বর সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাইস্কুলের সামনে পৌঁছামাত্র আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সন্ত্রাসী ও ক্যাডাররা হামলা করে। এজাহারে উল্লেখিত ১ থেকে ২৫ নম্বর আসামির প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ নির্দেশ ও আর্থিক সহযোগিতায় অন্য আসামিরা ব্যাপক দাঙ্গা–হাঙ্গামা সৃষ্টি করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা, মারধর ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে। আসামিদের ছোড়া গুলি থেকে রক্ষা পেতে আমিসহ ছাত্রদের অভিভাবক ও ছাত্র–জনতা এদিক–সেদিক ছোটাছুটি শুরু করি। আত্মরক্ষার জন্য ছোটাছুটি করতে গিয়ে এদিন বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলি আমার পেটে, পিঠে, হাতে ও মাথায় লাগলে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে যাই। এরপর ভ্যানচালক মিরাজ, মো. আবুল, কাশেম মিয়া ও জুলহাস একত্র হয়ে ভ্যানে করে আমাকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলেও আসামিরা চিকিৎসায় বাধা দেন। পরে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে যাই, সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার পেটের গুলি বের করে চিকিৎসা শুরু হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর আমি কিছুটা সুস্থ হয়ে ঘটনাটি আমার পরিবার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে আসামিদের নাম–ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে দেরি হয়ে গেল।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে উত্তরা থানার উপপরিদর্শক লিটন জানালেন, তাপসের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় তাপসকে আদালতে নেওয়া হয়। এরপর তাপসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর সাত দিনের রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজজামান এ আদেশ দেন।