প্রথম আলোতে খবর প্রকাশের পর বাড়ি পাচ্ছেন লোকসংগীতশিল্পী হামিদা বানু
হাসন রাজার ‘দিলারাম’ গান গেয়ে পরিচিতি পাওয়া সুনামগঞ্জের লোকসংগীতশিল্পী হামিদা বানুর আবাসনের ব্যবস্থা করছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তাঁকে একটি বাড়ি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
গতকাল রোববার প্রথম আলোয় হামিদা বানুকে নিয়ে ‘গানই জেলমুক্ত করেছিল তাঁকে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি নজরে আসায় গতকাল রাতেই হামিদা বানুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন জেলা প্রশাসক। আজ সোমবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে হামিদা বানুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
আজ দুপুরে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পড়ে জানলাম, হামিদা বানুর নিজের কোনো আবাসন নেই।’ তাঁর জন্য সুনামগঞ্জ সদরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই ঘরের একটি বাড়ির বন্দোবস্ত করছেন তাঁরা। শিগগিরই সেই বাড়িতে উঠবেন হামিদা বানু।
এর আগে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামিদা বানু বলেছিলেন, তিনি স্বপ্ন দেখেন, একদিন নিজের একটা ঠিকানা হবে। সেখানেই ছেলেমেয়েকে নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেবেন।
ঠিকানা পেয়ে হামিদা বানু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে, অবশেষে আমি একটা ঠিকানা পাচ্ছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমাকে নিয়ে লেখার জন্য প্রথম আলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
শুধু বাড়িই নয়, হামিদা বানুর সংগীতচর্চার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে একটি হারমোনিয়াম ও একটি উকুলেলে উপহার দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
প্রায় চার বছর ধরে হাসন রাজা মিউজিয়ামে কাজ করছিলেন ৪৭ বছর বয়সী হামিদা। ভালোই চলছিল তাঁর, গত বছর বন্যায় মিউজিয়ামটি বন্ধের পর রুটিরুজি নিয়ে আবারও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন তিনি।
ঠিকানাহীন হামিদা বানু আট বছর বয়সী মেয়ে সোয়ানাকে নিয়ে আপাতত হাসান রাজার প্রপৌত্র ও হাসন রাজা মিউজিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামারীন দেওয়ানের বাড়িতে আশ্রয়ে আছেন।
হামিদা বানুর ছেলে আল আমিন কাশ্মীরে থাকেন। মেয়ে সোয়ানাকে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িতে উঠবেন তিনি। সঙ্গে হাসন রাজার গানের চর্চা চালিয়ে যাবেন। কোক স্টুডিও বাংলায় ‘দিলারাম’ গেয়ে রাতারাতি দেশজুড়ে পরিচিতি পান হামিদা বানু। গানটি প্রকাশ পেয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর।