দেশের পথে শাফিন, কাল দুপুরে দাফন
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেছেন তাঁর স্ত্রী রুমানা দৌলা। বাংলাদেশ সময় গতকাল রোববার রওনা করেছে শাফিনকে বহনকারী উড়োজাহাজ। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন শাফিনের বড় ভাই ও মাইলস ব্যান্ডের সদস্য হামিন আহমেদ।
হামিন আহমেদ জানালেন, এমিরেটস এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজে করে আনা হচ্ছে শাফিন আহমেদের মরদেহ। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় দুবাইয়ে ট্রানজিটের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শাফিনের মরদেহ এসে পৌঁছাবে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এরপর শাফিনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গুলশানে। সেখানে পারিবারিকভাবে তা রাখা হবে। সেখান থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মরদেহ গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজার জন্য নেওয়া হবে। জানাজার পর শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে বাবার কবরে সমাহিত করা হবে শাফিনকে। পাশে তাঁর মা সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের কবর রয়েছে। ১৯৭৪ সালে মারা গেছেন শাফিনের বাবা কমল দাশগুপ্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় ২৫ জুলাই সকালে মারা যান ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ। এর পর থেকে শাফিনের মরদেহ দেশে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়। মরদেহ দেশে আনতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথাও ছিল বড় ভাই হামিন আহমেদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি।
দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দেন ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ। দেশটির একটি অঙ্গরাজ্য থেকে আরেক অঙ্গরাজ্যে গানে গানে শ্রোতা মাতাবেন, তেমনটাই পরিকল্পনা ছিল। শুরুটা ঠিকঠাক হয়েছিল।
দ্বিতীয় কনসার্ট ছিল ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায়। কনসার্টের আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আয়োজকদের উদ্যোগে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে ভর্তির দিনই তাঁর গুরুতর হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কয়েক দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শাফিন আহমেদের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। শৈশবে বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত শিখেছেন আর মায়ের কাছে শিখেছেন নজরুল সংগীত।
শাফিন আহমেদের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা জ্বালা...এ অন্তরে’, ‘ফিরিয়ে দাও হারানো প্রেম’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’, ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’ প্রভৃতি।
শাফিন আহমেদ তাঁর বাবা কমল দাশগুপ্তের কিছু গান নিয়েও একক অ্যালবাম করেছিলেন। মাঝখানে কিছুদিন রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী হয়েও আলোচনা সৃষ্টি করেছেন। শাফিন আহমেদ স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।