পাকিস্তানের করাচি রেডিওর আর্কাইভে থাকা আবদুল আলীমের গানগুলো ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। গত বুধবার প্রথম আলোয় ‘পাকিস্তানে নষ্ট হচ্ছে আবদুল আলীমের গান’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিমন্ত্রী জানান, বিষয়টির সুরাহা করবেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওনার পরিবারের সদস্যরা যদি গানের তথ্য–উপাত্ত দেন, তাহলে আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিখব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানে আমাদের দূতাবাসকে লিখলে দূতাবাস ব্যবস্থা নেবে। আবদুল আলীমের পরিবার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। আমিও অফিসকে বলছি, আবদুল আলীমের পরিবারের সঙ্গে যেন যোগাযোগ করা হয়। আমরা বিষয়টা সলভ করার চেষ্টা করব।’
প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসের বিষয়ে আলীমকন্যা নূরজাহান আলীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করব। ব্যক্তিগতভাবে অনেক চেষ্টা করেও আমরা গানগুলো উদ্ধার করতে পারিনি। মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে কাজটি অনেক সহজ হবে।’
ষাটের দশকে করাচি রেডিও ও পাকিস্তান টেলিভিশনে (পিটিভি) নিয়মিত গান করতেন লোকসংগীতশিল্পী আবদুল আলীম। বাংলাদেশের পাশাপাশি পশ্চিম পাকিস্তানেও জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাঁর বেশ কিছু বাংলা গান পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে করাচি রেডিওর আর্কাইভে পড়ে রয়েছে। স্বাধীনতার পর কূটনৈতিক জটিলতায় গানগুলো আর দেশে ফেরত আনা যায়নি।
চলচ্চিত্র গবেষক শামসুল আলম প্রথম আলোকে জানান, স্বাধীনতার আগে করাচি রেডিওতে নিয়মিত বাংলা গানের অনুষ্ঠান হতো। সেই সূত্রে করাচি রেডিওতে বহু গান করেছেন আবদুল আলীম, সেই গানগুলোর স্পুল আর্কাইভে জমা আছে। বেশির ভাগ গানেরই অন্য কোনো কপি থাকার সম্ভাবনা নেই। ফলে করাচি আর্কাইভের স্পুল না পেলে গানগুলো উদ্ধার করা যাবে না। পুরোনো স্পুলকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা না গেলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। করাচি আর্কাইভে আবদুল আলীমের বাংলা গান কতটা যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানান পরিবারের সদস্যরা।
আবদুল আলীমের গাওয়া ‘পরের জায়গা পরের জমিন’ কয়েক বছর আগে একটি পাকিস্তানি সিরিয়ালে ব্যবহার করা হয়। গীতিকার আবদুল লতিফের কথায় আবদুল আলীমের কণ্ঠে গানটি দশকের পর দশক ধরে বাংলাদেশের পাশাপাশি পাকিস্তানের শ্রোতাদের মুখ থেকে মুখে ছড়িয়েছে।