অঞ্জনের কোলাহলে মাতল জাহাঙ্গীরনগর
তিনি আসবেন—এ নিয়ে শুরু থেকেই ছিল উচ্ছ্বাস। আয়োজকেরা যখন ঘোষণা দেন, তিনি ঢাকায় এসেছেন, তখনই হইহই পড়ে যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এই যেমন এসেছিলেন গ্যাব্রিয়েল পাংখোয়া। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তিনি। রাঙামাটিতে একটি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করা গ্যাব্রিয়েল পাংখোয়া অঞ্জন দত্ত ক্যাম্পাসে আসবেন শুনে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে জাহাঙ্গীরনগরে এসেছেন তিনি। গ্যাব্রিয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘অঞ্জন আমার প্রিয় শিল্পী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অজস্র রাত আমরা গিটার নিয়ে অঞ্জনের গান গেয়েছি। তিনি আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা ও শক্তি।’
অঞ্জন দত্তের গান শোনার এই আয়োজন ছিল শুক্রবার রাতে। এর আগেই বিকেলের মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ। সন্ধ্যার পর দর্শকের ঢেউ ছাপিয়ে যায় মুক্তমঞ্চের আশপাশের এলাকায়।
‘ব্যাচ ডে’ উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অঞ্জনের গানের এই আয়োজন করেছে ক্যাম্পাসের ৩১তম ব্যাচ।
রাত আটটায় কালো শার্ট, চোখে কালো সানগ্লাস পরে মঞ্চে আসেন অঞ্জন। জানান, এবারই প্রথম এই তল্লাটে এসেছেন। কোলাহল দেখে মুগ্ধ তিনি।
শুরু করেন ‘শুনতে কী পাও’ গান দিয়ে। এরপর একে একে শোনান ‘তুমি না থাকলে’, ‘ম্যারি এ্যান’, ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’, ‘আমি আসব ফিরে’,‘বসে আছি স্টেশনে’–এর মতো জনপ্রিয় সব গান। পৌনে দুই ঘণ্টা দর্শকদের মাতিয়ে রেখে শেষ করেন ‘বেলা বোস’ গান দিয়ে। অঞ্জনের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলান হাজারো স্বপ্নাতুর তরুণ।
এ বছর ৭০ পূর্ণ করে ফেললেন অভিনেতা, গায়ক, নির্মাতা অঞ্জন দত্ত। তাঁর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৯ জানুয়ারি। দার্জিলিঙের সেন্ট পলস স্কুলে গোড়ার জীবন কাটানো অঞ্জন বাঙালিদের কাছে প্রথম পরিচিত হয়ে ওঠেন অভিনেতা হিসেবে। ‘ওপেন থিয়েটার’ নামক নাটকের দলে কাজ করার পাশাপাশি তিনি সিনেমাজগতেও কাজ করা শুরু করেন।
মৃণাল সেনের পরিচালনায় ‘চালচিত্র’-এ তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এর পরে ‘খারিজ’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘মহাপৃথিবী’, ‘অন্তরীণ’–এর মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল সমালোচক মহলে। ১৯৯৪ সালে প্রথম গানের জগতে আসেন অঞ্জন দত্ত। প্রথম অ্যালবামের নাম ‘শুনতে কী চাও’।