আলোচিত ‘অল্প একটু জীবনের গান’–এর সূত্রে প্রেম, বাগ্দান
একটা গান দুজনকে সংসারের সুতোয় বেঁধে দিয়েছে। আলোচিত ‘অল্প একটু জীবনের গান’-এর সূত্র ধরে বাকিটা জীবন এক ছাদের নিচে কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
দুজনের পরিচয়টা কাকতালীয়; অনেকটা সিনেমার মতো। একটা গান দুজনকে সংসারের সুতোয় বেঁধে দিয়েছে। আলোচিত ‘অল্প একটু জীবনের গান’-এর সূত্র ধরে বাকিটা জীবন এক ছাদের নিচে কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
গত রোববার ঢাকায় বাগ্দান সেরেছেন আল হাসিব খান আনন্দ ও তাসনোভা তাবাসসুম অতসী। ‘অল্প একটু জীবনের গান’ গেয়ে শ্রোতামহলে পরিচিতি পাওয়া অতসী নির্মাতা ও প্রযোজক। আনন্দ পেশায় সাংবাদিক ও নির্মাতা।
মাসখানেক আগে প্রকাশিত গানটির প্রযোজক আনন্দ। গানটি শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। এক মাসের ব্যবধানে এক লাখের বেশিবার শোনা হয়েছে। এই গানের জন্ম আরও আগে।
কবি উদয়ন রাজীবের লেখা গানটি ২০১৯ সালে ফোনে রেকর্ড করেছিলেন অতসী। সেটি সিবুন নামের এক বন্ধুকে পাঠান; সেই বন্ধুর মাধ্যমে গানটি শোনেন আনন্দ।
সেই সময়ের স্মৃতিচারণা করে আনন্দ সোমবার প্রথম আলোকে বললেন, ‘তখন আমার জ্বর, হঠাৎ এক বন্ধু আমাকে গানটা পাঠাল। গানটা শুনে মনে হলো, অদ্ভুত ঘোর লাগা কণ্ঠের মেয়েটা কে? তার সঙ্গে আমার দেখা হওয়া জরুরি।’
ফেসবুকে ‘অতসী’ লিখে সার্চ করা শুরু করলেন। অনেকগুলো ‘অতসী’ হাজির। সেখান থেকে আদি ও আসল অতসীকে পেয়ে মেসেজ করলেন। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
দুজনের আগ্রহের বিষয় চলচ্চিত্র। ফলে প্রায়ই আড্ডা দিতেন। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের মহামারি এল। ঘরবন্দী সময়ে একে অপরের মন খারাপের সঙ্গী ছিলেন তাঁরা। বন্ধুত্ব ক্রমেই প্রেমে রূপ লাভ করে।
আগস্টে ‘অল্প একটু জীবনের গান’ গানটির স্টুডিও রেকর্ড করেন। গত ২০ অক্টোবর প্রকাশ করেছেন অতসী। সোমবার প্রথম আলোকে অতসী বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই গানটা করার কথা ছিল। আনন্দ না থাকলে গানটা কখনোই করা হতো না। আমার যাবতীয় কাজ ও গান সবকিছুই আনন্দের জন্য।’
জুটি বেঁধে শুধু গানই নয়, একের পর এক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন আনন্দ-অতসী জুটি। ২০২০ সালের নভেম্বরে আনন্দ পরিচালিত ‘ব্রিদিং ইজ আ গিফট’ চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন অতসী। ছবিটি একাধিক উৎসবে পুরস্কার পেয়েছে।
এর মধ্যে ‘টিপস’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দিয়ে নির্মাণে অভিষেক ঘটেছে অতসীর। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগে স্নাতকোত্তর করছেন।
অন্যদিকে হাওর অঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতি ও জনজীবনের সংগ্রামকে ‘বিউটি অব হারভেস্ট’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করছেন আনন্দ; প্রযোজনা করছেন অতসী। আবার অতসী ‘ল্যান্ড অ্যান্ড ওম্ব’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মাণ করছেন; প্রযোজনা করছেন আনন্দ।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে বিয়েটা সারবেন এই জুটি। অতসীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। চতুর্থ শ্রেণি থেকে বাংলাদেশ বেতারে শিশুশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। সুরের ধারায় গান শিখেছেন। ছোটকাকা কাঞ্চনের কাছে গান শিখেছেন তিনি।
ঢাকার ছেলে আনন্দ ঢাকা কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। ধ্যান-জ্ঞান নির্মাণ। নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমনের সঙ্গে তিন বছর কাজ করেছেন। বর্তমানে একটি জাতীয় দৈনিকে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত আছেন।