ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তনের প্রাক্তনী সম্মিলন ২ মার্চ,নিবন্ধন চলছে
আবহমান বাংলা গানের চর্চা ও শিক্ষার্থীদের বাঙালি জাতিসত্তায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ছায়ানট ১৯৬৩ সালে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তন প্রতিষ্ঠা করে। ছয় দশক পেরিয়েছে, ছায়ানট ভোলেনি অতীত দিনের স্মৃতি। পুরোনো সাথিদের আবার ডাক দিচ্ছে মিলনোৎসবে।
ছয় দশকের পথচলায় ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পাঠ নিয়েছে এই বিদ্যায়তনে।ছায়ানটের সংগীতবিদ্যায়তনের পুরোনো সহযাত্রীদের সঙ্গী করে আগামী ২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যায়তনের প্রাক্তনী সম্মিলন। সম্মিলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তনের দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমে অন্তত দুই বছর পাঠ নেওয়া দেশ ও প্রবাসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক এবং সংগঠকদের। এই নিবন্ধন চলছে ধানমন্ডির সংস্কৃতি–ভবনে এবং ছায়ানটের ফেসবুক পেজে। জানুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত চলবে নিবন্ধন।
প্রাক্তনী সম্মিলন উপলক্ষে শুক্রবার ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী ও সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা এবং প্রাক্তনী সম্মিলনের আহ্বায়ক রোকাইয়া হাসিনা নীলি। সমবেত সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনের সূচনা হয়। এ সময় সবাই মিলে গেয়ে ওঠে ‘সবারে করি আহ্বান’ ও ‘শুভ্র সমুজ্জ্বল হে চির নির্মল’ শীর্ষক সংগীত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই প্রাক্তনী সম্মিলন ছায়ানটের কাছে বিশেষ গুরুত্ববহ। মানবতা ও সম্প্রীতির বার্তাবহ এই সম্মিলনে সাম্প্রদায়িকতা, নারীর প্রতি অবমাননা ও আপন সংস্কৃতিবিনাশী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণের ডাক দেওয়া হবে। আগামী ২ মার্চ ছায়ানট ভবনে দিনব্যাপী আয়োজনে থাকবে বৈচিত্র্যময় আয়োজন। দিনভর চলবে নির্মল আড্ডা। সকালে জাতীয় সংগীতের সুরে উত্তোলন করা হবে জাতীয় পতাকা। বের হবে বর্ণিল শোভাযাত্রা। থাকবে প্রাক্তনীদের স্মৃতিচারণা পর্ব। রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতের সম্মিলনে সজ্জিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকবে আলোকচিত্রের কোলাজ প্রদর্শনী। এর বাইরে কেমন মানুষ ও দেশ গড়তে চাই—এসব বিষয়ে কথা বলবেন ছায়ানটের প্রাক্তনী ও বর্তমান সদস্যরা। পরিকল্পনা রয়েছে সংগীতবিদ্যায়তনের আদি-মধ্য-চলতি পর্বের পথচলা নিয়ে বিদ্যার্থীদের বয়ানে স্মৃতিচারণামূলক একটি স্মরণিকা প্রকাশ করার।
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে লাইসা আহমদ লিসা বলেন, বাংলার সংগীত সংস্কৃতির চর্চা ও শিক্ষার্থীদের বাঙালি জাতিসত্তায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ছায়ানট ১৯৬৩ সালে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তন প্রতিষ্ঠা করে। জন্মাবধি ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তন রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীতসহ মূলধারার বাংলা গানের রসাস্বাদন এবং শাস্ত্রীয় নৃত্যকলা ও শুদ্ধ সংগীতের নানান ধারার পাঠদানে নিমগ্ন। সংগীতের সুর-ছন্দ-বাণীর পাশাপাশি নিরলস প্রয়াস চলছে সবার মধ্যে সংস্কৃতিমানস গড়ে তোলা এবং সম্প্রীতির সমাজ অটুট রাখতে সবাইকে অনুপ্রাণিত করার।
অতীত ও বর্তমানের সব সঙ্গীকে নিয়ে এবারের লক্ষ্য, অতীত দিনের স্মৃতিতর্পণ এবং বর্তমানের প্রাসঙ্গিকতায় ফেলে আসা এবং বর্তমান ও আগামীর পথের পর্যালোচনা ও ভাবনা। সেই বিবেচনায় সমাজ ও সংস্কৃতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এই প্রাক্তনী সম্মিলন তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলে মনে করে ছায়ানট।