ভালো নেই ‘বলব না গো আর কোনো দিন’ গানের শিল্পী সুকুমার বাউল

মাত্র একটি গান দিয়েই দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছেন তাঁরা। ‘বলব না গো আর কোনো দিন’, ‘টিকাটুলির মোড়ে একটা হল রয়েছে’, ‘অপরাধী’, ‘ও টুনির মা’, ‘নয়া দামান’ প্রকাশের পরই রাতারাতি শ্রোতাদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন গানগুলোর শিল্পীরা। রীতিমতো তারকা বনে যান তাঁরা। ভাইরাল হওয়া সেসব শিল্পী এখন কেমন আছেন? কেমন যাচ্ছে তাঁদের দিনকাল? পর্ব–০১
সুকুমার বাউল
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

বছর পাঁচেক আগে অনলাইনে প্রকাশ পায় ‘বলব না গো আর কোনো দিন’। সেই দিন থেকেই গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। সুকুমার মহন্ত নামের এক বয়োজ্যেষ্ঠ শিল্পীর সঙ্গে পরিচিত হন দর্শক। মুহূর্তেই ভক্তদের কাছে সুকুমার বাউল নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন এই গায়ক। সারা জীবন বাউল বেশে গান করে যাওয়া এই গায়ক ভেবেছিলেন, শেষ বয়সে হয়তো ভাগ্য মুখ তুলে তাকিয়েছে। কিন্তু আসলেই কি তাঁর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে?

ভাগ্য পরিবর্তনের আশা ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে নিয়মিত গান করে যাওয়ার চেষ্টা করে গেছেন সুকুমার মহন্ত। অনেক সময় ঠিকমতো পারিশ্রমিকও পাননি। ঢাকায় এসে বাসা ভাড়া করে থাকার মতো সামর্থ্যও নেই।

সুকুমার বাউল
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

এখন বগুড়ায় কাটছে তাঁর দিন। তিনি গত রোববার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, ‘ভাগ্য যেভাবে রাখে, সেভাবেই ভালো আছি। নিয়মিত গান করে যাওয়ার চেষ্টা করে যাব শেষ পর্যন্ত। ২০ দিন ধরে কাজ নেই। কীভাবে দিন যাচ্ছে, বলে বোঝানো যাবে না। তোমার দাদি মাঝেমধ্যে কী রান্না করবে, সেটাও বুঝে উঠতে পারছে না। ঘরে তেমন কিছু নেই। দোকানে বাকি। টাকা দিতে পারছি না। এখন ভাগ্যে যা আছে, সেভাবেই ভালো আছি। বৃদ্ধকাল, কী আর করব, এভাবেই দিন পার করে দিতে হবে।’

সুকুমার মহন্ত জানান, ঈদে ‘পিরিতের কালসাপে দংশিল আমাকে’সহ চারটি গান আসবে। এ ছাড়া ঈদের সময় কয়েকজন কনসার্টে গাওয়ার কথা বলে রেখেছেন। সব ঠিক থাকলে সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

গত বছর রাজশাহীতে বর্ষবরণে গাইছেন সুকুমার বাউল
ছবি: প্রথম আলো

বাউল সুকুমারের ছয় সদস্যের গানের দল আছে। ঢোলে সমীর, দোতারায় আসিফ, বাঁশিতে ফাহিম, খঞ্জনিতে হাফিজ ছাড়া দুই বাদ্যযন্ত্রীও আছেন। ফোন পেলেই গান গাইতে তাঁদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যান সুকুমার বাউল।

বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামে থাকেন বাউল সুকুমার বৈরাগী। তাঁর জন্ম ১৯৫৬ সালে বৈরাগী বৈষ্ণব পরিবারে। বাল্যকালে পরিবার থেকেই গানের চর্চার শুরু। তাঁর দাদা প্রভু বৈরাগীর সঙ্গে তিনি গ্রামে গ্রামে গান করতেন। দাদার সঙ্গেই গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় গান শুনতে যেতেন। এভাবে গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা জন্ম নেয়।

বাউল সুকুমার বাউল
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত