আমার গান, সুর, আমার কি-বোর্ড বাজানোর দেশ আসলে বাংলাদেশ: কবীর সুমন

কবীর সুমন
ফেসবুক

১৩ বছর পর বাংলাদেশে এসে তিন দিন গান শুনিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন ভারতীয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। তিন দিনের অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা ছাড়ার আগের বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবরের সঙ্গে দ্বৈত গানে কণ্ঠ দিয়ে সবাইকে চমকে দেন কবীর সুমন। গতকাল সোমবার কলকাতায় পৌঁছানো কবীর সুমন আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর মুগ্ধতার কথা জানালেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশে তিনি তাঁর শ্রোতাদের খুঁজে পেয়েছেন।

কবীর সুমন
ছবি: আশরাফুল আলম

ভারতীয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন শেষবারের মতো ঢাকায় এসেছিলেন ২০০৯ সালের অক্টোবরে। সেবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গান পরিবেশনে বাধা পেয়ে কলকাতায় ফিরেছিলেন। সেই অভিমান চেপে রেখে একযুগ কেটে গেলেও ঢাকায় আসেননি। মাঝে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাংলাদেশে আর কখনো আসবেন না। দীর্ঘ অভিমান ভেঙে এই অক্টোবরে ঢাকায় আসেন তিনি। তিন দিন গান শুনিয়ে আর নতুন একটি গান রেকর্ড করেই ঢাকা সফর শেষ করেন।

কবীর সুমন
আশরাফুল আলম

ভারতে পৌঁছে আজ মঙ্গলবার দুপুরে কবীর সুমন তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কলকাতায় যে অল্প কজন আমায় বাঁচিয়ে রাখেন, তাঁদের অভাব অনুভব করেছি ১৩ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর। কিন্তু বাংলাদেশ ছেড়ে এসে আমার হৃদয় আমায় বলে দিচ্ছে—আমার গান, আমার গানের সুর, তাল, ছন্দ, লয়, লিরিক, গায়কি, আমার কি-বোর্ড বাজানোর দেশ আসলে বাংলাদেশ। সেখানেই আমি এই চলতি তিয়াত্তরে আমার শ্রোতাদের খুঁজে পেয়েছি।

কবীর সুমন

কবীর সুমন এ–ও লিখেছেন, ‘তাঁরা (বাংলাদেশের শ্রোতারা) আমার ধর্ম, আমার ধর্মান্তরিত ধর্ম, আমার রাজনৈতিক মতবাদের রং, আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী নন। তাঁরা আমার গানবাজনা শুনতে আগ্রহী। জীবনে প্রথম দেখলাম, নানা বয়সের মানুষ দুলে দুলে আমার গান শুনছেন—একটি কথা নেই, কোথাও কোনো ফোন বেজে উঠছে না। জীবনে প্রথম মনে হলো তাঁদের শোনানোর জন্যই আমায় এখনো আরও রেওয়াজ করতে হবে, শিখতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে, শরীর ও কণ্ঠ ঠিক রাখতে হবে, কিবোর্ডে দখল আরও বাড়াতে হবে, গান গাওয়ার ক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ!’

কবীর সুমন

১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ নামের একটি গানের অ্যালবাম করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবীর সুমন। জীবনমুখী বাংলা গানের প্রবর্তক হিসেবে তাঁকেই গ্রহণ করে বাঙালি। গ্রহণ করেছেন দুই বাংলার শ্রোতারা। সেই থেকে অব্যাহত তাঁর সংগীতের চলার পথ। একসময় স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হন নিজের মতো করে। নন্দীগ্রাম আর সিঙ্গুর আন্দোলনে দাঁড়িয়েছিলেন মমতার পাশে। তারপর যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে সংসদ সদস্য হন। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় পরে তৃণমূল ছাড়েন। তাঁর জন্ম ভারতের ওডিশায়, ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন