সালমান–শাবনূরের ‘বৃষ্টিরে বৃষ্টি আয় না জোরে’ গানটির গল্প
বৃষ্টির শব্দে নেচে ওঠে মন। তার সঙ্গে যুক্ত হয় বৃষ্টির গান। বাংলা চলচ্চিত্রে বিভিন্ন সময়ের বেশ কিছু বৃষ্টির গান হয়েছে দর্শকনন্দিত। তেমনই একটি জনপ্রিয় গান ‘বৃষ্টিরে বৃষ্টি আয় না জোরে’। জনপ্রিয় জুটি সালমান–শাবনূর অভিনীত ‘স্বপ্নের পৃথিবী’র গানটি এখনো চর্চিত হয়। বৃষ্টি আসলে এখনো অনেকে গুনগুন করে এই গান গায়।
গানটির ভিডিওটি বেশ মনে ধরেছিল দর্শকের। বিশেষ করে একটি গানের জন্য পরিচালক বেশ কিছু লোকেশনে গেছেন। প্রথম দৃশ্যগুলো এফডিসিতে বানানো কৃত্রিম বৃষ্টিতে হলেও গানের অন্তরায় চলে যায় আউটডোরে। কক্সবাজারসহ বেশ কিছু দর্শনীয় স্থানে শুটিং হয়। গানের সঙ্গে মানানসই কোরিওগ্রাফিও ছিল অনবদ্য। শুটিং গানটি দৃষ্টিনন্দন নাচের ভঙ্গি দেখিয়েছিলেন সালমান-শাবনূর। বিশেষ করে তাঁদের স্টাইলিশ পোশাকে গানটিতে আরও ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
গানটি গেয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমীন ও তাঁরই ভাগনে আগুন খান। গানের গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুর করেছিলেন আলাউদ্দিন আলী; তাঁরা দুজনই প্রয়াত। তাঁরা চলে গেছেন, তবে রয়ে গেছে তাঁদের সৃষ্টি।
ইউটিউবে, ফেসবুকে দেখা যায় গানটির ভিডিও। অনেকে মুঠোফোনে শোনেন সেই গান। বৃষ্টি এলেই অনেক বাংলা সিনেমাপ্রেমীর মনে বেজে ওঠে গানটি। আজ জেনে নিই জনপ্রিয় সেই গানের গল্প।
গানটির স্রষ্টা প্রয়াত সুরকার আলাউদ্দিন আলী ২০১৮ সালে প্রথম আলোর প্রতিবেদককে শুনিয়েছিলেন সেই গানের গল্প।
তিনি জানিয়েছেন, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ সিনেমার শুটিং চলাকালে এই গানের সৃষ্টি। ছবির দুই অভিনয়শিল্পী সালমান শাহ ও শাবনূর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। পরিচালক বাদল খন্দকার জানালেন, আজ এই ছবির একটা গানের রেকর্ডিং হবে মগবাজারের শ্রুতি স্টুডিওতে। বলার সময় জানিয়ে রাখলেন ‘রোমান্টিক গান’। আর যায় কোথায়! বাদল খন্দকারের সঙ্গে রেকর্ডিং স্টুডিওতে হাজির দুই অভিনয়শিল্পী।
সারা রাত ধরে চলল সেই রোমান্টিক গানের রেকর্ডিং। গানের শিরোনাম ‘বৃষ্টিরে বৃষ্টি আয় না জোরে’।
রেকর্ডিং শেষ করে ভোরের দিকে অভিনয়শিল্পী, সংগীতশিল্পীসহ সবাই বাড়ির পথ ধরেন। সেই সময়ের স্মৃতি মনে করে ২০১৮ সালে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ চলচ্চিত্রের পরিচালক বাদল খন্দকার বললেন, ‘আমার সব ছবিতেই একটা বৃষ্টির গান রাখার চেষ্টা করি। এটাও তেমনই গান ছিল। গাজী ভাইকে বলার পর তিনি লিখে দিলেন। সুর করলেন আলাউদ্দিন ভাই। গাইতে এসে সাবিনা আপা ও আগুন মনপ্রাণ উজাড় করে গাইলেন। আর টানা ১২ থেকে ১৩ দিন সেই গানের শুটিং হলো এফডিসি, কক্সবাজারসহ বেশ কিছু জায়গায়।’
গানের সুরকার আলাউদ্দিন আলী জানালেন, সুর করার সময় এত কিছু মাথায় ছিল না। কাজটা ঠিকঠাক করার পরিকল্পনা ছিল। পরে যখন গানটা সবার মুখে মুখে চলে এল, তখন মনে হয়েছিল রাতভর পরিশ্রম সার্থক। সেই সার্থকতার কারণেই এখন বৃষ্টি নামলেই সবার আবেদন—বৃষ্টিরে বৃষ্টি আয় না জোরে।