এক বছর আগে বাংলার বিনোদন দুনিয়াকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল চরকি। ১২ মাসে ১২টি অরিজিনাল, একগুচ্ছ সিরিজ, খণ্ড নাটক, বাংলায় ডাবিং করা বিদেশি সিনেমা, সোনালি দিনের বাংলা সিনেমা—অনেক কিছু দিয়েছে বাংলার ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকি। বিনিময়ে পেয়েছে দেশ-বিদেশের স্বীকৃতি, দর্শকদের সমর্থন ও ভালোবাসা। দ্বিতীয় বর্ষে বিনোদন দুনিয়াকে আরও বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। এতে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন একগুচ্ছ প্রতিভাবান নির্মাতা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মাদানি অ্যাভিনিউর শেফস টেবিল কোর্টসাইডে আয়োজন করা হয় চরকি কার্নিভ্যাল। অনুষ্ঠানে এক বছরের কাজের জন্য চরকির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের দেওয়া হয় চরকি অ্যাওয়ার্ড। চরকির জন্য কাজ করা শিল্পী–কলাকুশলীরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকা শিল্পী, নির্মাতা, কলাকুশলী ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। ফান আর ফুর্তিতে ভরা এ আয়োজনে একঝলক দেখানো হয় চরকির জন্য নির্মিতব্য মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নতুন সিরিজ মিনিস্ট্রি অব লাভ। চরকির দ্বিতীয় বর্ষের নির্মাতা দলে যোগ দিয়েছেন তিনি।
প্রথম বর্ষের নির্মাতা ও শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে মঞ্চে উঠে মোস্তফা সরয়ার বলেন, ‘ওটিটিতে হরর ও অ্যাকশনধর্মী কাজ বেশি হয়। মানবিক সম্পর্কের গল্প ওটিটিতে পাওয়া যাচ্ছে না। মিনিস্ট্রি অব লাভ শুধু প্রেমের গল্প।’ অনুষ্ঠান সঞ্চালক সাবিলা নূর মজাচ্ছলে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘জীবনে কতগুলো প্রেম করেছেন?’ দর্শকসারিতে বসা স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার অনুমতি নিয়ে মজাচ্ছলে তিনিও জবাব দেন, ‘১৩টি প্রেম করেছি।’ উপস্থিত সুধীজনেরা ধারণা করে নেন, তাঁর মিনিস্ট্রি অব লাভ হয়তো ১৩ পর্বের সিরিজ!
দ্বিতীয় বর্ষে চরকির জন্য নাটক–সিনেমা–ওয়েব সিরিজ বানাবেন একঝাঁক তরুণ, নন্দিত ও প্রতিশ্রুতিশীল পরিচালক। তাঁরা হলেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, আবু শাহেদ ইমন, আদনান আল রাজীব, অনম বিশ্বাস, আশফাক নিপুন, বাশার জরজিস্, গৌতম কৌরী, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, মিজানুর রহমান আরিয়ান, মোহাম্মদ তাওকির ইসলাম, নুহাশ হুমায়ূন, রায়হান খান, রায়হান রাফি, রেজাউর রহমান, রবিউল আলম, সালেহ সোবহান, সঞ্জয় সমাদ্দার, শঙ্খ দাসগুপ্ত, শিহাব শাহীন, সুকর্ণ শাহেদ ধীমান, সৈয়দ আহমেদ শাওকি, তানিম নূর, তানভির আহসান ও ভিকি জাহেদ। তাঁদের কেউ কেউ প্রথম বছরে চরকির
জন্য কনটেন্ট নির্মাণ করেছেন। কেউ কেউ এ আয়োজনে জিতেছেন পুরস্কার। এই নির্মাতাদের বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে। আনুষ্ঠানিকভাবে সুধীজনদের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় চরকি কার্নিভ্যালে।
কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন চরকির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও নির্মাতা রেদওয়ান রনি। তিনি বলেন, ‘চরকির পেছনে অনেক মানুষের অবদান রয়েছে। স্মরণ করতে চাই ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানকে। কৃতজ্ঞতা জানাই গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান, হেড অব স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (করপোরেট) যারেফ আয়াত হোসেন ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে। তাঁরা আমাদের অনেক বড় একটি স্বপ্ন উপহার দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানাই চরকির অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অংশীজন, দর্শকদের।’
চরকি অ্যাওয়ার্ডের জুরিবোর্ডে ছিলেন তারিক আনাম খান, অপি করিম, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও আবু শাহেদ ইমন। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে অভিনেত্রী স্ত্রী নিমা রহমানকে নিয়ে মঞ্চে আসেন তারিক আনাম। তিনি এ আয়োজনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘চরকি, প্রথম আলো ও ট্রান্সকম গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ভবিষ্যতে এই কনটেন্টগুলো বৈশ্বিক পরিসরে জায়গা করে নেবে। এই কনটেন্টগুলো নিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাব।’
চরকি অ্যাওয়ার্ডে সেরা চলচ্চিত্র পরিচালক মনোনীত হন নেটওয়ার্কের বাইরে সিনেমার মিজানুর রহমান আরিয়ান ও সিরিজ পরিচালক ষ-এর নুহাশ হুমায়ূন। চরকি পাওয়ার হাউস অব টুমোরো শাখায় সেরার পুরস্কার জিতে নেন শাটিকাপ-সিরিজের জন্য মোহাম্মদ তাওকির ইসলাম।