‘নিঃশ্বাস’–এর অপেক্ষা ফুরাচ্ছে আজ
২০২২ সাল বাংলা সিনেমা, সিরিজের জন্য যেন আশীর্বাদের বছর। সিনেমা হল থেকে শুরু করে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বাংলা কনটেন্টের জয়জয়কার। সেই ধারাবাহিকতায় চরকিতে আজ রাত ৮টায় মুক্তি পাচ্ছে প্রাণ পটেটো নিবেদিত রায়হান রাফি পরিচালিত চরকি অরিজিনাল ফিল্ম ‘নিঃশ্বাস’। ৭ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘নিঃশ্বাস’-এর ট্রেলার। ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের ট্রেলারটি যেন দর্শককে বন্দী করেছে রহস্যের বেড়াজালে। শ্বাসরুদ্ধকর ট্রেলারটি পুরোপুরি তাসনিয়া ফারিণময়। অভিনেত্রীকে দেখা যায় হাসপাতালে নিজের বাচ্চাকে খুঁজতে! তবে তাঁর সন্তান কেন, কীভাবে, কোথায় আছে, সেটা ট্রেলারে খোলাসা করা হয়নি।
হাসপাতাল মানেই যেন মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই। এই লড়াই আরও কঠিন হয়ে পড়ে যখন মুখোশধারী কয়েকজন উগ্রবাদী ছক আঁটে এক বিধ্বংসী হামলার। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়েও একজন ঘুরে দাঁড়ায়, প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে। কিন্তু সে কি যুদ্ধ জয়ের নায়ক হবে? নাকি হারিয়ে যাবে এই ধ্বংসলীলায়? এ রহস্য ভাঙবে আজ চরকির পর্দায়।
ফারিণ ছাড়াও তারকাবহুল এ সিনেমায় আরও আছেন দিলারা জামান, ফারজানা ছবি, ইমতিয়াজ বর্ষণ, সাফা কবির, সৈয়দ জামান শাওন, রাশেদ অপু, সোলাইমান খোকা, নীল হুরেজাহান, অশোক ব্যাপারী, হামিদুর রহমান, কামরুজ্জামান তপু, ফরহাদ লিমন, আনোয়ার হোসেন, পূর্ণিমা বৃষ্টি, মাসুম রেজওয়ান, রুশো শেখ, জন আর্মস্ট্রংসহ অনেকেই।
গত এক বছরে বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজে দেখা গেছে ফারিণকে। তবে ‘নিঃশ্বাস’-এ একেবারেই খোলনলচে বদলে হাজির হবেন এ সময়ের আলোচিত এই অভিনেত্রী। সেইভাবে নিজেকে প্রস্তুতও করেছেন তিনি। ফারিণ বলেন, ‘শুধু চরকির জন্য নয়, আমার ক্যারিয়ারেও এ রকম কাজ করা হয়নি। কাজটা করার জন্য আমাকে নতুন অনেক কিছুই করতে হয়েছে। অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য প্রশিক্ষণ, অস্ত্র প্রশিক্ষণসহ অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। আমার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চরিত্রটির দর্শন বিশ্বাস করা। প্রথমবার আমি এমন একটা চরিত্র করেছি, যার সঙ্গে বাস্তবের ফারিণের মিল নেই।’
তবে অভিনেত্রী জানালেন, এমন একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ উতরে গেছে দলগত প্রচেষ্টায়, ‘নিঃশ্বাস-এর গল্পটা সাহসী। বেশির ভাগ শট ওয়ান টেকে নেওয়া। এ জন্য একটা দৃশ্য করার আগে অনেকবার অনুশীলন করা হয়েছে। শুটিং শুরুর প্রাক্-প্রস্তুতি ভালো হওয়ার কারণে কাজটা করা সহজ হয়েছে। লাইট, সেট ডিজাইন, ক্যামেরার কাজ—সব মিলিয়ে খুব দুর্দান্ত টিমওয়ার্ক।’
এ সিনেমায় আছেন চলচ্চিত্র ও ওয়েব সিরিজ দিয়ে এ সময়ের আলোচিত আরেক অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণও। চরকি ও নিঃশ্বাস টিমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘এটা চরকির জন্য আমার প্রথম কাজ। রাফির কাজের দর্শন ও গতি—দুটোই আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আমি উপভোগ করেছি। সিনেমার গল্পটা খুব ইন্টারেস্টিং। বলা যায়, চেনা গল্পের দুর্দান্ত উপস্থাপন ‘নিঃশ্বাস’।’
সৈয়দ জামান শাওনেরও চরকির সঙ্গে এটাই প্রথম কাজ। তিনি বলেন, ‘ভালো প্ল্যাটফর্মে কাজ করা সব সময় আনন্দের। সেই সঙ্গে রাফি ভাই ও তাঁর টিমের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও দারুণ। এ রকম গল্পে কখনো কাজ করা হয়নি। আমাদের দেশে এ রকম গল্প খুব একটা দেখা যায় না।’
‘নিঃশ্বাস’ দিয়ে আবারও চরকির জন্য কাজ করলেন রায়হান রাফি। এ প্রসঙ্গে এ সময়ের আলোচিত এই পরিচালক বলেন, ‘চরকি আমার জন্য একটা সিনেমা হল। যাঁরা হলে যেতে পারেন না, তাঁরা দেশ-বিদেশ থেকে চরকি দেখেন। ‘নিঃশ্বাস’ এখন পর্যন্ত আমার করা সবচেয়ে নিরীক্ষাধর্মী কাজ। আমার অন্য সব ছবি থেকে এ ছবির নির্মাণ, স্টাইল, জনরা—সবকিছুই আলাদা।’
রাফির সিনেমার আয়োজন সব সময় একটু ভিন্ন থাকে, থাকে আলাদা ভাষা। প্রতিটি কাজে এভাবে ভিন্নতা আনা কতটা কঠিন? রাফি বলেন, ‘আমি দর্শককে ঠকাতে চাই না। দর্শক তো নিজের সময়, টাকা—সব দিয়ে সিনেমাটা দেখে। তাদের ঠকালে তো আমাদের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে। জানি না ‘নিঃশ্বাস’-এর টিজার দেখে দর্শক কতটুকু বুঝতে পেরেছে, এ সিনেমার অনেক বড় একটা সেট বানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সিনিয়র, জুনিয়র মিলিয়ে ৫০ থেকে ৬০ জন শিল্পী কাজ করেছেন। আমরা অনেক খেটে কাজটা করেছি।’