যে দক্ষিণি ছবিতে মজেছেন বাংলাদেশি দর্শকেরা

‘মহারাজা’ সিনেমায় বিজয় সেতুপতি। আইএমডিবি

সিনেমার নাম ‘মহারাজা’। তাই এ তামিল সিনেমা যখন বক্স অফিসে রাজত্ব করছিল, আপনি মজা করে বলতেই পারেন, এতে আর আশ্চর্য কী! তবে কেবল নামের গুণে যে সিনেমাটি চলেনি, তা বলাই বাহুল্য।

‘মহারাজা’ সিনেমায় বিজয় সেতুপতি। আইএমডিবি

প্রেক্ষাগৃহের পর গত বৃহস্পতিবার রাতে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এর পর থেকেই অনেক বাংলাদেশি দর্শক কথা বলছেন নিথিলান স্বামীনাথন পরিচালিত সিনেমাটি নিয়ে। কিন্তু কী এমন আছে এ সিনেমায়, যা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে?

সিনেমা সম্পর্কে
নিথিলান স্বামীনাথন নির্মাতা হিসেবে নতুন। ‘মহারাজা’ তাঁর দ্বিতীয় সিনেমা। অ্যাকশন থ্রিলার ঘরানার প্রতি এই লেখক-পরিচালকের দুর্বলতা লক্ষণীয়। ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুরাঙ্গু বোমাই’-এর মতো ‘মহারাজা’ও অ্যাকশন থ্রিলার ঘরানার। গত ১৪ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় মাত্র ২০ কোটি রুপি বাজেটের ছবিটি।

আরও পড়ুন

এরপর এক মাস না যেতেই বক্স অফিস থেকে ১১৩ কোটি রুপি আয় করেছে ‘মহারাজা’। চলতি বছরের অন্যতম ব্যবসাসফল এই তামিল সিনেমা অভিনয় করেছেন বিজয় সেতুপতি, অনুরাগ কাশ্যপ, মমতা মোহনদাস প্রমুখ।

কী বলছেন সমালোচকেরা
মুক্তির পর সমালোচকেরা স্বামীনাথনের চিত্রনাট্য ও পরিচালনা, বিজয় সেতুপতির অভিনয় আর ফিলোমিনের সম্পাদনার প্রশংসা করেছেন।

‘মহারাজা’ সিনেমায় পোস্টার। আইএমডিবি

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রেডিফডটকমের অর্জুন মেনন ‘মহারাজা’র রেটিং দিয়েছেন ৫-এ ৪। তিনি লিখেছেন, ‘রিভেঞ্জ সিনেমায় নতুন সংযোজন “মহারাজা”। শেষের এক ঘণ্টা আপনাকে চমকে দেবে: একই সঙ্গে দর্শক হিসেবেও আপনার পরীক্ষা নেবে।’
টাইমস নাউয়ের সমালোচক মনিকানদান লিখেছেন, ‘চিত্রনাট্যের গাঁথুনি মজবুত। সিনেমাটিতে কিছু দুর্বলতা থাকলেও সেটা অভিনয়শিল্পীদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মনে থাকে না।’ তিনি ৫-এ রেটিং দিয়েছেন ৩.৫।

বাংলাদেশেও জনপ্রিয়
এটি ছিল বিজয় সেতুপতির ক্যারিয়ারের ৫০তম সিনেমা। তিনি ক্যারিয়ারের এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন মনে রাখার মতো একটা সিনেমা দিয়ে। নেটফ্লিক্সে মুক্তির পর অনেক বাংলাদেশি দর্শক-সমালোচক কথা বলছেন ‘মহারাজা’ নিয়ে।

‘মহারাজা’ সিনেমায় বিজয় সেতুপতি। আইএমডিবি

চিত্রনাট্যকার ও সমালোচক মামুনুর রশীদ তানিম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘স্বভাবসুলভ যেই পুনরাবৃত্তি সিনেমায় ছিল, গল্পের অমন গঠনের কারণেই, সেটাকেও বিরক্তিকর মনে হতে দেয়নি ভালো লেখনী আর স্বামীনাথনের পরিচালনা। একটা তুচ্ছ, কিন্তু চরিত্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ অবজেক্টকে ধরে গল্প সাজানোর ধারাটা সে তার প্রথম সিনেমা “কুরাঙ্গু বোমাই”তেও দেখিয়েছিল। ওটাও ড্রামাটিক্যালি ওজনদার সিনেমা ছিল। তবে “মহারাজা”র দ্বিতীয় অঙ্কে, রসদ একটু কমই পড়ে গিয়েছিল। সম্পাদনা ভালো হওয়ায় উতরে গেছে। এবং এরপর আসে সেই অপেক্ষমাণ ক্লাইম্যাক্স। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকের মাঝে যেই চাপা উত্তেজনা আর কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে এই সিনেমা, ক্লাইম্যাক্স সেটা মেটায় আবেগের অনুনাদ আর প্রতিশোধের উন্মাদ আনন্দ দুটোকে একীভূত করে। হৃদয়কে ভারী করা, দ্বন্দ্বায়মান অনুভূতির তৈরি করা এক বিমূঢ় সমাপ্তিতে পৌঁছায় “মহারাজা”।’

অনেক বাংলাদেশি দর্শক সিনেমাটিতে হিন্দি সিনেমার প্রখ্যাত নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপের অভিনয়েরও প্রশংসা করেছেন।