কোনটা চ্যালেঞ্জিং, কোনটি খুব সহজ, সেটা বুঝে উঠতে পারিনি: ফারহানা হামিদ
বিঞ্জের ওয়েব সিরিজ ‘সদরঘাটের টাইগার ২’-এ লাইলি চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় তরুণ অভিনেত্রী ফারহানা হামিদ। গতকাল তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে ‘বিনোদন’
প্রশ্ন :
প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির মধ্যে লাইলির জার্নির ফারাকটা কোথায়?
প্রথম কিস্তিতে লাইলি এমন একটা মেয়ে, যে বাঁচার স্বপ্ন দেখে; দ্বিতীয় সিজনে বাঁচার জন্য যে ফাইটটা দরকার, সেটা দেয়। এবারের সিজনে সে এমন একজন মানুষকে খুঁজে পায়, যে নিজেও মেয়েটির মতো অসহায় অবস্থায় আছে। নিজে খারাপ অবস্থার মধ্যে থেকেও ছেলেটির এই অসহায়ত্ব দূর করতে লাইলির যে জার্নি, সেটাই দেখানো হয়েছে।
প্রশ্ন :
দুই সিজনে লাইলির জীবনের নানা উত্থান-পতন দেখানো হয়েছে। পর্দায় লাইলি হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জটা কীভাবে নিয়েছেন?
আমি অভিনয়ে নতুন। কোনটা চ্যালেঞ্জিং, কোনটি খুব সহজ, সেটা বুঝে উঠতে পারিনি। কোনো কাজের প্রস্তাব এলে গল্পের উদ্দেশ্য, দর্শন বোঝার চেষ্টা করি। পছন্দ হলে নিজেকে পরিচালকের কাছে সঁপে দিই। ভালো ছাত্রীর মতো পরিচালককে অনুসরণ করি। পরিচালক যদি বলেন, তিনটার সময় রোদের মধ্যে ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকো, আমি তা–ই থাকব।
প্রশ্ন :
আপনার প্রথম কাজ কোনটি?
রবিউল আলম রবির সঙ্গে ইতি তোমারই ঢাকা। সেই গল্পেও (মাগফিরাত) আমার সহশিল্পী ছিলেন শ্যামল মাওলা। তিনি সদরঘাটের টাইগার-এও আছেন।
প্রশ্ন :
‘ইতি তোমারই ঢাকা’ মুক্তি পায় ২০১৯ সালে। এরপর ‘ঊনলৌকিক’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘মুনতাসীর’-এ আপনাকে দেখা গেছে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে আপনার কাজের সংখ্যা এত কম কেন?
সচেতনভাবেই কাজ কম করতে চাই। অভিনয় করতে ভালো লাগে কিন্তু এর জন্য অনেক কাজ করতে হবে, পাদপ্রদীপের আলোয় চলে এলে অভিনয়ের সৌন্দর্যটা হারিয়ে ফেলব...। আমি খুব দ্রুত বড় কিছু করে ফেলতে চাই না। ভালো গল্প, ভালো পরিচালক, ভালো মানুষ—এই তিনটা জিনিস না মিললে আমার জন্য কাজ করা কঠিন।
প্রশ্ন :
অভিনয় ছাড়া আপনি ফ্যাশন হাউসের সঙ্গেও যুক্ত...
আমার ‘খুঁত’ নামে একটা ফ্যাশন হাউস আছে। আমরা দুজন পার্টনার ভালোভাবেই চালিয়ে নিচ্ছি।
প্রশ্ন :
এখানে নিশ্চয় সময় দিতে হয়? অভিনয় কম করার কি এটিও একটি কারণ?
না। দুটি ব্যাপারে আমি সমানভাবে প্যাশনেট। অনেক কাজ করার চেয়ে ভালো কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ। অভিনয়ের মতো নিজের ফ্যাশন হাউসের ক্ষেত্রেও এটা মেনে চলি।
প্রশ্ন :
এ পর্যন্ত করা কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় কোনটি?
‘কারাগার’। সিরিজটিতে আমি খুব ছোট্ট একটি চরিত্র করেছি কিন্তু (পরিচালক সৈয়দ আহমেদ) শাওকীর মতো একজন পরিচালক, কারাগার-এর মতো সিরিজে কাজ করতে পারা বড় ব্যাপার। এমনিতে আমি শাওকীর অন্ধ ভক্ত।
প্রশ্ন :
নিজের কাজের সমালোচনা নিতে পারেন?
সমালোচনা, প্রশংসা কোনোটি নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছি না। সদরঘাটের টাইগার ২ মুক্তির পর অনেক মানুষ প্রশংসা করছে, আমি এটার দিকে তাকাচ্ছি না। আমি তাকিয়ে থাকি পরিচালকের দিকে; যখন একটা দৃশ্যে অভিনয় করি, তখন পরিচালক কী বলছেন। অবশ্যই দর্শক গুরুত্বপূর্ণ, তবে আমার কাছে সবচেয়ে বড় শিক্ষক পরিচালক। তিনি যদি বলেন দৃশ্যটি ওনার মনমতো হয়নি কিন্তু দর্শক যদি ভূয়সী প্রশংসাও করে; আমি বুঝব আমাকে আরও শিখতে হবে।
প্রশ্ন :
নতুন নতুন কাজের জন্য নিজেকে কীভাবে তৈরি করছেন?
নতুন কাজের প্রস্তাব পেলে প্রথমে পরিচালককে বলে নিই, রিহার্সাল ছাড়া, চরিত্রটিকে আরও বিশ্লেষণ ছাড়া সরাসরি অভিনয়ের জন্য এখনো প্রস্তুত হইনি। ‘সদরঘাটের টাইগার’, ‘কারাগার’ বা ‘ঊনলৌকিক’-এর ছোট দৃশ্যের কথাও যদি বলেন বা প্রথম কাজ ‘মাগফিরাত’-এর কথা বলেন, প্রতিটির ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিন রিহার্সাল করেছি, দিনের পর দিন আলোচনা করেছি। এটাই আমাকে চরিত্রটি পর্দায় তুলে ধরতে সাহায্য করে। এ ছাড়া অভিনয়ের উন্নতির জন্য আগের চেয়ে মানুষকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।