রাত ১১টা, বাধ্য হয়েই মোশাররফ করিম ভক্তের মুঠোফোন হাতে নিলেন, অতঃপর. . .
গতকাল, সোমবার রাত প্রায় ১১টা। বড় একটা জটলা। কেউ কেউ কানাঘুষা করছেন, ওই যে মোশাররফ করিম। সবার কথায় প্রায় দুই মিনিটের মধ্যেই ভিড় আরও বাড়তে থাকে। পাশেই কথা বলছিলেন ওসি হারুন খ্যাত এই তারকা। কারও সঙ্গেই ছবি তুলবেন না। তাই আরেকটু দূরে সরে গেলেন। ভিড় বাড়তে থাকলে বেশ তাড়াহুড়ো করেই তিনি গাড়িতে চড়ে বসলেন। ছবি তোলার জন্য অপেক্ষায় থাকা ভক্তরা ডাকতে শুরু করলেন মোশাররফ করিমকে।
কেউ কেউ বলতে থাকেন, ‘ভাই, আমরা আপনার ভক্ত। একটা ছবি তুলব।’ কেউ বলতে থাকেন, ‘ভাই, জীবনে প্রথম আপনাকে দেখলাম, একটি ছবি তুলব’, ‘প্লিজ মোশাররফ ভাই, আমাদের হতাশ করবেন না’ ইত্যাদি নানা কথা। ততক্ষণে মোশাররফ করিম গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। ভক্তরা তবু নাছোড়। গাড়ির চারপাশে তখন তাঁরা ঘিরে দাঁড়িয়ে। কেউ কেউ অনুরোধ করে গ্লাসে নক করতে থাকেন।
পরে বাধ্য হয়েই গাড়ির গ্লাস নামান এই তারকা। তখন আবার সবাই ছবি তোলার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। অন্যদিকে মোশাররফ করিম সবাইকে বোঝাতে থাকেন যে রাতে সবার সঙ্গে ছবি তোলা সম্ভব নয়। একজনের সঙ্গে তুললে অন্যরা মন খারাপ করবেন। তা ছাড়া তিনি আবার নামলে ভিড় আরও বাড়বে। বাসায় যাওয়ারও তাড়া রয়েছে। কিন্তু ভক্তরা কোনো কিছুই শুনবেন না। শেষ চেষ্টা হিসেবে উপায় না দেখে গাড়ি থেকেই এই তারকা সবাইকে বুঝিয়ে আরেক দফায় বললেন, ‘আরেকদিন ছবি তুলব।’
দেখা গেল, কোনো লাভ হলো না। মোশাররফ করিম তখন বাধ্য হয়ে ভক্তদের হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলেন। সবাইকে বললেন পাশে এসে দাঁড়াতে। তিনি গাড়ির ভেতর থেকে সেলফি তুলবেন। সবাই পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন। সেভাবেই ছবি তোলা হলো।
এই অভিনয়শিল্পী সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তিনি প্রথম আলো কার্যালয়ে একটি সাক্ষাৎকারের জন্য এসেছিলেন। বর্তমানে তিনি চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’–এর প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত। সেটা নিয়েই কথা বলতে এসেছেন। সিরিজটি চরকিতে মুক্তি পাবে হ্যালোউইনে। কাজী আসাদের এই অ্যানথোলজি সিরিজের প্রধান চরিত্রে দেখা যাবে মোশাররফকে। বাংলা সাহিত্যে নানা কিসিমের ভূতের অভাব নেই। নানা স্বাদের তেমনই কিছু বাংলা ভূতের স্বাদ নিয়ে প্রথম অ্যানথোলজি সিরিজে পর্দায় আসছেন এই তারকা।
ভক্তদের ভালোবাসায় ক্যারিয়ারে আর অপ্রাপ্তি নেই মোশাররফ করিমের। তবে এখনো ভালো কাজের ক্ষুধা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভক্তদের ভালোবাসাই কাজের অনুপ্রেরণা। কিন্তু অনেক সময়ই হয়তো ভক্তদের মন রাখা সম্ভব হয় না। নিজেরই খারাপ লাগে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে শুটিং করে ফিরেছি। অনেক ক্লান্ত ছিলাম। রাত হয়ে যাচ্ছিল। বাসায় দ্রুত ফেরা দরকার। একজনের সঙ্গে নেমে ছবি তুললে ভিড় আরও বেড়ে যাবে। সে কারণে সেলফি তুলে অগত্যা রেহাই।’ তিনি এটাও জানান যে এখন সেলফি তুলতেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।