এমন গল্পের সিনেমা আগে করেননি ফারিয়া
‘পিঁপড়াবিদ্যা’ দিয়ে লোকে নূর ইমরান মিঠুকে চেনা শুরু করে। এ ছবিতে অভিনয়ের পর নাটক বানাতে শুরু করেন মিঠু। নাটক বানিয়ে হাত পাকানোর পর একটা সময় চলচ্চিত্রও বানান এই তরুণ। প্রথম চলচ্চিত্র কমলা রকেট দিয়ে আলোচনায় আসেন। ছবিটি নেটফ্লিক্সেও প্রদর্শিত হয়। এই পরিচালকের নতুন সিনেমা পাতালঘর। আজ রাত আটটা থেকে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে সিনেমাটি দেখা যাবে।
‘পাতালঘর’–এর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া। সুড়ঙ্গ সিনেমার আইটেম গান দিয়ে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন এই অভিনেত্রী। এরই মধ্যে ওয়েব ফিল্মটির ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে।
নুসরাত ফারিয়াকে সিনেমায় সাধারণত গ্ল্যামারাস চরিত্রে দেখেই অভ্যস্ত দর্শক। ‘পাতালঘর’–এ তাঁকে ভিন্নভাবে আবিষ্কার করবেন দর্শক! হতে পারে এটা নুসরাত ফারিয়ার অভিনয়জীবনের অন্যতম সেরা সিনেমা—ট্রেলার
দেখে এমন মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই করেছেন।
নুসরাত ফারিয়া নিজে কী ভাবছেন? তিনি বলেন, ‘এমন গল্পের সিনেমা আমি আগে কখনো করিনি। তাই কাজটার মুক্তির অপেক্ষায় ছিলাম। পরিচালকের কাছ থেকে চিত্রনাট্যটা পাওয়ার পর থেকেই বলতে পারেন, কাজটার প্রেমে পড়ে যাই। (আফসানা) মিমি আপাসহ যাঁরাই কাজ করেছেন, সবাই খুবই দারুণ। ভীষণ আপন করে নিয়েছেন। যাঁরা আমাকে আপন করে নিয়ে কাজটি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে আরও কাজ করতে চাই।’
করোনা–পরবর্তী নতুন স্বাভাবিকে পাতালঘর ছবির শুটিং হয়। নিজের এলাকা রাজবাড়ীর পাংশা আর পাবনায় ২০ দিন শুটিং করেন পরিচালক। ছবির গল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে নূর ইমরান গতকাল প্রথম আলোকে বললেন, থানা শহরের হাসপাতালের পাশের একটা বাড়ির গল্প। নড়বড়ে সেই বাড়িতে চার কি পাঁচজন ভাড়াটে থাকেন, মালিকও আছেন—তাঁদের নিয়েই ছবির গল্প।
চরকিতে মুক্তির আগে বিশ্বের একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে ‘পাতালঘর’। পুরস্কারও জিতেছে। পরিচালক জানালেন, ছবিটি গত বছর ভারতের গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রতিযোগিতা করে। নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ফিচার সিনেমা হিসেবে ‘ডন কিহোতে’ পুরস্কার পেয়েছে।
তারকাবহুল এ ছবিতে আছেন মামুনুর রশীদ, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, সালাহউদ্দিন লাভলু, আফসানা মিমি, নুসরাত ফারিয়া, মামুনুল হক, নাসির উদ্দিন খান, রওনক হাসান, দীপান্বিতা মার্টিন, এরফান মৃধা শিবলুসহ প্রায় ৩০ জন অভিনয়শিল্পী। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন আবু শাহেদ ইমন। করোনার সময় ছবির শুটিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছবিটির গল্প সমসাময়িক। তাই করোনার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে কাজটি করা হয়। তবে ছবিটির জন্য শুধু শুধু টাকা বিনিয়োগ করিনি। পরিচালক নূর ইমরানসহ টিমের সবাই মিলে একটি ভালো ছবি তৈরির চেষ্টা করেছি।’
ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি বলেন, ‘এই সিনেমায় দুর্দান্ত কিছু সম্পর্কের গল্প বলা হয়েছে। করোনার সময় একটি বাড়িতে যা ঘটে, তার আগে–পরের কিছু সম্পর্ক ও সমাজের কিছু দৃষ্টিভঙ্গির গল্প দেখা যাবে।’
সবশেষে পরিচালক নূর ইমরান মিঠু বলেন, ‘আমি একটা বদ্ধ সময়ের গল্প বলতে চেয়েছি। একটা প্রতিকূল সময় মানুষকে কতটা ধন্দে ভোগায়, এটা সেই গল্প। একটা মহামারি জীবন কীভাবে নাড়িয়ে দিতে পারে, সেই ভাবনা থেকে এই সিনেমাটা বানানো। সব অভিনেতাই অসম্ভব সহযোগিতা করেছেন। এখন দর্শক সিনেমাটা দেখলেই আমাদের কষ্ট সার্থক।’
বক্স অফিস নিবেদিত ১০৯ মিনিট দৈর্ঘ্যের ‘পাতালঘর; নির্মাণে সহযোগিতা করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড, বাতায়ন প্রোডাকশন্স এবং পাওয়ার্ড বাই জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিন।