নেটফ্লিক্সের তালিকার শীর্ষে, কী আছে এই ছবিতে
হাতে খুব বেশি সময় নেই। মন দিয়ে কিছু দেখার মুডও নেই। এমন কিছু দেখতে চান যা নিয়ে তেমন মাথা ঘামাতে হবে না, সঙ্গে একটু রোমাঞ্চ থাকলেও মন্দ কী। ছুটির মৌসুমে এই যদি হয় আপনার মনোভাব, তাহলে দেখে নিতে পারেন চলতি মাসেই মুক্তি পাওয়া আলোচিত এই অ্যাকশন-থ্রিলার সিনেমা। ১৩ ডিসেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তির পর এখন প্ল্যাটফর্মটির ইংরেজিভাষী সিনেমার তালিকার শীর্ষে আছে ‘ক্যারি-অন’। কী আছে হাউমে কোয়েত-সেরার আলোচিত এই সিনেমাতে?
একনজরে
সিনেমা: ‘ক্যারি-অন’
নির্মাতা: হাউমে কোয়েত-সেরা
ধরন: অ্যাকশন-থ্রিলার
স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স
দৈর্ঘ্য : ১১৯ মিনিট
গল্প কী?
ইথান কোপাক লস অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মী। বড়দিনের ছুটিতে সবাই ঘুরতে যাচ্ছে, বিমানবন্দরে অনেক ব্যস্ততা। কোপাকের অবশ্য দম ফেলার ফুরসত নেই। তার প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা, সেও কাজ করে বিমানবন্দরেই। সব ঠিক চলছিল। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ও প্রেমিকার সঙ্গে কোপাক পরিকল্পনা করে, আগামী বড়দিনে তাদের কোল আলো করে থাকবে সন্তান। সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া হবে সমুদ্রসৈকতে। কিন্তু মানুষ যা ভাবে তা কি আর হয়!
হঠাৎই কোপাকের কাছে এক বেনামি ফোন আসে। বলা হয়, লাগেজ নিয়ে এক লোক আসবে। তাকে যেন নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে উড়োজাহাজে চড়তে দেওয়া হয়। কী আছে সেই ব্যাগে? বিস্ফোরক! কোপাক রাজি হবে কেন, সে দায়িত্ববান কর্মকর্তা।
তখনো মোক্ষম চাল চালে সেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। কোপাক সহযোগিতা না করলে, তার সন্তানসম্ভবা প্রেমিকাকে হত্যা করা হবে। সে যে উড়ো হুমকি দিচ্ছে না, সেটার প্রমাণও দেয়। এবার কী করবে কোপাক? সে কি পারবে দুই কুল রক্ষা করতে? এমন গল্প নিয়ে এগিয়ে গেছে সিনেমাটির গল্প।
কেন দেখবেন?
স্প্যানিশ নির্মাতা হাউমে কোয়েত-সেরা প্রচুর সিনেমা বানিয়েছেন। মূলত হরর ও অ্যাকশন-থ্রিলার বানিয়েছেন। বেশি সিনেমা বানানোর ফলে যা হয়, কিছু সিনেমা বেশ ভালো হয়েছে, কিছু হয়েছে ভুলে যাওয়ার মতো। তবে অ্যাকশন-থ্রিলারে তাঁর পারদর্শিতা প্রশংসা করার মতো।
বিশেষ করে লিয়াম নিসনকে নিয়ে তাঁর করা ‘আননোন’, ‘নন-স্টপ’, ‘রান অল নাইট’ সিনেমাগুলো আলোচিত হয়েছিল। আবার ডোয়াইন জনসনকে নিয়ে ‘জঙ্গল ক্রুজ’, ‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’-এর মতো বড় বাজেটের সিনেমাও করেছেন। এবার তিনি হাজির হয়েছেন অল্প বাজেট আর তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত তারকা ট্যারন এগারটনকে নিয়ে। এবং শেষ পর্যন্ত তিনি বেশ উপভোগ্য একটা থ্রিলার বানিয়েছেন।
এই সিনেমার পরতে পরতে চমক নেই। নির্মাতার আগের অনেক সিনেমার মতো দুর্দান্ত অ্যাকশনও নেই, যা যাচ্ছে তা হলো রোমাঞ্চ। কোপাকের দ্বিধায় ভোগা, সে কী প্রেমিকাকে বাঁচাতে পারবে নাকি বিস্ফোরকবাহী ব্যাগকে ছাড়পত্র দেবে—এই উত্তেজনা দর্শককে পর্দা থেকে চোখ সরাতে দেয় না।
‘ক্যারি-অন’ এক লোকেশনে চিত্রিত। পুরোটাই বিমানবন্দরের গল্প। কিন্তু টান টান চিত্রনাট্যই পুরোপুরি ইনডোরে বলা গল্পকে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে দেয় না।
‘ক্যারি-অন’-এর আরেকটি প্রাপ্তি অভিনয়। এই সময়ের তরুণ অভিনয়শিল্পীদের অন্যতম ট্যারন এগারটন। তাঁকে আগে ‘কিংসম্যান’-এর মতো অ্যাকশন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে দেখা গেছে।
আবার ‘রকেটম্যান’ সিনেমায় তিনি এলটন জনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই ব্রিটিশ তারকা এ ছবিতেও ছিলেন দুর্দান্ত। মানসিক টানাপোড়েন থেকে অ্যাকশন সব ক্ষেত্রেই তাঁর অভিনয় পরিণত। তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে সিনেমাটি, অন্য চরিত্রগুলোর খুব বেশি কিছু করার ছিল না। তারপরও পার্শ্ব চরিত্রে যাঁরা ছিলেন, মন্দ নন।
কোথায় দুর্বলতা?
আপনি যদি থ্রিলার সিনেমার অগ্রসর শ্রেণির দর্শক হন, তবে এই সিনেমা আপনার ভালো না–ও লাগতে পারে। সিনেমার অনেক কিছুই আপনার অনুমেয় মনে হতে পারে।
শেষ কথা
‘ক্যারি-অন’ মাত্র ১১৭ মিনিট দৈর্ঘ্যের সিনেমা। ছুটির মৌসুমে আরাম করে হালকা মেজাজের থ্রিলার জন্য খারাপ না। ছবিতে বড়দিন, ছুটি এসব প্রসঙ্গ ইচ্ছা করেই রাখা হয়েছে, মুক্তিও দেওয়া হয়েছে ডিসেম্বরে; যেন ছুটির মৌসুমের দর্শকেরা ছবিটির সঙ্গে আরও বেশি নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারেন।