বউ পেটাতেন জনি ডেপ!
‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’-এর জনপ্রিয় চরিত্র জনপ্রিয় চরিত্র ‘জ্যাক স্প্যারো’ কিংবা ‘চার্লি অ্যান্ড দ্য চকলেট ফ্যাক্টরি’র উইলি ওয়াঙ্কা, যা-ই বলি না কেন, তিনি জনি ডেপ। সেই ২০১১ সালের কথা। ‘দ্য রাম ডায়েরি’ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে একে অন্যের প্রেমে পড়েন জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ড। এরপর ২০১২ সালের জুনে দীর্ঘ ১৪ বছরের প্রেমের ইতি টানার ঘোষণা দেন জনি ডেপ আর ফরাসি অভিনেত্রী ও গায়িকা ভেনেসা প্যারাডিস। ব্যস, জনি ডেপ ও অ্যাম্বার হার্ডের প্রেমের সব বাধা দূর হয়ে গেল। দুই বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর জনি ডেপ ২০১৪ সালে চুপিসারে সেরে ফেলেন বাগদান, তাঁর থেকে ২৩ বছরের ছোট হলিউড অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে।
২০১৫ সালে সেরে ফেলেন বিয়েটাও। ঠিক পরের বছরই শুরু হয়ে যায় তাঁদের গৃহবিবাদ। ২০১৬ সালের ২১ মে স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডকে বেদম পিটিয়ে তাঁর মুখে নাকি মুঠোফোন ছুড়ে মেরেছিলেন জনি ডেপ। অভিযোগ করেছিলেন স্বয়ং অ্যাম্বার হার্ড। নির্যাতনের মামলা ঠুকে ১৫ মাসের সংসারের ইতি চান অ্যাম্বার হার্ড। ২০১৭ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
সম্প্রতি এই মডেল অভিনেত্রী একটি লিখিত বক্তব্যে সাবেক প্রেমিক ও স্বামী জনি ডেপের সঙ্গে সংসারজীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ৩২ বছর বয়সী এই তারকা অভিনেত্রী আদালতে মানহানির মামলা ঠুকে দেন ও ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চান ক্যারিবিয়ান দ্বীপের সেই জলদস্যুর কাছে। বলে রাখা ভালো, ৫০ মিলিয়ন ডলার মানে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, ৪৫০ কোটি! মামলা জিতে সেই টাকা আদায়ের জন্যই এই লিখিত বিবৃতির সূত্রপাত। এখানে তিনি বলেন, জনি ডেপ নাকি তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম নির্যাতন করতেন।
লিখিত বক্তব্যে অ্যাম্বার বলেছেন, ‘বিয়ের মাত্র এক বছরের মাথায় আবিষ্কার করলাম, জনি চরমভাবে মাদকাসক্ত। মাঝেমধ্যে সে এমন সব চেতনানাশক ওষুধ খেত, যেগুলো নিষিদ্ধ ছিল বা কিছু কিছু অসুখে ওষুধ হিসেবে চিকিৎসকেরা রোগীকে দিতেন। তাঁকে একাধিকবার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়। জনি যেসব মাত্রার মাদক নিত, সেগুলো নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলাম। মাতাল অবস্থায় সে অন্য এক মানুষ হয়ে যেত। তখন সে উন্মাদ হয়ে যেত এবং মারধর করত। স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার পর এসব তার মনে থাকত না। যেহেতু তাকে ভালোবাসতাম, বিশ্বাস রেখেছিলাম—এসব বদভ্যাস ছেড়ে দেবে। সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম!’
এর আগে ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ড ৪৭১ পৃষ্ঠার এক লিখিত জবানবন্দি আদালতে জমা দেন। লিখিত জবানবন্দির অংশবিশেষ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এখানেও হার্ড তাঁদের ২৩ মাসের দাম্পত্য জীবনে নির্যাতনের বর্ণনা উঠে আসে। জনি ডেপকে ‘দানব’ বলেও সম্বোধন করেছিলেন তিনি। যদিও ডেপের নিরাপত্তারক্ষী তখন আদালতে সাক্ষ্য দেন, তাঁরা কোনো কিছু ঘটতে দেখেননি এবং তাঁরা হার্ডের শরীরে কখনো কোনো আঘাতের চিহ্নও দেখেননি। আবার সাবেক স্ত্রী লরি অ্যান অ্যালিসনও তখন এই অভিনেতার পক্ষ নেন। মিডিয়াকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, কোনো প্রাণীকেই জনি ডেপ আঘাত করতে পারেন না। তিনি বলেন, জনি এমন কিছু করতেই পারেন না। নিজের পোষা প্রাণীদেরও সন্তানের মতো আদর করেন তিনি।
১৯৮৩ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে জনি ডেপ ২৫ বছর বয়সী রূপসজ্জাশিল্পী লরি অ্যান অ্যালিসনকে বিয়ে করেছিলেন। সেই বিয়ে টিকেছিল দুই বছর। এরপর অভিনেত্রী জেনিফার গ্রে ও শারলিন ফেনের সঙ্গে আংটিবদল হলেও শেষ পর্যন্ত তা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। ১৯৯০ সালে জনি ডেপ তাঁর ডান হাতে ‘উইনোনা ফরএভার’ ট্যাটু আঁকা তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরপর ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সম্পর্ক ছিল ইংরেজ সুপারমডেল কেট মসের সঙ্গে। মসের সঙ্গে সব মিটে যাওয়ার পর ১৯৯৮ সালে সম্পর্কে জড়ান ‘দ্য নাইনথ গেট’-এর সহশিল্পী ফ্রেঞ্চ অভিনেত্রী ভেনেসা পেরাডিসের সঙ্গে। ডেপ ও পেরাডিসের বিচ্ছেদ ঘটে ২০১২ সালের জুন মাসে। তখনই চিত্রনাট্যে ঢোকেন অ্যাম্বার হার্ড।