এলটন জনের অশ্রু দেখল কান
স্যার এলটন জনকে বিশ্বের সংগীতপ্রেমীরা একনামে চেনেন। কিন্তু তাঁকে কতজন জানেন? প্রদীপের নিচে যে অন্ধকার, তা তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু আলো-ঝলমল তারকাজীবনের বাইরের যে জীবন, সেটি কি আমাদের চোখে পড়ে?
তারকারা জানতে চান না, কতকাল জ্বলে এতটা উজ্জ্বল হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু স্যার এলটন জন তো সবার চেয়ে আলাদা। তিনি যে ধ্রুবতারা। সত্যকে উন্মুক্ত করতে কোনো বাধা নেই তাঁর। নিজের অন্ধকার জীবন দেখাতে কোনো আপত্তি নেই। উল্টো পরিচালককে বলে দিয়েছিলেন, ‘যত নোংরা, যত নগ্ন করতে পারো আমাকে, করো।’
বাস্তবের স্যার এলটন জনের রহস্যময়, বিতর্কিত, মাদকাসক্ত, উচ্ছৃঙ্খল জীবন বড় পর্দায় যুক্তরাজ্যের মানুষ দেখবে ২২ মে। আর যুক্তরাষ্ট্র দেখবে ৩১ মে। এসবের আগেই ১৬ মে ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এই ছবির প্রিমিয়ার। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ডেক্সার ফ্লেচার। চারটি অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র ‘বোহিমিয়ান র্যাপসোডি’-র পরিচালক ব্রায়ান সিঙ্গার প্রোডাকশনের মাঝামাঝি সিনেমাটি ছেড়ে দিলে এই ডেক্সার ফ্লেচারই মাঝপথে হাল ধরেছিলেন।
কানে এলটন জনের জীবনছবি ‘রকেটম্যান’-এর প্রথম প্রদর্শনী যখন শেষে ‘স্ট্যান্ডিং অভিশন’ পেল, সবাই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেওয়া শুরু করল। সেই হাততালি চলল অনেকক্ষণ। এ সময় আবেগপ্রবণ জন এলটনকে চোখ মুছতে দেখা যায়। এরপর বাস্তবের স্যার এলটন জন ও বড় পর্দার ‘এলটন জন’ ট্যারন এজাটন একসঙ্গে পোজ দিয়ে ছবি তোলেন।
ছবির প্রিমিয়ার শেষে একটা পার্টিও হয়। পার্টি শেষে অস্কার, গ্র্যামি, গোল্ডেন গ্লোব এবং ব্রিটজয়ী ৭২ বছর বয়সী এই সংগীত কিংবদন্তি এলটন জন ও অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী ট্যারন এজাটন জুটি মিলে ‘রকেটম্যান’-এর লাইভ পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেন উপস্থিত ভক্ত-শ্রোতাদের। এ সময় ‘রকেটম্যান’ লেখা জ্যাকেট পরে তিনি পিয়ানো বাজান। সমুদ্রপাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে গান শেষে যখন তাঁরা ‘থ্যাংক ইউ’ বলে স্টেজ ছেড়ে উঠে চলে গেছেন, তখনো থামেনি দর্শকদের চিৎকার।
এলটন জন ছবির প্রদর্শনীর আগ পর্যন্ত ছবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে প্রদর্শনীর সময় চোখে ‘লাভ’ কাঠামোর লাল রোদচশমা পরে ভালোবাসা জানিয়েছেন। পার্টি শেষে খুব ছোট্ট করে শুধু বলেছেন, ‘আবেগময় রাত।’ আরও বলেছেন, ‘এই ছবি যদি এক পয়সায় আয় না করে, প্রযোজকদের পথেও বসায়, তবু আমার কোনো আক্ষেপ নেই। ঠিক এই ছবিটাই চেয়েছিলাম আমি।’
‘রকেটম্যান’ও ‘বোহিমিয়ান র্যাপসোডি’-র মতো মিউজিক্যাল জীবনছবি। কিন্তু ‘রকেটম্যান’ সবার থেকে আলাদা, কেননা এটা স্যার এলটন জনের জীবননির্ভর চলচ্চিত্র। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এটিও ‘বোহিমিয়ান র্যাপসোডি’-র মতো অর্থ উপার্জন করবে। ‘বোহিমিয়ান র্যাপসোডি’ বিশ্বব্যাপী আট হাজার কোটি টাকা আয় করেছে।