চলে গেলেন জেন বারকিন
ষাট ও সত্তরের দশকের অন্যতম স্টাইল আইকন ছিলেন তিনি। হয়ে উঠেছিলেন তরুণদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় এক নাম। ফরাসি গীতিকার সার্জ গেইনসবুর্গের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়ে উঠেছিল সত্তরের দশকের অন্যতম চর্চিত বিষয়।
সেই গায়িকা-অভিনেত্রী জেন বারকিন আজ প্যারিসে মারা গেছেন। জেনের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে এএফপি। ৭৬ বছর বয়সী তারকার মৃত্যুর কারণ প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি, এ কারণে তাঁর বেশ কয়েকটি কনসার্ট বাতিল করা হয়।
১৯৪৬ সালে লন্ডনে জন্ম হয় জেন বারকিনের। পরে তিনি থিতু হন প্যারিসে। সেখানেই পান তারকাখ্যাতি। ১৯৬৮ সালে ২২ বছর বয়সে ফ্রান্সে পাড়ি জমান বারকিন। ১৮ বছরের বড় সার্জ গেইনসবুর্গের সঙ্গে পরিচয় সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে। এরপর প্রেম আর ১৩ বছরের ঘটনাবহুল সম্পর্কের শুরু।
পরিচয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই সার্জ ও বারকিন মিলে প্রথম দ্বৈত গান ‘আই লাভ ইউ...মি নিদার’ প্রকাশ করেন। তবে গানটির কথায় যৌনতার উপস্থিতি থাকায় বেশ কয়েকটি দেশে গানটি নিষিদ্ধ হয়। নিরীক্ষাধর্মী কাজ ও ছন্নছাড়া জীবনযাপনের জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন এই যুগল।
তাঁদের সম্পর্কে নানা উত্থান–পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। বারকিন নিজে তাঁদের সম্পর্ককে ‘টালমাটাল’ বলে অভিহিত করেছেন। ১৯৮১ সালে সার্জ ও বারকিনের বিচ্ছেদ হয়। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরও বারকিনের জন্য গান লিখেছেন সার্জ। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে ২০০৬ সালে সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বারকিন বলেছিলেন, ‘গানটির জন্য অদ্ভুতভাবে আমরা সেই সময়ের সবচেয়ে বিখ্যাত যুগলে পরিণত হই। আমরা ১৩ বছর একসঙ্গে ছিলাম আর তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত আমরা বন্ধুই ছিলাম। এর চেয়ে বেশি আর কী চাইতে পারি?’
তাঁর সময়ের প্রথম সারির প্রায় সব ফরাসি পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করেছেন বারকিন। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৭০টির বেশি। বারকিনের উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে ‘ব্লো আপ’, ‘ডেথ অন দ্য নাইল’, ‘ইভিল আন্ডার দ্য সান’ ইত্যাদি।
বারকিন ও সার্জের কন্যা শার্লট গেইসবুর্গ ফ্রান্সের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও গায়িকা। প্রথম জীবনে ব্রিটিশ সংগীত পরিচালক জন ব্যারিকে বিয়ে করেন জেন, তিন বছর পরই সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। এই সংসারে জন্ম নেওয়া তাঁর প্রথম সন্তান কেট ব্যারি আলোকচিত্রী হিসেবে খ্যাতি পান। ২০১৩ সালে আত্মহত্যা করেন তিনি।
সার্জের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর ফরাসি পরিচালক জ্যাক ডিলোনের সঙ্গে প্রেম হয় জেনের। তাঁদের সন্তান লু ডিলোন পরিচিত সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী হিসেবে।
জেন বারকিনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁসহ বিনোদন দুনিয়ার তারকারা।