সবেধন নীলমণি বলতে ‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’, মোটাদাগে ২০২৪ সালও ছিল সুপারহিরো সিনেমার জন্য দুঃস্বপ্নের বছর। ‘ম্যাডাম ওয়েব’, ‘জোকার ২’, ‘ভেনম: দ্য লাস্ট ড্যান্স’-এর মতো সিনেমাগুলো বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। কয়েক বছর ধরেই বক্স অফিসে সুপারহিরো সিনেমা সেভাবে চলছে না।
চলতি বছরও প্রমাণিত হলো, নতুন আইডিয়া আর বুদ্ধিদীপ্ত নির্মাণ না হলে চর্বিত চর্বণ দিয়ে দর্শককে আর ফেরানো যাবে না। কেবল সুপারহিরো নয়, ব্যবসার নিরিখে হলিউডের জন্য বছরটা সেভাবে ভালো যায়নি।
গ্রীষ্মে মুক্তি পাওয়া বেশির ভাগ বড় বাজেটের সিনেমাই হতাশ করেছে। উদাহরণ হিসেবে ‘হরাইজন: অ্যান আমেরিকান সাগা-চ্যাপ্টার ১’, ‘হেলবয়: দ্য ক্রুকড ম্যান’, ‘দ্য ফল গাই’, ‘ফিউরিওসা: আ ম্যাড ম্যাক্স সাগা’ সিনেমাগুলোর কথা বলা যায়।
তবে হলিউডের মান বাঁচিয়েছে বলা যায় অ্যানিমেশন, বছরের বিভিন্ন সময়ে মুক্তি পাওয়া ‘ইনসাইড আউট ২’, ‘মোয়ানা ২’, ‘ডেসপিকেবল মি ৪’-এর মতো সিনেমাগুলো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ভালো আয় করেছে।
বাণিজ্যিক সিনেমার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু চলচ্চিত্র সমালোচকদের নজর কেড়েছে। এর মধ্যে শুরুতেই উল্লেখ করতে হবে ‘আনোরা’র কথা। কান উৎসবে স্বর্ণপাম জিতে আলোচনায় আসে শন বেকারের সিনেমাটি। কান উৎসবে বেশির ভাগ সময়ই সেরা সিনেমার পুরস্কার জেতে ইউরোপীয় সিনেমা, যুক্তরাষ্ট্রে পুরস্কারটি এসেছে ১৩ বছর পর। এক যৌনকর্মীর গল্প নিয়ে নির্মিত ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি তারকা বনে গেছেন মাইকি ম্যাডিসন।
২৫ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বছরের অন্যতম বড় প্রাপ্তি। এ ছাড়া শিল্পমান বিচারে সমালোচকদের পছন্দের তালিকায় ছিল কোরেলি ফারজার ‘দ্য সাবস্ট্যান্স’, স্টিভ ম্যাককুইনের ‘ব্লিটজ’, লুকা গুদানিনোর চ্যালেঞ্জার্স, জেমস ম্যানগোল্ডের ‘আ কমপ্লিট আননোন’, রিডলি স্কটের ‘গ্ল্যাডিয়েটর ২’, হ্যালিনা রেজিনের ‘বেবিগার্ল’, ইয়োর্গস লান্থিমোসের ‘কাইন্ডস অব কাইন্ডনেস’, অ্যালেক্স গারল্যান্ডের ‘সিভিল ওয়ার’, পেড্রো আলমোডোভারের ‘দ্য রুম নেক্সট ডোর’, ব্র্যাডি করবেটের ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’, এডওয়ার্ড বার্গারের ‘কনক্লেভ’, ক্রিস স্যান্ডার্সের ‘দ্য ওয়াইল্ড রোবট’, জিয়া কপোলার ‘দ্য লাস্ট শোগার্ল’।
সর্বোচ্চ আয়ের ১০ হলিউড সিনেমা
‘ইনসাইড আউট ২’
‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’
‘উইকেড’
‘মোয়ানা ২’
‘ডেসপিকেবল মি ৪’
‘বিটলজুস বিটলজুস’
‘ডিউন ২’
‘টুইস্টারস’
‘গডজিলা এক্স কং: দ্য নিউ এম্পায়ার’
‘কুংফু পান্ডা ৪’
বিশ্ব চলচ্চিত্র
স্বর্ণপামজয়ী ফরাসি নির্মাতা জ্যাক অদিয়াঁরের নতুন সিনেমা ‘এমিলিয়া পেরেজ’। পরে নারীতে রূপান্তরিত হন, এমন এক মেক্সিকান মাদকসম্রাটকে নিয়ে মিউজিক্যাল ক্রাইম কমেডি ঘরানার ছবিটি তৈরি হয়েছে। চলতি বছর কান উৎসবে হইচই ফেলে দেওয়া সিনেমাটি গোল্ডেন গ্লোবেও সর্বোচ্চ মনোনয়ন পেয়েছে।
বছরের আলোচিত অ-ইংরেজিভাষী অন্য দুই সিনেমা ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ ও ‘অল ইউ ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাতও কান থেকেই হয়েছে। এর মধ্যে তিন দশক পর প্রথম ভারতীয় সিনেমা হিসেবে কানে জায়গা করে নিয়েছিল পায়েল কাপাডিয়ার ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’। ছবিটি কানে গ্রাঁ পি জেতে। এশীয় সিনেমার মধ্যে আরও উল্লেখ করতে হবে ‘এক্সহুমা’র কথা। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়, পরের সপ্তাহেই কোরিয়ায় মুক্তি পায় সিনেমাটি। এরপর জং জে-হিউনের ছবিটি টিকিট বিক্রির রেকর্ড গড়ে। চলতি বছর সবচেয়ে বেশি আয় করা কোরীয় সিনেমাও এটি।
আলোচিত ১০ অ-ইংরেজিভাষী সিনেমা
‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’
‘দ্য কাউন্ট অব মন্টে ক্রিস্টো’
‘এমিলিয়া পেরেজ’
‘ভারমিংলিও’
‘অল ইউ ইমাজিন অ্যাজ লাইট’
‘এক্সহুমা’
‘১৮*২ বিয়ন্ড ইয়ুথফুল ডেজ’
‘আ পার্ট অব ইউ’
‘আই অ্যাম স্টিল হেয়ার’
‘দ্য গার্ল উইথ দ্য নিডল’