সবার মাথায় একটা আহমেদ সাবেত আছে: ইরেশ যাকের
>সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে হুমায়ূন আহমেদের ‘দেবী’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র ‘দেবী’। সেখানে একটি খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরেশ যাকের। চলচ্চিত্রে অভিনয় ও বর্তমান কাজ নিয়ে কথা হলো প্রথম আলোর সঙ্গে।
নেতিবাচক চরিত্রে আবারও অভিনয় করলেন। কী প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
দেবীর আহমেদ সাবেত চরিত্রটিতে শারীরিক পরিবর্তনের থেকে মানসিক পরিবর্তনটা বেশি ছিল। শারীরিক দিক থেকে চরিত্রটি আমার নিয়মিত লুক দিয়েই হয়েছে। কিন্তু মানসিক দিকটা ছিল একেবারেই আলাদা। সেদিক দিয়ে চরিত্রটিকে মানসিক জায়গা থেকে গভীরভাবে ধারণ করতে হয়েছে। একই মানুষের বিভিন্ন রকমের মানসিক চরিত্রে নিজেকে পরিবেশন করিয়ে বিশ্বাসযোগ্য করে দেখানো কঠিন ছিল।
কোনো সাইকোথ্রিলার সিনেমার চরিত্র মাথায় রেখে কি এটি দাঁড় করিয়েছিলেন?
না। অন্য কোনো অ্যাক্টিং রেফারেন্স সচেতনভাবে নিইনি।
বইয়ের চরিত্রটি কতখানি রপ্ত করেছেন?
সিনেমাটা যেভাবে করা হয়েছে, তাতে একটু ভিন্নতা আছে। বইয়ে চরিত্রটি আরেকটু পলিশড, সফিস্টিকেটেড। আমি চরিত্রটিকে শুরুতে একটু সরল দেখাতে চেষ্টা করেছি। কারণ, শুরুতেই যদি আমি খুব পলিশ অভিনয় করি, তাহলে সবাই চরিত্রটির পরের রূপান্তর বুঝতে পারবে। চরিত্রটি বইয়ে আছে। একটি চরিত্রকে বইয়ে পড়া আর সিনেমায় দেখার মধ্যে পার্থক্য আছে। ভিজ্যুয়ালি যদি আপনি স্মার্ট একটা চরিত্র দেখেন, ওই চরিত্রটাই কিছুক্ষণ পর খুবই নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে—এটা মানুষের কাছে শকিং লাগবে না। কিন্তু সহজ–সরল একটি চরিত্র নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে, এই রূপান্তরটা মানুষের জন্য শকিং হয়।
এটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
আমার বন্ধুরা তো বলছে, ‘আহমেদ সাবেত দেখতে তো অনেক ভালো। তুমি কীভাবে এই চরিত্রে অভিনয় করবা?’ সবার মাথায় তো চরিত্রটা থাকে, তা-ই না? বিখ্যাত একটি বইয়ের চরিত্রে অভিনয় করা সব সময়ই খুব চ্যালেঞ্জিং। ওটা ভেঙে নিজের মতো করে বিশ্বাসযোগ্য করে দেখানোটা কঠিন। কারণ, সবার মাথায় একটা আহমেদ সাবেত আছে।
নতুন কোনো সিনেমায় অভিনয় করছেন?
এই মুহূর্তে কোনো সিনেমায় যুক্ত হচ্ছি না। দুটো সিনেমায় অভিনয় করলাম—একটা শনিবার বিকেল ও অন্যটা ইতি, তোমারই ঢাকা।
নেতিবাচক চরিত্রের প্রস্তাব বেশি আসে?
এটা একটা দুঃখের বিষয়। তাহসান, অপূর্ব কিংবা শুভর মতো দেখতে না হলে তো ইতিবাচক চরিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। সেই জায়গা থেকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে যখন আমাকে নিয়ে ভাবে, তখন নেতিবাচক চরিত্র ছাড়া ভাবতে পারে না। চরিত্রটা যদি ভালো হয়, অভিনয়ের সুযোগ থাকে, সেগুলো বিবেচনা করে চরিত্র বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিই।
নাটক-টেলিছবি করছেন এখন?
খুব একটা করছি না। একটা মঞ্চনাটকের কাজ করছি। ডিসেম্বরে মঞ্চায়ন হবে। সেখানে সময় দিতে হয়। এর পাশাপাশি ব্যবসা করে টেলিভিশনে কাজ করাটা কঠিন হয়ে যায়।
শেষ তিন প্রশ্ন
খল অভিনেতা হিসেবে কাকে ভালো লাগে?
প্রকাশ রাজ। সম্প্রতি বাণিজ্যিক কোনো একটা সিনেমায় তাঁর এত ভালো অভিনয় দেখলাম!
অভিনেতা হিসেবে আপনার দুর্বল দিক কোনটি?
উচ্চারণ। আমার বাবার (অভিনেতা আলী যাকের) মতো আমার কণ্ঠ অত পরিষ্কার নয়।
আপনি ভালো স্বামী নাকি ভালো অভিনেতা?
অভিনয় তো অনেক দিন থেকে করছি, আর স্বামী হলাম কয়েক দিন হলো। তুলনা করার মতো সময় হয়নি।