দেশে অসাধারণ সব মিউজিশিয়ান আছে
জীবনের আরেকটি বছর পার করলেন দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও সোলস ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য পার্থ বড়ুয়া। কেমন কেটেছে এবারের জন্মদিন, গান নিয়ে নতুন পরিকল্পনাসহ নানা প্রসঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় কথা বললেন তিনি।
প্রশ্ন :
জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ।
প্রশ্ন :
কত বছর হলো আপনার?
বয়স কত হয়েছে তা তো বলা যাবে না। বয়স বললে তো শেষ...টিআরপি কমে যাবে (হাসি)।
প্রশ্ন :
জন্মদিন কীভাবে কাটালেন?
একটি বিশেষ গানের আয়োজনের সঙ্গে ছিলাম, সেটার নতুন সিজনের শুটিং শুরু হয়েছে। শুটিংয়েই সময় কাটছে। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কেউ ফেসবুকে, কেউ ফোন বা এসএমএসে।
প্রশ্ন :
বিশেষ এই দিনে শুভেচ্ছা পেতে কেমন লাগে?
মানুষ যে মনে রেখেছে, এটাই তো অনেক। খুবই ভালো লাগে। আগে তো চিঠিপত্র ও ফুল পেতাম। এখন ফেসবুকে সুন্দর সুন্দর কথা লিখে ওয়ালে পোস্ট করে, পড়ি। আনন্দ পাই, অনুপ্রাণিত হই, নস্টালজিক হই।
প্রশ্ন :
পেছন ফিরে তাকালে কী মনে হয়?
জীবন থেকে আরেকটা বছর চলে গেল। আরেকটা বছর কম বাঁচব। আফসোস হয়, বয়স তো চলে যাচ্ছে। আরও কত কিছু করার ছিল।
প্রশ্ন :
কী করতে চান, যা এখনো করা হয়নি?
মিউজিকটা আরেকটু ভালো করে যদি শিখতে পারতাম! নিজেকে যদি ১০ বছর পেছনে নিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে শেখায় আরও মনোযোগী হতাম।
প্রশ্ন :
দেশের সংগীতাঙ্গনে এক ঝাঁক তরুণ কাজ করছেন। তাঁরা কেমন করছেন?
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের চিত্র আমি কখনোই খারাপ বলব না। নতুন প্রজন্মের শিল্পীরাও বেশ ভালো করছে। মুশকিলটা হচ্ছে, এদের জানার আগ্রহ একটু কম। আরেকটু জানা থাকলে আরও সুবিধা হতো আর কী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়, এরা একটু শর্টকাট খোঁজে। আমাদের সময়েও এমনটা ছিল। অবশ্য সব সময়ই থাকে। আমার কথা হচ্ছে, সবাইকে জেনে একেবারে ওস্তাদ হয়ে যেতে হবে, তা কিন্তু নয়। কাজ করে যাওয়ার মতো শিক্ষাটা দরকার। পেশাগতভাবে কাজ শুরু করলে আসলে তখন শেখাটা একটু কমে যায়। এরপরও আমি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আশাবাদী।
প্রশ্ন :
কেনো? এরপরেও কেনো আশাবাদী?
‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-এর শুরুর সময় আমাকে অনেক প্রশ্ন করেছিল, এরা ভবিষ্যতে কী করবে। এরা ১৬ বছর টিকে আছে। এরা গাইছে। কেউ কেউ তো খুবই ভালো গাইছে। তারা কিন্তু প্রতিনিয়ত পরীক্ষা দিয়ে নিজেদের প্রমাণ দিয়েছে। রিয়ালিটি শোর এই ছেলেমেয়েদের বেশির ভাগই খুব ভালো গায়। আমার তো মনে হয়, আমরা ভুল বাছাই করিনি। তা না হলে এত দিন তো তারা টিকতে পারত না।
প্রশ্ন :
আপনাকে দেখছি পুরোনো গানকে নতুন কম্পোজিশনে তরুণ শিল্পীদের দিয়ে গাওয়াচ্ছেন। কী চিন্তা থেকে এমনটা করছেন?
আমি সব সময় বিশ্বাস করি, আমার দেশের তরুণ শিল্পীরা ভালো গাইতে পারে। আমাদের দেশে অসাধারণ সব মিউজিশিয়ান আছে। আমাদের দেশে বসেই আন্তর্জাতিক মানের মিউজিক করা সম্ভব। নিজেদের গান দিয়েই আমরা নিজেদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করাতে পারব। অন্যদের মিউজিক দিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিছুই করতে পারব না। আমার এই প্রয়াসে সেই ব্যাপারটিই বোঝাতে চেয়েছি। আমরা সফলও হচ্ছি। দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর সাড়া পেয়েছি। আমরা দেখি, সবাই ভারতে দৌড়ায়। কিন্তু ওই দেশে যেতে হবে কেন? আমাদের দেশে ভালো শিল্পী আছে। আমার খুব খারাপ লাগে, যখন দেখি কোনো বড় বাজেটের সিনেমা হলে ভারতের শিল্পীদের দিয়ে গান করানো হয়। আমরাই যদি আমাদের শিল্পীদের প্রোমোট না করি, তাহলে কারা করবে? এই পর্যন্ত বাইরের দেশের কোনো শিল্পী আমাদের এখানে গান গেয়ে বড় কিছু করতে পেরেছে বলে মনে হয় না।
প্রশ্ন :
নতুন গান নিয়ে কিছু করছেন না কেন?
নতুন গান নিয়েও কাজ করব। এই ধরনের প্রোডাকশনে খরচ কিন্তু অনেক বেশি। আমার ভাগ্য ভালো, দুটি বড় প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে। আমি আগে নিজেই পুরোনো গান দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিই। অবশ্য এরই মধ্যে নতুন গানের কাজ শুরু করেছি। একটা একটা করে গান জোগাড় করছি। দুটি গান রেকর্ডও করেছি। নতুন গান করাটা সময়েরও ব্যাপার। দেখা গেল, দশ দিনেই একটা গান হয়নি, আবার দশ মিনিটেই হয়ে গেছে।
প্রশ্ন :
এত এত গান করেন। সিনেমায় গাইতে ও সংগীত পরিচালনায় দেখা যায় না কেন আপনাকে?
কেউ ডাকেনি, তাই করা হয়নি। আজ পর্যন্ত প্লেব্যাকের প্রস্তাব নিয়ে কেউ আসেনি। সংগীত পরিচালনার কথাও বলেনি। বললে অবশ্যই আনন্দ নিয়ে করতাম।