গান ধ্বংস করছে টেলিভিশনের রাতের লাইভ শো
>১৯৭৩ সালে সোলস ব্যান্ডের মাধ্যমে পেশাদার গানের জগতে পথচলা শুরু সংগীতশিল্পী তপন চৌধুরীর। গতকাল মঙ্গলবার ৬২ বছরে পদার্পণ করলেন তিনি। এবারের জন্মদিন কীভাবে কাটল, তা জানতে সন্ধ্যায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। পাশাপাশি দেশের সংগীত নিয়ে গুণী এই শিল্পী জানালেন তাঁর ভাবনার কথাও।
শুভ জন্মদিন।
ধন্যবাদ।
এবারের জন্মদিন কীভাবে উদ্যাপন করলেন?
ঘরে বসে কেটেছে। ভাইবোন, বন্ধুরা এসেছে। তাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছি। সবাই শুভকামনা জানিয়েছে। কেউ ফুল পাঠিয়েছে। কেকও কেটেছি।
এখন ফেসবুকেও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায় অনেকে।
এখন অনেক সুবিধা। ফেসবুকে পোস্টার করে। স্থিরচিত্র দিয়ে শুভকামনা জানায়। অনেক কিছু লেখে, নস্টালজিক হই। আগে অনেকে ফুল নিয়ে আসত, কেক কাটতাম। আড্ডা দিতাম। এখন ফেসবুকে ফুল, ছবি দিয়ে সেরে ফেলে। আমার কিন্তু ভালোই লাগে। মানুষ তো এখন ব্যস্ত, সরাসরি দেখা করার এত সময় কোথায়।
গানে চার দশক পার করেছেন। আপনার মূল্যায়ন কেমন?
ভেতরে–ভেতরে অনেক বড় কাজ হচ্ছে। এটা আশার খবর। আবার অনেককেই দেখি, পরিচিতজনদের দিয়ে যেকোনো ধরনের গানের কাজ সেরে নিচ্ছেন। এখন সবাই দলে দলে বিভক্ত। আগে যে গান যার গলায় মানানসই, তাকে খুঁজে বের করে গাওয়ানো হতো। সংগীত পরিচালক, প্রযোজক, গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী—সবাই মিলে একসঙ্গে বসে গান তৈরি করতেন। এখন সেটা হয় না। প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমরা এগিয়েছি। অ্যাকুস্টিক মিউজিশিয়ান ধ্বংস হয়ে গেছে। আগে তবলা, বেহালা, সেতারসহ সব অ্যাকুস্টিক যন্ত্র বাজানো লোক পাওয়া যেত। এখন সারা বাংলাদেশে স্যাক্সোফোন বাজানোর লোক খুব একটা পাওয়া যাবে না।
গানের এখনকার অবস্থা কী?
গান ধ্বংস করছে টেলিভিশনের রাতের লাইভ শো। তরুণদের প্রায় প্রত্যেকে গান গায়। ঘুরেফিরে একই গান। নিজেদের কোনো গান নেই।
তরুণেরা কেমন করছেন?
ভালো গায়। কিন্তু নিজেদের দিকে নজর দিচ্ছে না। তরুণেরা সব জায়গায় গিয়ে রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীন, সৈয়দ আব্দুল হাদী, সুবীর নন্দীসহ অনেকের গান গায়। তরুণদের নিজেদের দিকে নজর দিতে হবে। এখন দেখি অনেকে গানও শিখছে ইউটিউবে! টিউটোরিয়াল আছে, শিখবে। কিন্তু ক্রস চেক করতে হবে। তরুণদের মধ্যে অনেকে সম্ভাবনাময়। তাদের নিয়ে আমি আশাবাদী। তবে কেউ যদি মনে করে, আমি তিন বছরের মধ্যে সুপারস্টার হব, তাহলে হবে না। নিজেকে তারকা ভাবলে আর গান হবে না।