প্রশ্ন :
পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে প্রথম কাজ করলেন?
ঠিক বলেছেন। সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। তবে তাঁর সঙ্গে পরিচয় ১০–১১ বছরের। তাঁর পরিচালিত ‘উজান গাঙের নাইয়া’তেও কাজ করার কথা ছিল। ‘স্বপ্নজাল’ চলচ্চিত্রের জন্যও ডেকেছিলেন। কিন্তু হয়ে ওঠেনি। এবার যখন কাজ করছিলাম, একটু নার্ভাসই ছিলাম।
প্রশ্ন :
কেন?
একজন মানুষের সঙ্গে এমনি পরিচয় একটা জিনিস, কিন্তু পেশাগত কাজ করতে গেলে তখন তাঁর চেহারাটা অন্য রকমভাবে আবিষ্কার করা যায়। তখন ভাবতে থাকি, তিনি কি বকা দেন, নাকি রাগ করেন মানুষের সামনে, তাই নার্ভাস ছিলাম। শুটিংয়ের সময় বিষয়টা সেলিম ভাইও বুঝতে পেরেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘তুই যখন ক্যামেরার সামনে থাকবি, তখন ভাববি, পৃথিবীতে তুই একা, আশপাশে কিচ্ছু নেই। তুই যা–ই মনে করিস, তা–ই বলবি।’ প্রচণ্ড স্বাধীনতা দিয়েছেন। চরিত্রের স্বাধীনতাও ছিল। আমি এটাও ভাবছিলাম, এত বড় মাপের সব অভিনয়শিল্পী, অথচ আমার চরিত্রটি খুবই ছোট। তার মধ্যে নিজেকে কীভাবে বের করে আনব—এ কথা শুনে তিনি বলছিলেন, ‘তোকে কিছুই করতে হবে না। শুধু যা লেখা আছে, তা–ই বলে যাবি। এরপর দেখবি যে সবাই তোকে খুঁজে নেবে।’ ছবিটি মুক্তির পর তো তা–ই দেখলাম। ভাবি চরিত্রটি নিয়ে সবাই কথা বলছে। আমি আশাই করিনি গুণিন–এর কাজটা দেখে সবাই প্রশংসা করবে, সাধুবাদ জানাবে। অনেকে মজা করে ‘ভাবি ভাবি’ বলে ডাকেন। সব মিলিয়ে গুণিন–এর অভিজ্ঞতা বেশ ভালো।
প্রশ্ন :
সহশিল্পীরা কেমন ছিলেন?
আমার সহশিল্পীরা অনেক মজার ছিলেন। আমরা সেটে আনন্দ নিয়েই কাজ করেছি। কেন জানি রাত সাতটা–আটটা হতে হতেই কাজ শেষ হয়ে যেত। বাকি সময় আমরা আড্ডা দিতাম। যার ফলে রাতের আড্ডাটা আমাদের সকালের কাজটায় গতি এনে দিত। আমার অংশের শুটিং হয়েছে মানিকগঞ্জে।
প্রশ্ন :
এর আগেও তো আপনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
এর আগে পাঁচটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। এগুলো হচ্ছে ‘হেডমাস্টার’, ‘কারণ তোমায় ভালোবাসি’, ‘হরিযূপিয়া’, ‘কালের পুতুল’ ও ‘সত্তা’। তবে ‘গুণিন’–এর মতো সাড়া কোনোটিতে পাইনি। আমার মনে হয়, আমাকে যে অনেকে এত দিন বলতেন, ‘তোমাকে দেখি না। কোথায় থাকো, কী করো?’ আশা করি, কিছু মানুষ এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমাকে নতুন করে আবার চেনা শুরু করেছেন।
প্রশ্ন :
বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করে বিনোদন অঙ্গনে আপনার শুরুটা ভালোই ছিল। অনিয়মিত হলেন কেন?
অনেক সময় কিছু না বুঝে মানহীন কাজ করতে হয়। একটা পর্যায়ে আমার কাছে সব প্রোডাকশন এলোমেলো লাগছিল। তাই আমি ব্যবসায় মনোযোগ দিই। আমার নিজের ফ্যাশন হাউস আছে। ব্যবসায় সময় দিতে গিয়ে কম কাজ করতে চাইতাম। অলসও হয়ে গিয়েছিলাম বলা যায়।
প্রশ্ন :
ব্যবসা কেমন চলছে?
প্রথম এক বছর বেশ ভালো চলছিল। করোনায় ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি যেহেতু ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়েছি, তাই এ–সংক্রান্ত কিছু করতে চেয়েছিলাম। এখন শোরুম বাদ দিয়ে অনলাইনে বেচাকেনা করছি। তা ছাড়া হঠাৎ বিয়ে করায়ও কাজে মনোযোগী হতে পারিনি।
প্রশ্ন :
‘গুণিন’–এ আপনি যেহেতু প্রশংসিত হচ্ছেন, নতুন চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবনা কী?
বুঝে গেছি, আমাকে দিয়ে কমার্শিয়াল সিনেমা হবে না। এখন যে অফট্র্যাকের গল্পে সিনেমা হচ্ছে, এসব করতে চাই। ওয়েব সিরিজে অভিনয় করছি। সত্যি বলতে, ভালো ভালো গল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে চাই। অভিনয়ে নিয়মিত হতে চাই।