প্রথম আলো :
সিনেমা হলের পর ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে ‘৩৬–২৪–৩৬’ ছবিটি। কেমন সাড়া পেয়েছেন?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: এর আগে সাইফ চন্দনের ‘টার্গেট’ ও রায়হান রাফীর ‘স্বপ্নবাজি’ সিনেমায় অভিনয় করেছি। মুক্তি পেয়েছে চরকির ‘৩৬–২৪–৩৬’ সিনেমাটি। এটা মাল্টিকাস্টিং একটা সিনেমা। একটি মেয়ের সামাজিক বাধার গল্প হলেও এখানে সব চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে এমন সিনেমা হরদম হয়। কিন্তু হলিউড–বলিউডের মতো মাল্টিকাস্টিং আমাদের দেশে দেখা যায় না। আমার কাছে চরিত্রটি ভালো লেগেছে। দর্শক সিনেমাটি এখন চরকিতে দেখছেন, দেখে আমাকে আলাদা করতে পেরেছেন, এটাই প্রাপ্তি। আমরা কিন্তু জেন জিদের আলাদা করে টার্গেট করেছিলাম, সেখানেও সফল।
প্রথম আলো :
‘রঙ্গনা’ সিনেমার শুটিংয়ের খবর কী?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: সিনেমাটির কয়েক দিনের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলাম। কিছু কাজ হয়েছে। তখন অনেক গরম ছিল। পরে সিদ্ধান্ত হয় শীতে শুটিং করার। শিগগির হয়তো সিনেমাটির শুটিং শুরু হবে, তবে কবে, তা বলতে পারছি না।
প্রথম আলো :
শাবনূরের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: অনেকেরই স্বপ্ন শাবনূরের সঙ্গে অভিনয় করার। যে কারণে সবাই বলেন, শাবনূর স্বপ্নের নায়িকা। আগে থেকেই আমাদের পরিচয় থাকায়, আমার কাছে শাবনূর আপুকে আলাদা কিছু মনে হয়নি। তিনি মিষ্টি এক নায়িকা। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও মিষ্টি।
প্রথম আলো :
শুনেছি একসময় প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন; পরে ব্যবসায়ী হতে চেয়েছিলেন কেন?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: কৈশোরে আমি নিয়মিত ক্রিকেট খেলতাম। ইচ্ছাও ছিল যে ক্রিকেটার হব। কিন্তু পেশা হিসেবে খেলা নেব কি না, তা নিয়ে একসময় দোটানায় পড়ে যাই। কারণ, পরিবার চাইত যে আমি ঝুঁকিমুক্ত ক্যারিয়ার গড়ি। বাণিজ্যের ছাত্র হওয়ায় পড়াশোনা শেষে ব্যবসা করতে চেয়েছিলাম। পরিবার ও চট্টগ্রামের এত শিল্পী কাজ করেন; সেটার প্রভাবেই বোধ হয় পরে অভিনয়টাই টেনেছে।
প্রথম আলো :
অভিনয়ে আসার গল্পটা বলবেন?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: আমার মা নূর নাহার তারেক ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার। তখন আমরা চট্টগ্রাম থাকতাম। তখন মায়ের সঙ্গে ফ্যাশন শোতে যেতাম। র্যাম্পে হাঁটা, ফটোশুট—এসবের সঙ্গে তখন থেকেই পরিচয়। এসব দেখে ক্যামেরাভীতি কেটে যায়। মায়ের উৎসাহেই অভিনয়ে আসা। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় মডেলিং শুরু করি। ২০০৬ সালে ফারুকী (মোস্তফা সরয়ার) ভাইয়ের পরিচালনায় বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং করি। অভিনয়ে আসা মূলত পরিবারে অনুপ্রেরণা আর চট্টগ্রামের এত সংগীতশিল্পী, অভিনেতা ও মডেল—তাঁরাও ভীষণ অনুপ্রাণিত করেছেন। মনে হয়েছে, অভিনয়ে টিকে থাকা যাবে।
প্রথম আলো :
প্রায় দুই দশক ধরে কাজ করছেন। কখনো মনে হয়েছে যে আরও ভালো অবস্থানে থাকার কথা ছিল?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: আমি শুরুতেই স্টারডম দেখে ফেলেছি। তখন কম বয়স। তখনই মনে হয়েছে, জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেয়ে ধরে রাখা কঠিন। দীর্ঘ এই সময়ে আমি বিজ্ঞাপনচিত্র, টেলিভিশনের প্রচুর ফিকশন আর ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছি। ‘গুলশান অ্যাভিনিউ’ ধারাবাহিক নাটকে টানা চার বছর কাজ করেছি। সে সময় মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অমিতাভ রেজা, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, কিসলু ভাইসহ সবার সঙ্গে কাজ করেছি। আমি প্রতিনিয়ত শিখেছি, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমার মনে হয়, একজন শিল্পী তৈরি হতেই ১৫ থেকে ২০ বছর লাগে।
প্রথম আলো :
অনেকে তো অল্প সময়েই তারকাখ্যাতি পেয়ে যান!
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: এটা ঠিক, হুট করে এসেও কেউ কেউ তারকা হচ্ছেন। সেটা তাঁদের যোগ্যতা দিয়ে, কারণ, ভালো কাজ ছাড়া পরিচিতি পাওয়া সহজ কথা নয়। তবে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছেন, তাঁদের টিকে থাকাও কঠিন হচ্ছে। খেয়াল করলে দেখবেন, টেলিভিশনের যুগে জাহিদ হাসান, মাহফুজ আহমেদ, তৌকির ভাইয়েরা কিন্তু এখনো দর্শকদের মনে রয়েছেন। তাই আমার মতে, টেলিভিশন যুগের অভিনয়শিল্পীরাই বড় তারকা। তাঁদের জনপ্রিয়তা কখনোই কমবে না। কিন্তু ভাইরালদের জনপ্রিয়তা ক্ষণস্থায়ী। তাঁদেরও টিকে থাকার সংগ্রাম করতে হয়। প্রত্যেক তারকাকে কখনো না কখনো টিকে থাকার সংগ্রাম করতে হয়। দিন শেষে শৈল্পিক কাজই শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখে।
প্রথম আলো :
শিল্পী হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: আমি শুরু থেকেই ভালোবাসা পেয়েছি। সেই থেকে এখনো অভিনেতা হিসেবে অনেক কিছু শিখছি। তাই নিয়মিত কাজ করে যেতে চাই, ভালোবাসায় শীর্ষে থাকতে চাই।
প্রথম আলো :
ব্যস্ততা কী নিয়ে?
গোলাম কিবরিয়া তানভীর: ‘হাইড অ্যান্ড সিক’ ওয়েব ফিল্মে ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করলাম। কিছুদিন পর সরকারি অনুদানের একটি সিনেমার শুটিং। ওয়েবে সিরিজের কাজ করছি। এর বাইরে ‘গোলমাল’, ‘চিটার অ্যান্ড জেন্টলম্যান’সহ কয়েকটি ধারাবাহিকের কাজ নিয়ে ব্যস্ততা চলছে।