সিনেমা মুক্তি পেতে পেতে উৎসাহ হারিয়ে যায়

৯ বছর আগে ‘টার্গেট’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন আইরিন সুলতানা। ক্যারিয়ারে শুরুর দিকের শুটিং করা সিনেমাটি গত শুক্রবারে মুক্তি পেয়েছে ‘দুনিয়া’ নামে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর অভিনীত ‘রৌদ্রছায়া’, ‘চৈত্রদুপুর’, ‘হৃদমাঝারে’সহ ছয়টি সিনেমা। কাজ ও নানা প্রসঙ্গে গত শনিবার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মনজুরুল আলম

আইরিন সুলতানা। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

আপনার ক্যারিয়ার কত বছরে পড়ল?

আইরিন সুলতানা: ১১ বছর চলে, সামনে ১২-তে পড়বে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, এই তো সেদিন মিডিয়ায় এলাম। দিনগুলো কীভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না।

প্রথম আলো :

‘দুনিয়া’ সিনেমায় কবে অভিনয় করলেন?

আইরিন সুলতানা: আসলে ‘দুনিয়া’ নামে কোনো সিনেমার শুটিং করিনি। তখন সিনেমার নাম ছিল টার্গেট। হঠাৎ সিনেমাটি মুক্তির তিন-চার দিন আগে শুনলাম, ‘দুনিয়া’ নামে মুক্তি পাচ্ছে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কবে, কী নামে মুক্তি দেবে, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। অবশেষে মুক্তি যে পেয়েছে, এতেই আমি খুশি।

প্রথম আলো :

খুশি হওয়ার বিশেষ কোনো কারণ আছে?

আইরিন সুলতানা: এত বছর আগের সিনেমা। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম যে এটা বোধ হয় আর মুক্তি পাবে না। কারণ, সেন্সর পাওয়ার পরেও অনেক দিন সিনেমাটির ভাগ্য ঝুলে ছিল। একটা অনিশ্চয়তা ছিল। সেখানে দর্শকেরা সিনেমাটি দেখতে পারছেন, এটাই বড় আনন্দের।

আইরিন সুলতানা। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

সিনেমা দীর্ঘ সময় আটকে থাকলে অভিনেত্রী হিসেবে কেমন লাগে?

আইরিন সুলতানা: খুবই কষ্ট লাগে। আমার মনে হয়, আটকে থাকাটা আমাদের দেশেই বেশি হয়। একটা সিনেমা শুটিং করব, সেটা শেষ হলে মুক্তি পাবে, দর্শক দেখবেন। সেটা নিয়ে প্রতিক্রিয়া পাব। নিজের ভুলভ্রান্তি শিখব। এটা নিয়ে শুরুতে একটা উৎসাহ থাকে। কিন্তু আমাদের এখানে যা হয়, তাতে অনেক সিনেমা মুক্তি পেতে পেতে উৎসাহ হারিয়ে যায়। সিনেমাটি তখনকার সময়ের প্রাসঙ্গিক ছিল। কিছু পরিবর্তন করলে হয়তো ভালো হতো। সেটা তো সম্ভব নয়।

প্রথম আলো :

আপনি সিনেমাটি দেখেছেন?

আইরিন সুলতানা: শুক্রবারেই গিয়েছিলাম সিনেমাটি দেখতে। নিজের সিনেমা সব সময় সমালোচকের মতো দেখি। শুধু মনে হয়, এখানে আরও ভালো করা যেত। ইশ্‌! আবার যদি সুযোগ পেতাম। এবারও তাই মনে হয়েছে। এ ছাড়া সিনেমার যখন শুটিং করি, তখন মাত্র দর্শকেরা অনলাইনমুখী হয়েছেন। সেখানে থেকে এখন আমরা রিলস, শর্টসে ঝুঁকেছি। কত পরিবর্তন হয়ে গেছে। দেখতে দেখতে মনে হয়েছে, এখন আমি অনেক পরিণত।

আইরিন সুলতানা। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

কেন পরিণত মনে হয়েছে?

আইরিন সুলতানা: গল্পটা ৯ বছর আগে শুটিং করা। তখন অভিনয়ের অনেক কিছুই শিখছিলাম। পরে সিনেমা দেখে মনে হয়েছে, আমার মধ্যে ম্যাচুরিটি এসেছে। এখন সুযোগ পেলে হয়তো আবার কিছু দৃশ্যে দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করতাম।

প্রথম আলো :

আপনার ক্যারিয়ারের কি এই সময় খুব বেশি পরিবর্তন হয়েছে?

আইরিন সুলতানা: আমি সব সময় ভাগ্যে বিশ্বাস করি। যেভাবে আছি, ভালো আছি। ক্যারিয়ার নিয়ে আফসোস নেই। হয়তো যে সিনেমাগুলো করতে পারিনি, সেগুলো না করাই ভালো ছিল। আমি বলব, আমাকে প্রোডাকশন হাউসগুলো ঠিকমতো ব্যবহার করেনি।

আইরিন সুলতানা। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

নায়িকা পরিচয়ে আপনি খুশি?

আইরিন সুলতানা: আমার কাছে নায়িকা পরিচয় অনেক সম্মানের। সবাই কি নায়িকা হতে পারে? আমি এখনো চেষ্টা করছি। নায়িকা হিসেবে যে সিনেমাগুলোতে অভিনয় করেছি, সেগুলো নিয়ে খুশি। এখন কোনো নায়িকা চাইলেই কি সব পায়? আমি তো গল্প চাইতে পারি না। আমার কাছে গল্প আসতে হবে। আমি পরিকল্পনা করে তো লাভ নেই। আমাকে নিয়ে কাউকে ভাবতে হবে। আমি কী প্রযোজনা করব, সেই ক্ষমতা তো নেই। প্রজেক্ট নিয়মিত এলে আরও ভালো কাজ করা হতো।

প্রথম আলো :

অভিনয় থেকে অনেকটাই দূরে, কী নিয়ে ব্যস্ত?

আইরিন সুলতানা: মাঝে চাকরি করেছি। সেটা তো ছেড়ে দিলাম। কিছু তো করে খেতে হবে। আমি এখন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছি। এ ছাড়া গল্প এলে কাজ করছি। এমন না যে আমি বিরতি নিয়েছি। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব অনেক সময় মেলে না। আমার ছয়টি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সামনে হয়তো ওটিটির কাজ করব।

আইরিন সুলতানা। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে
আরও পড়ুন