বিয়ে যার সঙ্গে লেখা থাকবে, তার সঙ্গেই হবে

অহনা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
ভালোবাসা দিবসের দুটি কাজ নিয়ে ভক্তদের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছেন অহনা রহমান। ৭ পর্বের ঈদের নাটক হানিমুন থেকে পালিয়েসহ একাধিক নাটকের শুটিং নিয়ে এখন ব্যস্ত এই অভিনেত্রী। তিন বছর পরে ফেরা, ব্যক্তিগত জীবনে প্রেম–বিয়েসহ নানা প্রসঙ্গে কথা বললেন এই অভিনেত্রী

প্রশ্ন :

বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে আপনাকে ফোনে পেলাম। কোথায় আছেন?


কুয়াকাটা। শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম, ভাই। ঈদের কাজ করছি। আর সান চলে যাচ্ছিল, যে কারণে তাড়াহুড়া করে শুটিং করতে হচ্ছিল। ওই সময়ের মধ্যে দিনের শুটিং শেষ করতে না পারলে ফেঁসে যেতাম। রাতে তো বাইরে করা যায় না। এখানে আমার তিনটি নাটকের শুটিং আছে।

প্রশ্ন :

বেশির ভাগই দেখা যায়, শেষ মুহূর্তে কাজের চাপ। এভাবে তাড়াহুড়া করে শুটিং করলে কাজের মান ঠিক থাকে?

আসলে ডে সিকোয়েন্সগুলো দিনে শেষ করা নিয়ে সব সময়ই একটা তাড়া থাকে। কখনো শুটিং ঠিক সময়ে শুরু করতে না পারা বা দিনের সিকোয়েন্স বেশি থাকলে দুপুরের পরে কাজে চাপ পড়ে যায়। কিন্তু কাজে কোনো ছাড় দিই না। সে কারণে ফোনেও কথা বলতে পারি না। দেখা যায় সন্ধ্যার পরেই সবাইকে কলব্যাক করি।

অহনা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

দীর্ঘ সময় বিরতি দিয়ে ফিরলেন। কেন এ বিরতি?


তিন বছর কাজে বিরতি দিয়ে গত আগস্ট থেকে ফিরেছি। এর মধ্যে নিজেকে একটু সময় দিয়েছিলাম। বেকিং কোর্স করেছি। একটু মুটিয়েও গিয়েছিলাম। পরে ১০ কেজি ওজন কমাতে হয়েছে। তারপরেই ব্যাক করেছি। দর্শক আগের সেই আহনাকে আবার পছন্দ করেছেন। সেপ্টেম্বর থেকেই নিয়মিত কাজ করছি; এই ফেরায় এটাই আমার শান্তি।

প্রশ্ন :

দীর্ঘদিন পরে ফেরা। দর্শক আপনাকে কীভাবে গ্রহণ করবেন—এ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল না?

আমার কাছে মনে হয়েছে, তিন বছর পরে কামব্যাক করাটি দর্শক হয়তো সহজে গ্রহণ করবেন না। হয়তো পজিটিভভাবে দেখবেন না, আবার সেই অহনার জায়গাটা তৈরি করতে সময় লাগবে। কিন্তু আমি অবাক। কারণ, হঠাৎ এভাবে ফিরে দর্শকদের ভালোবাসা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। সেখানে আমি লাকি। দর্শকদের পছন্দ—সবকিছু ব্যাটে–বলে মিলে গিয়েছে।

অহনা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

নাটকে বেশির ভাগ আপনাকে বরিশাল বা নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়।

এটা অনেকেই মনে করেন, আসলে তেমনটা না। এটা ভুল। শ্বশুরবাড়ি নোয়াখালী নামের একটি নাটকের দুটি পার্ট রয়েছে, সেখানেই শুধু নোয়াখালীর ভাষায় কথা বলেছি। বরিশালের ভাষায় একটি নাটকে অভিনয় করেছি, নাটকটি ঈদে প্রচারিত হবে। আমি দু–একটি ভাষার মধ্যে নিজেকে আটকে রাখি না।

প্রশ্ন :

ভালোবাসা দিবসের নাটক ‘মালা তুমি কার’, ‘গ্রামের গার্লফ্রেন্ড’ দেখে দর্শক কী বলছেন?

নাটক দুটির ভিউ ভালো। দর্শকও পছন্দ করেছেন। ভালো সাড়া পাচ্ছি। সংলাপ ও লুক নিয়ে দর্শক কথা বলছেন। কাজের প্রশংসা পেলে তো ভালোই লাগে।

অহনা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

ফেরার পরে নাটকের মানের কোনো পরিবর্তন কি চোখে পড়েছে?

আগের চেয়ে দর্শকদের রুচি পরিবর্তন হয়েছে। ব্যবসার ধরন পরিবর্তন হয়েছে। কিছু কাজে হয়তো স্রোতে গা ভাসাতে হচ্ছে। এই কাজগুলো দর্শক পছন্দ করছেন। কিছু করার নেই। আগে নিজের জায়গাটা তৈরি করতে হবে। কিন্তু কাজ করতে কারও সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। সেটা শামীম সরকার হোক, আলভী হোক বা রাশেদ হোক। কারও মধ্যেই কোনো কমতি নেই। সবাই যাঁর যাঁর জায়গায় ভালো কাজ করছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে, এখন কাজ করে যাই, পরে বেছে বেছে কাজ করে যাব।  

অহনা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

শামীম হাসান সরকার ও আপনাকে ঘিরে ফেসবুক ও অনলাইন খবরে প্রায়ই ভক্তরা বলার চেষ্টা করেন, আপনাদের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে...

সম্পর্ক তো থাকতেই পারে। শুধু শামীম নয়, আলভী, রাশেদ সীমান্তের সঙ্গেও তো আমার সম্পর্ক আছে। এ সম্পর্ক কাজের জায়গায়। কিন্তু শামীমের সঙ্গে কী সম্পর্ক আছে, এটা নিয়ে অনেকে কী ভাবছে—এ পারসোনাল বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইছি না।

অহনা ও শামীম সরকার
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

ভালোবাসা দিবসে শামীমের ফেসবুকে পোস্ট করা রোমান্টিক ছবিতে আপনাদের একসঙ্গে দেখা গেল। কেউ কেউ বলছেন, বিয়েও করতে পারেন...

অনেকেই অনেক কথা বলছেন, সেটা আমরা কেউ পাত্তা দিচ্ছি না। আমরা একসঙ্গে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। দর্শক আমাদের জুটির অভিনয় ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন, পছন্দ করেছেন। এখন কাজ করে যেতে চাই। আর জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে—এগুলো তো আল্লাহ ভালো জানেন। আমার বিয়ে যার সঙ্গে লেখা থাকবে, তার সঙ্গেই হবে। সেটা শামীম হোক বা এক্স ওয়াই জেড হোক, সেটা আমি এখনোই জানি না। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এ মুহূর্তে কিছুই বলতে চাইছি না। সেটা সময় হলেই জানিয়ে দেব। এখন ক্যারিয়ার নিয়েই বেশি ভাবছি। ঈদের আগপর্যন্ত টানা কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকব।

আরও পড়ুন