‘রইল বাকি দশ’–এ কাজ করার সময় কোন ভাবনা কাজ করেছিল?
অর্চিতা স্পর্শিয়া : গল্পটা ভালো লেগেছিল। চরিত্রও পছন্দের ছিল। পরিচালক ও সহশিল্পীও ভালো; সব মিলিয়ে আমি যেমন কাজ করতে চাই, এটাও তেমন।
প্রথম আলো :
কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুতে ফেসবুকে আপনার অবস্থান তুলে ধরেছিলেন। এই আন্দোলন নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
অর্চিতা স্পর্শিয়া : যতটুকু আমি আমার ফেসবুক আইডিতে লিখেছি (আমি বিশ্বাস করি যে কোটাব্যবস্থা সংস্কার করা প্রয়োজন, যাতে সবার জন্য ন্যায্য সুযোগ নিশ্চিত হয় এবং এটি অবশেষে সংস্কার হবে। কিন্তু আমাদের যুবকদের যে প্রাণগুলো চলে গেছে, তা আর ফিরে আসবে না! কোটা আন্দোলন নিয়ে চলমান সংঘাত শেষ করার জন্য একটি তাত্ক্ষণিক সমাধান বের করা জরুরি। তারা তরুণ এবং তাদের ভালোবাসা দিয়ে সামলানো উচিত, আগ্রাসন দিয়ে নয়), ততটুকুই আমার বক্তব্য। এর বাইরে পুরো বিষয়টা যে এত কঠিন পর্যায়ে চলে আসছে, এখন এটা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো মতামত দিতে পারছি না। এখন আসলে বোঝার চেষ্টা করছি, কী হচ্ছে। অনেক প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আমাদের শুটিংয়েও তো আলোচনার বিষয় এখন এই আন্দোলন।
কী কথা হয় শুটিংয়ের সময়?
অর্চিতা স্পর্শিয়া : কয়েক দিন আগেও শুটিংয়ের ফাঁকে আলোচনায় নিজেদের কাজ প্রাধান্য পেত। এখন আলোচনা একটাই—দেশে কী হচ্ছে, কী হবে, এর সমাধান কী? আমরা তো এই দেশের নাগরিক। এই দেশের আলো–বাতাসে বেড়ে উঠেছি। এই দেশের মাটিতে বসে খাই। এটা তো আমাদের দেশ—চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক না? দেশের একটা বিষয়ের সঙ্গে আরেকটা তো সংযুক্ত। ইন্টারনেট এক দিন বন্ধ থাকা মানে তো অনেক কিছু থমকে থাকা। পুরো অফিস বন্ধ। একটা কোম্পানি পুরাই শাটডাউন হয়ে যায়। আমাদের দেশের যেটাই হোক না কেন—ছোট বা বড় সবকিছুর সঙ্গে আমিও সম্পর্কিত। আমরা সবাই সম্পর্কিত।
প্রথম আলো :
যেকোনো আন্দোলন–সংগ্রাম শিল্পীকে নানাভাবে প্রেরণা জোগায়—আপনাকে এটা কীভাবে অনুপ্রাণিত করেছে?
অর্চিতা স্পর্শিয়া : আমি বুঝতে পারছি না এটা আদৌ কোনো প্রেরণা জোগাচ্ছে কি, জোগাচ্ছে না। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। মন্তব্যের ওই পয়েন্টে এখনো আসতেও পারছি না। বুঝেও উঠতে পারছি না আসলে। কিন্তু আশা করছি, সব ঠিক হয়ে যাক।
শুটিং করছেন। এ সময়টা শুটিংয়ের জন্য কতটা উপযোগী, ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারেন?
অর্চিতা স্পর্শিয়া : রুবেল আনুশের পরিচালনায় একটি নাটকের শুটিং করছি। আমার সহশিল্পী মুশফিক আর ফারহান। আন্দোলনের মধ্যে প্রথম শুটিং করছি। ঘরে তো আর বসে থাকা যায় না। কাজ করে খেতে হয় তো। এটা তো আমাদের পেশা। কাজ না করলে খাব কী? ঝুঁকি নিয়ে তাই কাজ করছি। দেশের এখন যে অবস্থা, তাতে একধরনের ঝুঁকি থাকে। কাজের মানুষ কত দিন ঘরে বসে থাকব। জীবনের প্রয়োজনে বের হতে হবেই। দিনের পর দিন এভাবে তো চলতে পারে না। মানসিকভাবে অবশ্যই আমরা কেউ নির্ভার নই। আগের মতো সবকিছু স্বাভাবিকও তো না। কিন্তু তারপরও জীবন চালাতে হবে।
প্রথম আলো :
এর বাইরে নতুন কাজের খবর বলুন...
অর্চিতা স্পর্শিয়া : নতুন কাজ তো আছে। কিন্তু এখন দেশের যে পরিস্থিতি, সেটা নিয়েও ভাবছি। কীভাবে পরের কাজগুলো করব, পরিস্থিতি আরও ভালো হবে নাকি খারাপ হবে, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। সবাইকে মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। এভাবে তো চলতে পারে না। এটা কোনো সমাধানও নয়।
তাহলে সমাধান কী?
অর্চিতা স্পর্শিয়া : কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এক লাইনে বলার মতো বিষয়ও নয়। বিষয়টা এমন না যে এটা করলে ঠিক হয়ে যাবে, ওটা করলে ঠিক হয়ে। পুরো পরিস্থিতি খুবই ধূসর। সত্যিকার অর্থে কী হচ্ছে, সেটা বুঝতে পারছি না। তবে আমি আশাবাদী, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।