আমি হাল ছেড়ে দেওয়ার মেয়ে নই: সাফা কবির
অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন ছিল না। আদনান আল রাজীব পরিচালিত টেলিছবি ‘অ্যাট এইটিন’–এর ছোট একটি চরিত্র বদলে দেয় ক্যারিয়ার। তারপর অভিনয়েই কাটিয়ে দিলেন এক দশক। এই সময়ে শতাধিক নাটকে কাজ করেছেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ওয়েব ফিল্ম ‘কুহেলিকা’সহ একাধিক কাজ। ঈদের নাটক ও ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গে কথা বললেন সাফা কবির।
প্রশ্ন :
অভিনয়ে ১০ বছর কাটিয়ে দিলেন।
আমি কিন্তু কোনো প্রতিযোগিতা থেকে আসিনি। টিভি পর্দায় কাজ করার তেমন ইচ্ছাও ছিল না। নাটকের ছোট একটি চরিত্র দিয়ে মানুষ আমাকে চিনতে শুরু করেন। পরে ধারাবাহিক করেছি, মডেলিং করেছি। একটু একটু করে এগিয়েছি। তখন সিনিয়রদের দেখে ইচ্ছা হতো, কবে আমি একক নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করব। সে জন্য অনেক সময় গল্পে ছাড় দিয়েও কাজ করেছি। আবার নিয়মিত কাজের মধ্যে যখন কোনো পরিচালক বলছেন, ‘তোমাকে ভেবেই গল্পটা লেখা,’ তখন মনে হয়েছে নিজের একটা জায়গা হচ্ছে। এই পুরো জার্নি অনেক কঠিন ছিল।
প্রশ্ন :
কখনো কি মনে হয়েছিল অভিনয় ছেড়ে দিই?
ক্যারিয়ারে তো কিছুটা ওঠানামা থাকবেই। কিন্তু কখনোই মনে হয়নি অভিনয় ছেড়ে দিই। আমি হাল ছেড়ে দেওয়ার মেয়ে নই। যখন খারাপ সময় যাচ্ছিল, চুপচাপ বসে থাকতাম। সমস্যার সমাধান নিয়ে ভাবতাম। এর জন্য অনেক লড়াই করতে হয়েছে। অনেক কষ্ট ও ধৈর্য ধরতে হয়েছে। কিন্তু দর্শক আমাকে যে গ্রহণ করেছেন, এটাই শান্তির জায়গা ছিল।
প্রশ্ন :
হঠাৎ করে নাটকের অডিশনে গিয়েছিলেন। পরে অভিনয়ে নিয়মিত হন। কখনো কি মনে হয়েছে অভিনয়টা শিখে শুরু করলে ভালো হতো?
এটা সেই সাইকেল চালানো শেখার গল্পের মতো। কেউ পড়ে শেখে, কেউ পরে শেখে। আমার কাছে মনে হয়, শুটিং সেট বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে পরিচালক, সহকর্মী, ক্যামেরাম্যান থেকে শুরু করে সবার কাছ থেকে শিখেছি। কাজ করতে গিয়ে ভুল করে করেই শিখেছি। দীর্ঘ ১০ বছর ভুল আর শেখার মধ্যেই ছিলাম। আমি শিখে যেতে চাই।
প্রশ্ন :
ক্যারিয়ার নিয়ে অপ্রাপ্তি কী?
সবকিছু পেলে তো আর কিছু চাওয়ার থাকে না। অপ্রাপ্তি অনেক আছে। অপ্রাপ্তি থাকলে সেটা জয় করার জন্য লড়াই করা যায়। কিছু অপ্রাপ্তি থাকা ভালো। শুধু এটুকু বলব, এমন কিছু করতে চাই, মানুষ যেন আমাকে মনে রাখেন।
প্রশ্ন :
আপনি মা–বাবার একমাত্র সন্তান। অভিনয়ের শুরুর দিকে পরিবার থেকে কে কী বলতেন?
পরিবারে অনেক নিয়ম ছিল, যার মধ্যে একটি হলো, রাত নয়টার মধ্যে বাসায় প্রবেশ করতে হবে। প্রথম শুটিংয়ে বাবা সেটে দিয়ে এসেছিলেন। অভিনয় শুরুর সময় মা বলতেন, ‘তুমি পড়াশোনা করো।’ বাবা বলতেন, ‘তোমার যা পছন্দ, সেটা করো।’ কিন্তু তাঁরা উভয়ই বুঝে কিছু করার কথা বলতেন। আমি দুজনের কাছ থেকে অভিনয়ে সহযোগিতা পেয়েছি।
প্রশ্ন :
মাঝখানে কাজ থেকে দূরে ছিলেন।
আমার কাছে মনে হচ্ছিল, একই রকম রোমান্টিক চরিত্রগুলো বেশি হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে একঘেয়ে কাজগুলো থেকে দূরে সরে যাই। কিছুটা বিষণ্ন ছিলাম। অপছন্দের গল্পে কাজ করিনি। নিজেকে সময় দিয়েছি। এর মধ্যে হঠাৎ লক্ষ করি, দর্শক আমার কাজ নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করছেন। তাঁরা আসলে আমার কাজ দেখতে চান।
প্রশ্ন :
ঈদের কাজ কবে থেকে শুরু করছেন?
কিছু কাজ করেছি, কিছু সামনে করব। কিন্তু একটু সময় নিয়ে এবার কাজগুলো করতে চাই। শুধু কাজের সংখ্যা বাড়াতে চাই না। ভালো কাজ করে যেতে চাই।
সাক্ষাৎকার: মনজুরুল আলম, ঢাকা