কেমন আছেন? মনে হচ্ছে শুটিংয়ে?
তাসনুভা তিশা : ভালো আছি। একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং করছি। অনেক দিন পর শুটিংয়ে ফেরা। এই জন্য আরও বেশি ভালো লাগছে।
প্রথম আলো :
মা হওয়ার পর অভিনয়ে ফেরা...
তাসনুভা তিশা : এটা আসলে অনেক চ্যালেঞ্জিং। যদিও আমি মা হয়েই কাজ শুরু করেছি। তারপরও দীর্ঘ সময় অভিনয় থেকে দূরে থাকার পর নতুন করে আবার প্রস্তুতি নিতে হয়। ওজন কমাতে হয়েছে। ফিট হতে হয়েছে। এ ছাড়া বিরতির পর দর্শক আমাকে কীভাবে নেবেন, পরিচালকেরা কাজে ডাকবেন কি না, এগুলো মাথায় রাখতে হয়েছে। কেউ না থাকলে কিন্তু শূন্যস্থান পূরণ হয়ে যায়। এই সময়ে অনেক নতুন মুখ কিন্তু চলে এসেছে।
বিরতির পর ফেরার আগে আর কী চিন্তা করেছেন?
তাসনুভা তিশা : কাজের সুযোগ পাব কি না! অনেক নতুন অভিনেত্রী চলে এসেছেন। তাঁরাও ভালো কাজ করছেন। আবার নতুন পরিচালক এসেছেন, তাঁরা আমাকে নিয়ে কিছু ভাববেন কি না। তবে আমার নিজের ওপর আস্থা ছিল। কারণ, ফেরার আগে কখনো বাইরে গেলে বা ফেসবুকে কোনো পোস্ট করলে ভক্ত, পরিচালকেরা কেউ কেউ জানতে চাইতেন, ফিরব কবে। তার মানে তাঁরা আমাকে পর্দায় দেখতে চান। ভক্তদের চাওয়াটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি তাড়া দিয়েছে ফিরতে।
প্রথম আলো :
শুটিংয়ে থাকলে আপনার সন্তানকে কে দেখেন?
তাসনুভা তিশা : আমার মা-বাবা, বোন তাঁরাই দেখেন। তাঁদের সহযোগিতা না পেলে হয়তো এত তাড়াতাড়ি ফিরতে পারতাম না। তারপরও ওকে ছাড়া খারাপ লাগে। কারণ, দীর্ঘ একটা সময় সারাক্ষণ তাকে নিয়েই সময় কেটেছে। মন খারাপ থাকে, কিন্তু কিছু করার নেই। এর আগে যখন মা হয়ে ফিরেছিলাম, তখন তো ভিডিও কলে কথা বলার সুযোগ তেমন থাকত না। এখন সেই সুযোগ আছে। খারাপ লাগলে কথা বলি, খোঁজখবর নিই। এ ছাড়া বাসায় গেলেই সব ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু বাসায় ঢুকেই লুকাতে হয়। আগে হাতমুখ ধুয়ে, পোশাক পরিবর্তন করতে হয়। কারণ, ওকে দেখে যদি কোলে না নিই, চিৎকার শুরু করে দেয়।
নতুনদের প্রতিযোগী মনে করেন?
তাসনুভা তিশা : নতুন-পুরোনো কাউকেই প্রতিযোগী মনে করি না। কখনোই কেউ কারও জায়গা নিতে পারে না। এটা স্বাভাবিক নিয়ম। প্রতিযোগিতা করে লাভ কী। যাঁর যখন যেভাবে কাজ করার, তিনি সেভাবে কাজ করবেন। আমাকে দরকার হলে ডাকবে। প্রয়োজন মনে না হলে খুঁজবে না। কাউকে প্রতিযোগী ভাবা আমার কাছে বাড়তি চাপ মনে হয়। এই বাড়তি চাপ কেন নেব।
প্রথম আলো :
কাজের জায়গায় কোনো পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন?
তাসনুভা তিশা : দুই বছরে কাজের ব্যাপারে আগের চেয়ে সবাই অনেক বেশি সচেতন। অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। ওয়েব সিরিজ নিয়ে এখন দর্শকদের আগ্রহ বহুগুণ বেড়েছে। আমি যখন প্রথম দিকে ওয়েব সিরিজে অভিনয় করি, তখন একটা অনিশ্চয়তা ছিল—ওয়েব সিরিজ দর্শকেরা কীভাবে নেবেন। পরে আমাদের ‘আগস্ট ১৪’ সফলতা পায়। তার পর থেকে তো ধারণার পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন টাকা দিয়ে মানুষ কাজগুলো দেখছেন। বিরতির সময়গুলোতে ‘শাটিকাপ’, ‘টান’, ‘ভাইরাস’, ‘কোহরা’, ‘দ্য রেলওয়ে ম্যান’সহ দেশ-বিদেশের অনেক কাজ দেখেছি। বিশেষ করে থ্রিলারগুলো বেশি দেখা হয়েছে। কাজে নতুনত্ব আসছে।
এখন কি নিয়মিত কাজ করে যেতে চান?
তাসনুভা তিশা : নিয়মিত কাজ করব। হাতে বেশ কিছু কাজ রয়েছে। তা ছাড়া অনেকেই জানেন না, আমি কাজ শুরু করেছি। তাঁরা জানলে ব্যস্ততা আরও বাড়বে। কাজ ছাড়া থাকতে ভালো লাগে না। শুটিং খুব মিস করেছি। এর আগেরবার মা হয়ে ফেরার পর অনেক ভালো ভালো কাজের সুযোগ পেয়েছি। ক্যারিয়ারে ভালো কাজ তখনই করেছি, এটা আমার এখনো মনে আছে। এবার কাজ নিয়ে কিছুটা চিন্তায় ছিলাম। পরে দেখলাম, ভালো চিত্রনাট্যগুলোই পাচ্ছি। পুরোদমে কাজ করাই আমার লক্ষ্য।