এটা আমার অভিনয়জীবনের আরেকটা অধ্যায়

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’–এ অভিনয় করছেন তাসনিয়া ফারিণ। কাজল আরেফিনের এ সিনেমাটি ছাড়াও কয়েকটি ঈদের নাটকে দেখা যাবে তাঁকে। শুটিং শুরুর কথা হয়েছে নতুন চলচ্চিত্র ‘ইনসাফ’–এর। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন

প্রথম আলো:

‘হাউ সুইট’–এর প্রিমিয়ার হলো। বড় পর্দায় আপনাকে দেখার পর অতিথিদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

তাসনিয়া ফারিণ : দর্শকের প্রতিক্রিয়া খুব ভালো ছিল। যেখানে যেখানে হাসার কথা, যেখানে যেখানে সাইলেন্স থাকার কথা—তা–ই করেছে। সবাই ভীষণ উপভোগ করেছে। সবার নানা রকম প্রতিক্রিয়ায় তা বোঝা গেছে। প্রিমিয়ার শেষে পরিচালককে সবাই এটাও বলছে, এটা কেন মুক্তি দিলেন না।

প্রথম আলো :

ওয়েব ফিল্মের ‘মায়া মায়া লাগে’ গানে অন্য রকম এক ফারিণকে দেখা গেছে। এটা কি মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির আগে মহড়া?

তাসনিয়া ফারিণ : (হাসি) এটা আসলে মূলধারার বাণিজ্যিক ছবি করা না করা সেটা পরের ব্যাপার। তবে এটা ঠিক, বাণিজ্যিক অ্যাপ্রোচে কাজ তো আগে করা হয়নি। এটা করার পরে আমার মনে হয়েছে, এখানেও মানুষ আমাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। সবার সাদরে গ্রহণ করার বিষয়টি আমার জন্য ভালো। এ রকম গ্ল্যামারাসভাবে আগে আমাকে উপস্থাপন করা হয়নি। তাই সবাই খুব প্রশংসা করেছে।

আরও পড়ুন
তাসনিয়া ফারিণ
প্রথম আলো:

এর আগে কি তাহলে কেউ আপনাকে এভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি?

তাসনিয়া ফারিণ : বিষয়টা মোটেও সেরকমও না। ব্যাটে–বলে কোনো প্রজেক্ট সেভাবে মেলেনি। আমি তো ওটিটিতে অনেক কাজ করছি, কিন্তু হাউ সুইট পুরোপুরি সিনেম্যাটিক স্বাদের ওয়েব ফিল্ম। অ্যাকশন, রম–কম মিলে দারুণ একটা কিছু। এ ধরনের কাজ তো আগে হয়নি। যেহেতু হয়নি, সেহেতু আমারও করা হয়নি। এটাকে আমার অভিনয়জীবনের আরেকটা নতুন অধ্যায় মনে করছি।

প্রথম আলো :

‘ইনসাফ’–এর কী খবর?

তাসনিয়া ফারিণ : এটা নিয়ে এখনো আমার কিছু বলার নেই। ‘ইনসাফ’ নিয়ে আমার কথা বলাও নিষেধ। সময় হলে সবাই তা জানতে পারবে।

প্রথম আলো :

ঈদে এবার কতটি নাটকে দেখা যাবে আপনাকে?

তাসনিয়া ফারিণ : দুই–তিনটা নাটক আসতে পারে; কিন্তু আমি কিছুই জানি না। যেগুলো প্রচারিত হবে সেগুলোও অনেক আগের শুটিং করা। এ বছর কোনো নতুন নাটকের শুটিং করিনি।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

শোনা যাচ্ছে, চলচ্চিত্র অভিনয় করবেন, তাই নাটকের কাজ কমিয়ে দিচ্ছেন?

তাসনিয়া ফারিণ : একটা কাজের প্রস্তুতির জন্য আসলে আমি ছোট পর্দার কাজ করিনি। এর মধ্যে শুটিং করেছি শুধু ‘হাউ সুইট’–এর। কোন কাজের জন্য আমি নাটকের শুটিং করিনি, তা খুব শিগগিরই সবাই জানতেও পারবেন। তবে আমি সময়–সুযোগ পেলে নাটকের কাজও করতে চাই।

তাসনিয়া ফারিণ

প্রথম আলো :

বড় পর্দায় কাজ করলে ছোট পর্দায় কাজ করবেন না?

তাসনিয়া ফারিণ : এখনই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছি না। বড় পর্দায় কাজ করলেও প্রথমটার রেসপন্সের পর সিদ্ধান্ত নিতে পারব। এখনই এসব নিয়ে ভাবাটা বড় মানসিক চাপ মনে হয়, তাই আপাতত এই চাপ নিতে চাই না।

প্রথম আলো :

বিয়ের আগের ঈদ আর এখনকার ঈদের মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পান?

তাসনিয়া ফারিণ : পার্থক্য বলতে আমি তো এখন লন্ডনে। গতকালই (বৃহস্পতিবার) এসেছি। সে হিসেবে বলতে পারি, এটা তো অবশ্যই ভিন্ন রকম। আমার পরিবার ঢাকায়, তাঁদের সঙ্গে ঈদ করা হচ্ছে না। এখানে আমার মামা-মামি আছেন, তাঁদের এখানেই আছি। ঈদ তাঁদের সঙ্গে হবে। এরপর স্বামীর (শেখ রেজওয়ান) সঙ্গে তাঁর বাসায় যাব।

প্রথম আলো:

ঢাকায় ফিরবেন কবে?

তাসনিয়া ফারিণ : এবার একটু দেরি হবে। মাসখানেক লেগে যাবে হয়তো।

প্রথম আলো :

ঈদের আগে যেহেতু গেলেন, স্বামীর জন্য উপহার নিয়েই গেছেন?

তাসনিয়া ফারিণ : অনেক কিছু নিয়ে আসছি। পাঞ্জাবি, শার্টসহ আরও যা যা আছে। আম্মু ইলিশ মাছ ভেজে বক্সে করে পাঠিয়েছেন। রেজওয়ানের বাসা থেকে কোপ্তা রান্না করে দিয়েছে। আচার বানিয়ে পাঠিয়েছে। মসলাপাতি যা যা আছে সবই নিয়ে আসা লাগছে। লাগেজে এমন অবস্থা, আমার কিছুই ছিল না, সবই আমার স্বামীর। লন্ডনে এখন ঠান্ডা, তাই ওর পাঞ্জাবি কেনার ক্ষেত্রে মোটা কাপড়ের কিনতে হয়েছে। তা ছাড়া এখানে কেউ কালারফুল কিছু পরে না, তাই হালকা রঙের কাপড় নিয়েছি। আমি নিজের জন্য কোনো কেনাকাটা করি না। আম্মু আমাকে গিফট করেছে, শ্বশুরবাড়ি থেকেও শাড়ি–কাপড় উপহার পেয়েছি, ওইগুলো নিয়ে এসেছি।

তাসনিয়া ফারিণ
ছবি : প্রথম আলো
প্রথম আলো:

এবার কি প্রথম দেশের বাইরে ঈদ?

তাসনিয়া ফারিণ : না, এবার দ্বিতীয়। গত বছরের কোরবানির ঈদও দেশের বাইরে করেছি। সেবার আমরা তুরস্কে গিয়েছিলাম।

প্রথম আলো :

যেহেতু দেশের বাইরে, ওটিটিতে আপনার কাজ ছাড়াও অন্যদের কাজ মুক্তি পাচ্ছে। কোনগুলো দেখার তালিকায় রেখেছেন?

তাসনিয়া ফারিণ : যেহেতু বেড়াতে এসেছি, আপাতত কিছু দেখার পরিকল্পনা নাই। আসলে বেড়াতে এলে সময়ও থাকে না। ঘোরাঘুরির ব্যস্ততা থাকে অনেক। দেশে ফেরার পর দেখার চেষ্টা করব।

আরও পড়ুন

প্রথম আলো :

চাঁদরাত নিয়ে অনেকেরই অনেক রকম স্মৃতি রয়েছে। আপনার জীবনে তেমন কোনো ঘটনা আছে?

তাসনিয়া ফারিণ : আমার সেরকমভাবে কোনো স্মৃতি নাই। তবে এটা মনে পড়ছে, ছোটবেলায় যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নানাবাড়িতে যেতাম, একসঙ্গে কাজিনরা মিলে আড্ডা, হইহুল্লোড় ও খেলাধুলা হতো; মেহেদি দিতাম। এরপর অনেক বছর ধরে চাঁদরাতে শুটিং করতে হতো। প্যাচওয়ার্কের কাজ হতো।