২০২২ সালটা আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ একটা বছর ছিল
কাজে কিছুটা বিরতির পর ‘কঞ্জুস’ দিয়ে ফিরেই আলোচনায় তানজিন তিশা। মহিদুল মহিম পরিচালিত নাটকটি প্রচারের পর থেকে ইউটিউবে ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে রয়েছে। নতুন বছরের প্রত্যাশা, পরিকল্পনা জানার জন্য তাঁকে যখন ফোন করা হয়, তখন তিনি ভারতে।
প্রশ্ন :
ভারতে কী করছেন?
আমার আম্মুর খুব পছন্দ ভারতের প্রতিটা স্টেট। আম্মুর জন্যই ভারতে আসা। নতুন বছরটা পরিবারের সবাইকে নিয়ে শুরু করেছি।
প্রশ্ন :
বছরের শুরুতেই সাড়া ফেলেছে আপনার অভিনীত ‘কঞ্জুস’।
গত বছর ঈদুল আজহার পর এটাই মনে হয় প্রথম বা দ্বিতীয় নাটক। অনেকটা বিরতি দিয়ে এবার নাটক মুক্তি পেয়েছে। সবাই বলছিল, নাটক কেন মুক্তি পাচ্ছে না, কী নিয়ে ব্যস্ত। বিরতির পর ফেরা নিয়ে একটু ভয় হচ্ছিল। ভাবছিলাম, দর্শক হয়তো আমার নাটক মিস করতে করতে আমাকে ভুলেই গেছেন। কিন্তু আমার ধারণা ভুল, দর্শক আমাকে ভালোবাসেন। আমার নাটক পছন্দ করেন। যে কারণে ‘কঞ্জুস’ নিয়ে দর্শকদের এত আগ্রহ। আমার অনেক ভালো লাগছে।
প্রশ্ন :
দর্শকেরা আপনাকে রোমান্টিক গল্পগুলোতেই বেশি দেখেন, সেখানে ‘কঞ্জুস’ নাটকে আপনার চরিত্রটি একদমই ব্যতিক্রম।
ব্যতিক্রমী ধরনের গল্প ও চরিত্র খুব একটা করতে চাই না। কারণ, ব্যতিক্রমী ধরনের কাজই যদি বেশি করি, তাহলে ব্যতিক্রম শব্দটাই আর থাকে না। এ কারণে আমি পাঁচটি কাজ করলে চেষ্টা করি দুই–তিনটা ব্যতিক্রম ধরনের গল্প বা চরিত্র করতে। এটাও সেই পরিকল্পনা করেই করা। আমার দর্শকও চান রোমান্টিক ধরনের গল্প থেকে বের হয়ে একটু চরিত্রপ্রধান কাজগুলোতে দেখতে। এখন চেষ্টা করছি ব্যতিক্রমী গল্প বা চরিত্রে নিজেকে প্রেজেন্ট করার। এখন কম কাজ করি। সেই কারণে চরিত্র নিয়ে ভাবি, তখন নিজেকে ভেঙে কাজ করা যায়।
প্রশ্ন :
নতুন বছরে পরিকল্পনা কী? কাজে কোনো পরিবর্তন আনতে চান?
নতুন বছরেই একটা পরিবর্তন আনতে চাই। আগে অনেক অনেক নাটকে অভিনয় করতাম। এই বছরে খুব বেশি নাটকে অভিনয় করব না। কম করলেও মানসম্মত কাজ উপহার দেব।
প্রশ্ন :
মধ্যে বেশ কিছু সময় কাজ থেকে দূরে রয়েছেন, এই বিরতি কেন?
গত বছর আমি খুব কম কাজ করেছি। গত বছর বাবাকে হারিয়েছি। তখন মনে হয়েছে, পরিবারকে বেশি সময় দেওয়া দরকার। শেষ দুই মাস পরিবারের পাশাপাশি নিজেকে সবচেয়ে বেশি সময় দিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছিল, ২০২২ সালটা পরিবারকে বেশি সময় দেওয়ার দরকার ছিল। গত বছরটা যেহেতু অনেক বড় বিরতি দিয়েছি, এই বছর মন দিয়ে কাজ করব। দর্শক অনেক ভালো ভালো কাজ উপহার পাবেন।
প্রশ্ন :
বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, প্রচারিত নাটকগুলো নিয়ে দর্শকদের নেতিবাচক একটা মনোভাব থাকে। সে ক্ষেত্রে ‘কঞ্জুস’-এর মন্তব্য কেমন পাচ্ছেন?
অনেক সময়ই দেখেছি, প্রচারিত নাটক নিয়ে দর্শকদের নেতিবাচক মনোভাব থাকে। দর্শকদের এই ব্যাপারগুলো আমি পজিটিভভাবে দেখি। কারণ, দর্শকদের সব ধরনের মনোভাব থাকার অধিকার আছে। তবে সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ‘কঞ্জুস’ নাটকটি। দর্শকদের মন্তব্য অনেক ভালো।
প্রশ্ন :
ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পুরানো বছর যতই খারাপ হোক না কেন, নতুন বছরটা কাটুক আমাদের সকলের অনেক অনেক কল্যাণের মধ্য দিয়ে’। কোনো কারণে কি পুরোনো বছরটা আপনার জন্য খারাপ ছিল?
হ্যাঁ, পুরোনো বছরটা আমার জন্য খারাপ ছিল। ২০২২ সালটা আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ একটা বছর ছিল। এই বছরেই আমি বাবাকে হারিয়েছি। সেই চিন্তা করেই ফেসবুকে এমনটা লিখেছিলাম। বাবা আমার জীবনে অন্যতম একটা অংশজুড়ে ছিল।
প্রশ্ন :
আপনার সহকর্মীরা অনেকেই ওটিটিতে নিয়মিত হচ্ছেন, কেউ কেউ সিনেমা করছেন, আপনার ইচ্ছা কী?
এই প্রশ্নের সম্মুখীন আমি অনেক হচ্ছি। আমার সঙ্গে কাজ করেন, এমন অনেকেই ওটিটিতে নিয়মিত কাজ করছেন, আমি কেন করছি না। দর্শকদের বলতে চাই, শুরুটা সুন্দরভাবে করতে চাই। খুব ভালো একটি ওটিটির কাজ বা ফিল্ম দিয়ে নতুন বছর শুরু করতে চাই। এখন বলতে পারছি না। কিন্তু অপেক্ষা করছি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বললেই আমার দর্শকদের সুখবরটি জানাতে পারব। ভারত থেকে ফিরেই ভালোবাসা দিবসের কিছু কাজ শুরু করব। কম কাজ হলেও বছরজুড়েই নিয়মিত থাকব।