নতুন করে শাসন ভার যারা নিয়েছে, তাদের সময় দিতে হবে

আজ রোববার মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত হবে ধারাবাহিক নাটক ক্যাম্পাস-এর শেষ পর্ব। তুহিন হোসেনের ধারাবাহিকটিতে ‘শবনম’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিয়া হক অর্ষা। এ নাটক ছাড়াও গতকাল শনিবার বিকেলে মুঠোফোনে নানা বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন

প্রথম আলো:

‘ক্যাম্পাস’ ধারাবাহিকটি শেষ হচ্ছে। অনেক দিন বিরতি দিয়ে ধারাবাহিকে ফিরেছিলেন। কেন?

নাজিয়া হক অর্ষা: একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর জীবনের গল্প নিয়ে এ ধারাবাহিক। আমি সব সময়ই ভালো গল্পের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি। মাঝে বেশ কয়েক বছর ধারাবাহিকে কাজ করিনি। কিন্তু এই গল্পটি পড়ে ভালো লাগে। পরে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, গল্পের পটভূমি ধরেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুটিং হবে। তা ছাড়া দেখলাম, সহশিল্পীরা অনেকেই এ প্রজন্মের। অনেকের সঙ্গেই কাজ হয়নি আগে। তাঁদের সঙ্গেও একটা সম্পর্ক তৈরি হওয়া দরকার। একটা ভালো টিমও পেয়েছিলাম।

নাজিয়া হক অর্ষা। খালেদ সরকার

প্রথম আলো :

মাঝে ধারাবাহিকে কাজ করেননি কেন?

নাজিয়া হক অর্ষা: প্রায় তিন বছর করিনি। প্রথম দিকে বাবুই পাখির বাসা, ভদ্রপাড়া ধারাবাহিক করেছিলাম। কাজগুলো ভালো ছিল। একটা পর্যায়ে দেখলাম, গল্পের খেই হারিয়ে যাচ্ছে। গল্প আর গল্পের জায়গায় থাকছে না। নির্মাণেও যত্ন কমে যাচ্ছে। তাড়াহুড়া করে শুটিংয়ের প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। নিজের মধ্যে একটা চাপ তৈরি হচ্ছিল। এসব দেখে ধারাবাহিকে কাজ করা বন্ধ করি।

প্রথম আলো:

এখন নিয়মিত করবেন?

নাজিয়া হক অর্ষা: আমি আগেও বলেছি, গল্প ও ভালো টিম পেলে করতেই পারি। তা ছাড়া এখন দেশের পটপরিবর্তন হয়েছে। টেলিভিশনগুলোও সেই আগের মতো ভালো ধারাবাহিক তৈরির তাগিদ অনুভব করতে পারে। কাজের পরিবেশ থাকলে ধারাবাহিকে নিয়মিত হব।

নাজিয়া হক অর্ষা
প্রথম আলো

প্রথম আলো :

নতুন সরকার গঠনের পর বিনোদন অঙ্গনও সরব হচ্ছে। কবে কাজে ফিরছেন?

নাজিয়া হক অর্ষা: কয়েক মাস ধরে দু-তিনটি অনুদানের সিনেমার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ জন্য নাটক বা ওটিটির কাজ হাতে নিইনি। আগের সরকারের আমলে এই ছবিগুলো অনুদান পাওয়া। নতুন সরকার আসার পর অনুদানের এসব ছবির গল্পে নিয়ে একটু সমস্যা হতে পারে। যদি হয়, তাহলে ছবিগুলোর শুটিং শুরু একটু দেরি হতে পারে। তবে কিশোরদের গল্প নিয়ে অনুদানের যে চিত্রনাট্যটি হাতে আছে, সেটির গল্প নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এটি দু-এক মাসের মধ্যে শুরু হতে পারে, প্রস্তুতি নিচ্ছি।

প্রথম আলো:

আপনার কাজ কম কেন?

নাজিয়া হক অর্ষা: আমি শুরু থেকেই গণহারে কাজ করি না। গল্প ও টিম ভালো হলেই করি। এর আগে যখন চরকিতে নেটওয়ার্কের বাইরে প্রচারিত হলো, পরপরই এ ধরনের অসম প্রেমের গল্পের চিত্রনাট্য হাতে আসতে লাগল। আমি এ ধরনের গল্পের কমপক্ষে ১০টি চিত্রনাট্য ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ, একই ধরনের চরিত্রে বারবার কাজ করতে চাইনি আমি।

নাজিয়া হক অর্ষা
ফেসবুক থেকে
আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পটপরিবর্তনের পর পরিস্থিতি কেমন মনে হচ্ছে?

নাজিয়া হক অর্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমার অনুভূতি মিশ্র, তবে আমি ধৈর্য ধরতে চাই। ১৫ বা ১৬ বছরের শাসনে তাদের অনেক ভুল ছিল। তা থেকে বেরিয়ে নতুন করে শাসন ভার যারা নিয়েছে, তাদের একটু সময় দিতে হবে। নতুন হিসেবে তাদেরও হয়তো ভুল হবে। নতুন সরকার আসার পর সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকসহ অনেকের ওপর হামলা হয়েছে, এটি আমি সমর্থন করি না। তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশ এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীল নয়। পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্তানে আন্দোলন চলছে। সব মিলে এই অঞ্চলটা অস্থির হয়ে আছে।