‘বকুলপুরের মানুষের ভালোবাসায় চেয়ারম্যান পদে জিতে গেছি’

‘বকুলপুর’ ধারাবাহিক নাটক ৪০০তম পর্ব পেরিয়েছে। সেই নাটকের ‘প্রিন্সেস দিবা’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পাচ্ছেন নাদিয়া আহমেদ। সম্প্রতি শেষ হয়েছে ‘পিতাপুত্র গং’ ধারাবাহিক। সেখানে চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে জুটি ছিল। নাটক, ওটিটির জন্য প্রস্তুতি ও ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে বিনোদনের মুখোমুখি হলেন নাদিয়া
নাদিয়া আহমেদ। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রশ্ন :

মনে হচ্ছে গাড়িতে, কোথায় যাচ্ছেন?

হ্যাঁ, আমি গাড়িতে। আজ শুটিং নেই। একটা কাজে বের হয়েছি।

প্রশ্ন :

কদিন আগে শেষ হলো দীর্ঘ ধারাবাহিক ‘পিতাপুত্র গং’। অন্যদিকে ৪০০তম পর্ব পেরিয়ে গেল ‘বকুলপুর’। নাটকে কি আগের মতো দর্শকের সাড়া পান?

দর্শকদের পছন্দের কারণেই ‘বকুলপুর’–এর দ্বিতীয় সিজনের শুটিং আমরা শুরু করেছি। সফলতার সঙ্গে ৪০০তম পর্ব পেরিয়ে গেল। নাটকটি ইতিমধ্যে দর্শকদের কাছে ভালোভাবে পৌঁছেছে। শুনেছি তাঁরা অপেক্ষা করেন। নাটকটি নিয়ে বিদেশে গিয়েও প্রশংসা পেয়েছি। আমার কাছে মনে হয়, দর্শকেরা ভালো গল্পের নাটক অবশ্যই দেখতে চান। একইভাবে আমি ‘পিতাপুত্র গং’ থেকে তুমুল সাড়া পেয়েছিলাম।

নাদিয়া আহমেদ। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রশ্ন :

দর্শকদের ভালোবাসা কীভাবে বুঝতে পারেন?

অনেকেই বলেন নাটক দেখি না। কিন্তু ঢাকার অনেক ক্যাফে, শপিংয়ে গিয়ে আমার ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে। ‘বকুলপুর’ নাটকে আমার চরিত্রের নাম দিবা। সেখানে অনেক বড় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছেন। এমনও হয়েছে যে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ চেক করার জন্য গাড়ি থামিয়েছেন। হঠাৎ দেখে বলেছেন, দিবা আপা ভালো আছেন? লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি শোতে গিয়েছিলাম। সেখানে আয়োজকেরা আমাকে বলছিলেন, আপনার সঙ্গে অনেকেই দেখা করতে এসেছেন। পরে তো অনেক ঘটনা।

প্রশ্ন :

যুক্তরাষ্ট্রে দেখা হওয়ার পরে কে কী বলেছিলেন?

দেখা করার পরে সবাই আমাকে বলছিলেন, ‘দিবা চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আপনি এখন চেয়ারম্যান হয়ে কী করবেন।’ এমন অনেক কিছু। নাটকে আমি চেয়ারম্যান। আবার ‘পিতাপুত্র গং’ নিয়ে শুনতে হতো রোজিনা কাকে বিয়ে করবে। নাটকে জুরান চরিত্রে ছিলেন চঞ্চল ভাই, হারান চরিত্রে আরফান আহমেদ। ভক্তরা দেখা হলেই বলতেন, ‘আমি কার সঙ্গে প্রেম করছি, কাকে বিয়ে করব? শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, কলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গায় ভক্তরা আমাকে দিবা ও ‘পিতাপুত্র গং’ নাটকের চরিত্র রোজিনা নামে ডাকেন। ভক্তদের এই ভালোবাসাগুলো অন্য রকম প্রাপ্তি।

নাদিয়া আহমেদ। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রশ্ন :

তাহলে এখন আপনি দিবা চেয়ারম্যান, দেখলাম পোস্টারে গ্রাম ছেয়ে গেছে!

হা হা হা। বকুলপুরের মানুষের ভালোবাসায় চেয়ারম্যান পদে জিতে গেছি। নির্বাচন নিয়েও অনেক মজার ঘটনা ঘটেছিল। শুটিং লোকেশনের চারপাশে আমার, সাজু ভাই, রুমী ভাইসহ অনেকের পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল। দেখে মনে হচ্ছিল সত্যিই গ্রামে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। আবার নাটকটি প্রচারণার সময় যখন ফেসবুকে ছবি পোস্ট করি, তখন অনেকেই বলছিলেন, ‘আপু, আপনি জিতবেন। আপনাকেই আমরা ভোট দেব।’

প্রশ্ন :

আপনার সমসাময়িক অনেকেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করছেন, আপনার খবর কী?

ওটিটির জন্য নাটক কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। কিছু প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু আমি ভালো গল্পের জন্য অপেক্ষা করছি। সম্প্রতি আমি এক জায়গায় বলেছিলাম, আমরা যারা অনেক বছর ধরে কাজ করি, তারা সব সময় মানসম্পন্ন গল্পে খোঁজে থাকি। কিন্তু অনেক সময় আমাদের নিয়ে ভিন্ন কথা শোনা যায়।

নাদিয়া আহমেদ। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

প্রশ্ন :

কি বলেন তারা?

কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন, আমাদেরকে অনেক বেশি পর্দায় দেখা গেছে বলে নাকি ওটিটিতে নিচ্ছে না। অথচ হওয়া উচিত ছিল আমার কোনো চরিত্রে পারফর্ম করার যোগ্যতা আছে কি না, সেটা দেখা। দরকার হলে আমি স্ক্রিন টেস্ট দেব। এটা আমি অন্যায় মনে করি না। সব দেশেই আর্টিস্টরা অডিশন দেন। সেখানে যদি না পারি, তখন বাদ দিতে পারে। কিন্তু এই যে বলা, আপনাদের অনেক বেশি পর্দায় দেখা গেছে বলে ওটিটিতে কাস্ট করা যাচ্ছে না। এগুলো শুনলে খারাপ লাগে।

প্রশ্ন :

এসব পেশাগত জায়গায় মানসিক ভাবে কতটা প্রভাব ফেলে?

এগুলো একদমই প্রফেশনালিজমের মধ্যে পড়ে না। আমি এতটুকু বলব, অভিনয়ের সেই যোগ্যতা আমার আছে। আমাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এখন ঘুরেফিরে একই শিল্পীরা বারবার ওটিটিতে কাজ করছেন। অনেকেই ক্যালিভার নিয়ে বসে আছেন। আমি কোনো তুলনা করছি না। আমাদের মোশাররফ ভাই, চঞ্চল ভাই, দিনার ভাইসহ অনেকে নিয়মিত কাজ করছেন। ভালো করছেন। তাঁদের সুযোগ দেওয়ার কারণেই এখন নিয়মিত কাজ করছেন।