সেলিম মার্চেন্টের সঙ্গে গাওয়া ‘বৃষ্টিবিলাস’ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
সিঁথি সাহা : ভালোবাসা দিবসে ‘বৃষ্টিবিলাস’ গানটি প্রকাশ পেয়েছে। গানটি নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশ থেকেই ভালো সাড়া পেয়েছি। সেলিমের কণ্ঠে বাংলা গান শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। ইউটিউবের মন্তব্যের ঘরে গেলেই দেখবেন, সবাই এ নিয়ে কথা বলছেন। মন্তব্যগুলো সেলিমও দেখেছেন, আশা করি সামনে আমাদের আরও কিছু কাজ আসবে।
প্রথম আলো :
তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে?
সিঁথি সাহা : ২০১৭ সালে সেলিম মার্চেন্টের সঙ্গে আমার পরিচয়। মুম্বাইয়ে বেশ কয়েকবার আমাদের দেখা হয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে যখন মুম্বাইয়ে গেলাম, তাঁর স্টুডিওতে আমাদের অনেক আড্ডা হয়। ‘বৃষ্টিবিলাস’ কিন্তু আমি একাই গেয়েছিলাম, তাঁকে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তো সেদিনের আড্ডায় সেলিমকে এ গান শোনাই, ও তখন খুব পছন্দ করে। হঠাৎ আমারই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে, তুমি গাইবে নাকি? তাহলে আমরা ডুয়েট করে ফেলতে পারি। একবার বলাতেই ও রাজি হয়ে যায়। ও খুব যত্ন করে ভয়েসটা দিয়েছে এবং সবকিছু নিয়ে খুব সাপোর্ট করেছে।
শাফকাত আমানত আলী, মাস্টার ডিসহ অন্যদের সঙ্গে দ্বৈত গানগুলো কবে আসবে
সিঁথি সাহা : ও আচ্ছা, বলতে ভুলে গেছি, সেলিম মার্চেন্টের সঙ্গে আমার পরিচয় কিন্তু শাফকাত আমানত আলীর মাধ্যমেই। তাঁরা দুজন খুব ভালো বন্ধু। শাফকাতের সঙ্গে আমার প্রথম গান আসে ২০১৭ সালে। ‘রাতজাগা পাখি’ শিরোনামের বাংলা গানটি নিয়ে বেশ প্রশংসা শুনেছি। সম্প্রতি ওর সঙ্গে আরও কয়েকটি গান করেছি, এর মধ্যে হিন্দি গানও আছে, সেগুলো প্রকাশের অপেক্ষায়। খুব শিগগির এগুলো প্রকাশ পাবে। মাস্টার ডির সঙ্গেও প্রজেক্ট রেডি আছে। এ ছাড়া অনুপ জালোটার সঙ্গে একটি গজল গেয়েছি। এটি ওনার প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রকাশ পাবে।
প্রথম আলো :
শুনেছি খুব অল্প বয়সে রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে প্রথম অ্যালবাম করেছিলেন
সিঁথি সাহা : ছোট থেকেই কুষ্টিয়ার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পেতাম। আমার বাবা অনেক গান শুনতেন, তো ওনার মনে হলো, রেকর্ড করলে আমার গান কেমন শোনাবে। ২০০১ সালের দিকের কথা। বাবার উদ্যোগেই আমার প্রথম অ্যালবাম কিছু বলব বলে প্রকাশ পায়। রবীন্দ্রনাথের ১২টি গানে সাজানো ছিল এই অ্যালবাম। তখন মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সে সময় ১০০–এর ওপর রবীন্দ্রসংগীত গাইতে পারতাম। পরে ২০১০ সালের দিকে কিং খান সিনেমায় আমার আর আনানের গাওয়া ‘আমার সব রাত্রি মধু পূর্ণিমা’ দিয়ে প্লেব্যাক ক্যারিয়ার শুরু।
প্রথম আলো :
শাকিব খানের সিনেমা দিয়ে প্লেব্যাক শুরু, এরপর অনিয়মিত কেন
সিঁথি সাহা : এরপর হাবিব ভাইয়ের কম্পোজিশনে প্রজাপতি সিনেমায় ‘টাকা’ গাইলাম। এরপর কিন্তু আমার অনেক গান এসেছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত অনেকগুলো সিনেমায় গেয়েছি। তাই এখানে অনিয়মিতর কোনো ব্যাপার নেই। তবে হ্যাঁ, আমার গানগুলো নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। বলা যায়, আমি সিন্ডিকেটের শিকার হয়েছি।
সিন্ডিকেট বলতে...
সিঁথি সাহা : আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে প্লেব্যাক পুরোটাই সিন্ডিকেটের হাতে। এই সিন্ডিকেটের জন্যই এ জায়গায় জুতসই জায়গা করতে পারিনি। গত বছর অনেকগুলো প্লেব্যাক করেছি, কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে কোনো গানই লাইমলাইটে আসেনি। কয়েকজনের কাছে এটা জিম্মি।
প্রথম আলো :
ক্যানসারের জন্য বিরতি নিয়েছিলেন, এখন কেমন আছেন?
সিঁথি সাহা : ২০২২ সালের শেষ থেকে ২০২৩ সাল, আমার খুব বেশি গান এ সময়ে আসেনি। এ সময়টাতে বিরতিতেই ছিলাম বলা যায়। তখন বড়জোর এক-দুইটা নাটকের গান এসেছে। এ সময়ে আমার অসুস্থতা, প্রেগন্যান্সি, সন্তান জন্ম দেওয়া—এসবের জন্য কাজ থেকে দূরে থাকা হয়েছে। এখন বেশ ভালো আছি।
আর মাতৃত্ব?
সিঁথি সাহা : বলা যায় আমার পুরো সময়ই কাটছে ওকে নিয়ে। প্রতিদিন ওর নতুন নতুন কাজকর্ম দেখি আর মজা পাই। জীবনটা বদলে গেছে।