২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

শাকিব খানের ভক্তরাই আমাকে বেশি অনুসরণ করেছেন, করছেন: ইধিকা পাল

ইধিকা পালছবি : ইনস্টাগ্রাম
প্রথম সিনেমাতেই ক্যারিয়ারের গতিপথ বদলে গেছে কলকাতার অভিনেত্রী ইধিকা পালের। ছিলেন টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী, এখন চিত্রনায়িকা। ফেসবুক আগে যাঁকে ১২ হাজার মানুষ অনুসরণ করতেন, সিনেমা মুক্তির পর থেকে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখে। বাংলাদেশে কাজের অভিজ্ঞতাসহ নানা প্রসঙ্গে গত রোববার দুপুরে হোয়াটসঅ্যাপে ইধিকা পাল–এর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন।

প্রশ্ন :

কাউকে না জানিয়ে বাংলাদেশে এসে নিজের সিনেমা দেখলেন। প্রথম বড় পর্দায় নিজেকে দেখার অনুভূতি কেমন ছিল?

ছবিটি মুক্তির সময় আসতে পারিনি। ২১ জুলাই আমি আমার মা, এক বান্ধবী মিলে বাংলাদেশে এসেছিলাম। পরের দিন বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে সন্ধ্যার শোতে দর্শকের সঙ্গে বসে সিনেমাটি দেখেছি। শো হাউসফুল ছিল। আমার উপস্থিতি দর্শকেরা কেউই জানতেন না। ফলে ছবিটি চলাকালীন বিভিন্ন দৃশ্যের সময় সঠিক রিঅ্যাকশনটা পাচ্ছিলাম। গোপনে দর্শকের সঙ্গে বসে নিজেকে বড় পর্দায় দেখার অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তবে আরও ভালো লাগত, শাকিব ভাইসহ একসঙ্গে সিনেমাটি দেখার সুযোগ হলে।

প্রশ্ন :

আপনার কোন কোন দৃশ্য দর্শকেরা বেশি উপভোগ করেছেন?

সিনেমায় আমি ভুলভাল ইংরেজিতে কথা বলি। এই দৃশ্যগুলো দেখে হলের মধ্যে সবাই মজা পাচ্ছিল, হাসছিল। সংলাপগুলো ছোটরাও বেশ উপভোগ করছিল। এ ছাড়া আমার কিছু ইমোশনাল দৃশ্য ছিল, গান খুব ভালোভাবেই নিয়েছেন দর্শক। আমার দৃশ্যের সময় চারপাশের দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় এক অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করছিল। তবে শাকিব ভাইয়ের প্রায় প্রতিটি দৃশ্যেই দর্শকের উন্মাদনা বেশি ছিল।

‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় শাকিব খান ও ইধিকা পাল
ছবি : পরিচালকের সৌজন্য

প্রশ্ন :

এই ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে আপনার নাম ঘোষণার পর বিষয়টি তখন অনেকেই ভালোভাবে নেননি...

আমিও সেই সময় বিষয়টি শুনেছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। অনেকে বলেছিলেন, ‘কলকাতার সিরিয়ালের নায়িকা শাকিবের বিপরীতে! এটা ভালো হলো না।’ কিন্তু ছবিটি মুক্তির পর, শাকিব–ভক্তরাসহ সাধারণ দর্শকও আমার প্রশংসা করছেন। আমাকে নিয়ে তাঁদের ধারণা পাল্টে গেছে। যাঁরা সেই সময় নেতিবাচক বলেছিলেন, তাঁরাই এখন আমাকে আপন করে নিচ্ছেন, কোলে তুলে নিচ্ছেন। তাঁরা এ–ও বলছেন, ইধিকাকে আরও ছবিতে চাই।

ইধিকা পাল
ছবি : ইনস্টাগ্রাম

প্রশ্ন :

ছবিটি মুক্তির আগের ইধিকা আর এখনকার ইধিকার মধ্যে কোনো পার্থক্য টের পাচ্ছেন?

হ্যাঁ, পাচ্ছি। বাংলাদেশে আমাকে ওভাবে কেউ চিনত না, এখন অনেকেই চিনেছেন। ফেসবুকে আগে যে পরিমাণ অনুসারীদের সাড়া পেতাম, এখন তো অন্য রকমের সাড়া। ‘প্রিয়তমা’ বা নিজের কোনো ছবি পোস্ট করলে পাগল ভক্তরা হুড়মুড় করে সাড়া দিচ্ছেন। কলকাতাতেও আমার পরিচিতি খানিকটা বেড়েছে। বাড়ির বাইরে কোথাও গেলে সেটা বুঝতে পারছি। কলকাতায়ও সবার ‘প্রিয়তমা’ হয়ে গেছি আমি, হা হা হা...। কয়েক দিন আগে শপিং মলে গিয়েছিলাম, পেছন থেকে একজন ভক্ত আমাকে ‘প্রিয়তমা’ বলে ডাকছিলেন। সে আমার ছোট পর্দায় কাজ দেখেছেন। কলকাতায় ‘প্রিয়তমা’ মুক্তির খবর জানতে চাইলেন।

‘ও প্রিয়তমা’ গানের দৃশ্যে শাকিব খান ও ইধিকা পাল
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

ছবিটি মুক্তির আগে ফেসবুকে আপনার অনুসারীর সংখ্যা ছিল ১১ থেকে ১২ হাজার। মুক্তির পর রাতারাতি অনুসারীর সংখ্যা দুই লাখের কাছাকাছি। আগে আপনার ছবিতে লাইক পড়ত পাঁচ-সাত শ, এখন ৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার পর্যন্ত। কেমন লাগে?

এটি আমার জন্য আশীর্বাদ মনে করি। ইনস্টাগ্রামে আমার বেশ ফোলোয়ার ছিল কিন্তু ফেসবুকে কম ছিল। আমি আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওভাবে অভ্যস্ত ছিলাম না। কিন্তু এ ছবিটি মুক্তির পর ধারণা পাল্টে গেছে। দেখলাম, ভক্তদের কী রকমের ভালোবাসা! রাতারাতি অনুসারী দুই লাখের কাছাকাছি। ভক্তরা লাইক, মন্তব্য, শেয়ারের মাধ্যমে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছেন। আমি মনে করি, শাকিব ভাই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক। শাকিব খানের ভক্তরাই আমাকে বেশি অনুসরণ করেছেন, করছেন। দর্শকের কাছে এই ভালোবাসা সব সময়ই পেতে চাইব। সবাই আরও বেশি বেশি আমাকে অনুসরণ করবেন, ভালোবাসায় রাখবেন।

ইধিকা পাল
ছবি : ইনস্টাগ্রাম

প্রশ্ন :

কলকাতায় ছবিটি নিয়ে আলোচনা কেমন?

এখানকার মিডিয়াপাড়ায় বেশ আলোচনা হচ্ছে। কলকাতায় ছবিটি এখনো মুক্তি পায়নি। তবে বাংলাদেশে ছবিটির ঝড়ের আঁচ এখানেও পড়েছে। এখানে অনেকেই ছবির কিছু কিছু ক্লিপ, গান ফেসবুকে, ইউটিউবে দেখেছেন। বাংলাদেশে ছবিটি সুপারহিট হওয়ার খবরও পেয়েছেন তাঁরা। এ কারণে আমাকে তাঁরা অ্যাপ্রিশিয়েট করছেন, শুভকামনা জানিয়েছেন। কলকাতায় দর্শকেরা মুখিয়ে আছেন ছবিটি দেখার জন্য।

ইধিকা পাল
ছবি : ইনস্টাগ্রাম

প্রশ্ন :

মুক্তির আগে কি মনে হয়েছিল ‘প্রিয়তমা’ এত সাড়া ফেলবে?

এত ব্যাপক সাড়া পাব ভাবিনি। বাংলাদেশের নম্বর ওয়ান তারকা শাকিবের বিপরীত অভিনয় করছি, একটা সাড়া তো থাকবেই, এমন ভাবনাই ছিল। কিন্তু ব্লকবাস্টার হবে ভাবিনি। দর্শক আমাকেও এত ভালোবাসা দেবেন, অপ্রত্যাশিত ছিল।

প্রশ্ন :

শাকিব খানের সঙ্গে প্রথম দিনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাজটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। ছবিতে চূড়ান্ত হওয়া, ছবির গল্প, চরিত্রের কথা—সবই ফোনের মাধ্যমে। বাংলাদেশে এসে সরাসরি শুটিংয়ে চলে গেছি। শাকিব ভাইসহ ছবির পুরো টিমের সঙ্গেই শুটিংয়ে প্রথম দেখা, প্রথম পরিচয়। তবে পর্দার শাকিবের সঙ্গে পরিচয় ছিল আগেই। তাঁর অভিনীত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শিকারি’ ও ‘চালবাজ’ আগে দেখেছিলাম, এতটুকুই। শুটিংয়ে গিয়ে প্রথম দিন সবার সঙ্গে সামনাসামনি কথা হয়, পরিচয় হয়। আমি শাকিব খানের কাছে একেবারই অপরিচিত ছিলাম। তাই তাঁর মতো এত বড়মাপের তারকার সঙ্গে প্রথম দিন শুটিংয়ে ভীষণ নার্ভাস ছিলাম, ভয়েও ছিলাম। কিন্তু শাকিব খানের আন্তরিকতায় সেই নার্ভাসনেস, ভয় শুটিংয়ের প্রথম দৃশ্য ধারণ থেকেই উড়ে গিয়েছিল। তাঁর অভিনয়, তাঁর সহযোগিতায় মুগ্ধ হয়েছি আমি।

‘প্রিয়তমা’ ছবির দৃশ্যে শাকিব খানের সঙ্গে ইধিকা পাল
ছবি : পরিচালকের সৌজন্যে

প্রশ্ন :

আবারও শাকিবের বিপরীতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?

গল্পের প্রয়োজনে তাঁর বিপরীতে আমাকে দরকার হলে কেন করব না? অবশ্যই করব। তা ছাড়া শাকিব খান তো আমার আশীর্বাদ। এ ছবিটি দেখে যাঁরা আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন, যাঁরা আমাকে প্রশংসা করেছেন, তাঁদের অনেকেই আমাদের জুটিকেও আবারও দেখতে চান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্যের ঘরে ভক্ত-দর্শকের অনেকেরই এই চাওয়াটা দেখি।

ইধিকা পাল
ছবি : ইনস্টাগ্রাম