মেয়ে হয়ে গান করছি, এটা এলাকার অনেকেই ভালোভাবে দেখেনি
‘নয়া দামান’ গান দিয়ে রাতারাতি শ্রোতাদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন সিলেটের মেয়ে তসিবা বেগম। এখন নিয়মিত গান ও স্টেজ শো করছেন। সম্প্রতি তাঁর ‘কালাচান’, ‘কালা ভ্রমরা’ ও ইত্যাদিতে গাওয়া ‘পালঙ্ক সাজাইলাম গো’ গানগুলো প্রশংসা পেয়েছে। গান ও অন্যান্য ব্যস্ততা নিয়ে গতকাল শুক্রবার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন
প্রশ্ন :
কেমন আছেন?
ভালো আছি, কিন্তু সব মিলিয়ে অনেক ব্যস্ত সময় যাচ্ছে।
প্রশ্ন :
কী নিয়ে এত ব্যস্ততা?
গান নিয়ে তো আছেই। হাতে ১৫টির মতো গান রয়েছে। এ ছাড়া এক মাসের জন্য দেশের বাইরে গান করতে যাচ্ছি। সে কারণে আজ সিলেট যাব। পরে সেখান থেকে যুক্তরাজ্য। এক মাস সেখানে থাকব।
প্রশ্ন :
এবার কি প্রথম যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন?
হুম। আমাদের এলাকার প্রতি ঘর থেকে দু-একজন সিলেটে থাকেই। আমার চাচা, ফুফু, মামা, খালা, বোনসহ অনেক আত্মীয় থাকেন। আমার ৮০ ভাগ আত্মীয়স্বজন লন্ডন থাকেন। বলা যায়, শুধু আমার মা-বাবাই দেশে। তবে আমি প্রথমবার যুক্তরাজ্যে যাচ্ছি। পরিবারের সবার সঙ্গে দেখা করব। দেশের মতোই ভালো একটা সময় কাটবে। সেখানে সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
প্রশ্ন :
আপনারও কি যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা আছে?
না। আমার মা-বাবার ইচ্ছা কানাডা যাওয়া। ইনশা আল্লাহ, দু-এক বছরের মধ্যেই চেষ্টা করব। আমারও কানাডা পছন্দ। তবে বিদেশে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকব। তা না হলে তো সিলেট শহর খালি হয়ে যাবে (হাসি)।
প্রশ্ন :
আপনার জনপ্রিয়তার শুরু ‘নয়া দামান’ গান দিয়ে...
আমাকে সবাই ‘নয়া দামান’ দিয়েই চেনে। এর মধ্যে গানটির ১২ সিকুয়েল করেছি। সবাই বলে ‘নয়া দামান’-এর মতো গান করতে। আমি সব রকম গানের চেষ্টা করছি। ‘মানুষ বড় স্বার্থপর’, ‘সিলেটি পুরি’, ‘ভাইসাব’ গানগুলো এই চেষ্টার ফল। ‘পালঙ্ক সাজাইলাম গো’ গানটিও শ্রোতারা অনেক পছন্দ করেছেন। আমি নিজেকে এক জায়গায় আটকে রাখতে চাই না।
প্রশ্ন :
‘আজও প্রতি রাত জেগে থাকি তোমার আশায়’ গায়ক ইমন খানের সঙ্গে গান করলেন।
ইমন ভাই অনেক ভালো মানুষ, ভালো গান করেন। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর গান শুনেছি। গত সপ্তাহে আমরা প্রথম একসঙ্গে গান করলাম। দুজন মিউজিক ভিডিওতে অংশ নিয়েছিলাম। আশা করছি, গানটি দর্শক পছন্দ করবেন।
প্রশ্ন :
একসময় গান গাওয়ার সুযোগের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। এখনকার সংগ্রামটা কেমন?
আমি অনেক জায়গায় গান করার জন্য ঘুরেছি। তেমন কোথাও সুযোগ পাইনি। তখন অনেক মন খারাপ হয়েছে। সেসব ঘটনা আমাকে প্রেরণা দিয়েছে। এখন আমার সংগ্রাম ‘নয়া দামান’কে ছাড়িয়ে যাবে, এমন গান করা। আমি এলএলবিতে অনার্সে পড়ছি। পড়াশোনা, গান একসঙ্গে করে যাব।
প্রশ্ন :
গান করার জন্য আশপাশ থেকে উৎসাহ পেয়েছেন?
একটা মেয়ে হয়ে গান করছি, এটা এলাকার অনেকেই ভালোভাবে দেখেনি। কিন্তু মা-বাবা সব সময় পাশে থেকেছেন। মানুষের অনেক কথা শুনেছি, কিন্তু পরিবার আমাকে মাথার ওপরে তুলে রেখেছে। যে কারণে পেছনের কারও কথা শুনিনি। তাদের কথার গুরুত্ব দিলে আজ আমার গান করা হতো না।
প্রশ্ন :
সফল হওয়ার পর সেই মানুষগুলো এখন কী বলেন?
তাঁরা আমার সফলতার কথা শুনে হয়তো মন খারাপ করেন। মনে মনে নিশ্চয়ই বাহবা দেন। কারণ, আমি তাঁদের কোনো ক্ষতি করিনি। সব সময় গায়িকা হিসেবে মানুষের কাছে সম্মান চেয়েছি। এখন শ্রোতারা আমাকে সম্মান করেন, ভালোবাসেন, আমার কাছে নতুন গান চান। আমি নিয়মিত স্টেজ শো করি। কানাডা থেকে গান করে এলাম। দেশে করছি, যুক্তরাজ্য যাব। সেখানেও আশা করি ভক্তদের ভালোবাসা পাব। এগুলোই আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। ভালো-মন্দ মানুষ সব জায়গায় আছে। সেসবকে গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই। এর মধ্য থেকে নিজের মতো করে চলতে শিখেছি।