প্রথম আলো :
ঈদ মোবারক, কেমন কাটছে ঈদ?
জেফার রহমান: ঈদ মোবারক। এবারের ঈদটা একটু বিশেষ। গায়িকা পরিচয়ের বাইরে দর্শক আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে দেখছেন। সব মিলিয়ে সময়গুলো ভালো গিয়েছি। তবে আজ থেকে আমার ঈদ শেষ। আজই পাবনা যাচ্ছি পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে শো করতে। আগামীকাল এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে গান করব। প্রথমবার পাবনা যাচ্ছি। ঈদের তৃতীয় দিন থেকেই আমাদের ঈদ শেষ হয়ে গেল। এখন ব্যস্ত হওয়ার পালা।
প্রথম আলো :
চাঁদরাত থেকে গায়িকা থেকে নায়িকা....
জেফার রহমান: হা হা হা। তা–ই তো সবাই বলছে। আসলে আমি অনেক আগে থেকে অভিনয় প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু কখনোই রাজি হইনি। ভালোভাবেই সময় নিয়ে অভিনয় করতে চেয়েছি। ‘মনোগামী’তে অভিনয় করে চার দিন ধরে অভিনেত্রী হিসেবে দারুণ অভিজ্ঞতা হচ্ছে।
প্রথম আলো :
ওয়েব ফিল্ম ‘মনোগামী’ নিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
জেফার রহমান: বুঝতে পারছি, চাদরাত থেকেই অনেক দর্শক মনোগামী দেখছেন। তাঁরা রিভিউ দিচ্ছেন। আলোচনা–সমালোচনা থাকবেই। বেশির ভাগ অ্যাপ্রিশিয়েট করছে। ফিল্মটি আমি প্রিমিয়ারে দেখেছি। রিলিজের পরে বন্ধুদের সঙ্গে দেখেছি। সবাই প্রশংসা করেছে। এখানে বাস্তবতার আলাদা একটি প্রেক্ষাপটকে দেখানো হয়েছে। বিষয়টিকে সুন্দরভাবে সমন্বয় করেছেন পরিচালক ফারুকী ভাই।
প্রথম আলো :
গল্পের মতো বাস্তব এই বিষয়বস্তু নিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে কিছু কি শুনেছেন?
জেফার রহমান: অনেক ধরনের কনটেন্ট তৈরি হয়। সেখানে এমন কনটেন্টে অভিনয় করাটা চ্যালেঞ্জিং। টপিকটা যেহেতু ট্যাবু, তারপরও কনটেন্ট নিয়ে দর্শকেরা প্রশংসা করছেন। এটা কিন্তু বাস্তবতার বাইরে কিছু না। ‘এমন টপিক কেন’—এমন কিছু দর্শক বা সমালোচক কারও কাছ থেকে শুনিনি। ‘মনোগামী’ নিয়ে খারাপ কিছু এখনো আমি দেখিনি। আমাকে অনেকেই ট্যাগ করেছেন, সেগুলো দেখেও খারাপ কিছু পাইনি। এটা সত্য, টপিকটা অনেক সেনসিটিভ, সেটা ফারুকী ভাই ঠিকমতো হ্যান্ডেল করেছেন।
প্রথম আলো :
তাহলে তো আপনার অভিনয় দিয়ে ফেরাটা সার্থক?
জেফার রহমান: আমি নাটক, সিনেমায় অভিনয়ের অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। সব সময়ই আমি ‘না’ করে আসছি। আমার কাছে মিউজিকই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পরে ফারুকী ভাই যখন অভিনয় প্রস্তাব দেন, তখন আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি। তিনি ভালো একজন পরিচালক। তাঁর অবশ্যই ভালো কোনো পরিকল্পনা ছিল। যে কারণে ফিল্মটিতে যুক্ত হওয়া। প্রচারের পর দর্শকদের প্রতিক্রিয়ায় অভিনয় নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। ভালো চিত্রনাট্য, পরিচালক, ভালো টিম পেলে গানের পাশাপাশি অভিনয় করব।
প্রথম আলো :
ওয়েব ফিল্মটির চিত্রনাট্য হাতে পাওয়ার পর গল্পটি কীভাবে দর্শক নেবেন, এ নিয়ে কোনো ভাবনা কাজ করছিল?
জেফার রহমান: খুব একটা চিন্তা হয়নি। কারণ, আমি ফারুকী ভাইয়ের হাতে সব ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমি তো অভিনেত্রী নই, গান করি। সেখানে ফারুকীর ভাইয়ের আইডিয়া ছিল আমাকে কাস্ট করার। গল্প শোনার পরে আমার মনে হয়েছিল, এখানে চরিত্রের অনেক লেয়ার আছে। এটা কমপ্লিটলি পজিটিভ কোনো চরিত্র নয়, তবে লেয়ারগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছিল। দর্শক কী বলবে, সেটা ভাবিনি। কাজেই মনোযোগ ছিল।
প্রথম আলো :
ওয়েবটিতে চঞ্চল চৌধুরী ও আপনাকে বেশ কিছু দৃশ্যে দেখা যায়। দর্শকেরা বলছেন, কমেডি আকারে তুলে ধরায় দৃশ্যগুলো আনন্দ দিয়েছে। এই দৃশ্যগুলো ধারণের সময়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
জেফার রহমান: ফারুকী ভাই ও চঞ্চল ভাই লিজেন্ডারি দুজন শিল্পী। তাঁদের সঙ্গে অভিনয় করে আমি অনেক বেশি সাপোর্ট পেয়েছি। এগুলো আমার জন্য অনেক হেল্পফুল ছিল। আসলে সবাই এনগেজ ছিল প্রডাকশনটির সঙ্গে। এ ছাড়া প্রথমবার অভিনয় করছিলাম, কিছুটা ভয়, কিছুটা মজা–অভিজ্ঞতা, দুটোই ছিল। চঞ্চল ভাইয়ের কান্না করাসহ বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিংয়ের সময়ে আমি চরিত্র থেকে বের হয়ে হাসা শুরু করে দিয়েছিলাম।
প্রথম আলো :
ছবির গল্পের বিষয়টাকে আপনার জায়গা থেকে কীভাবে দেখেন?
জেফার রহমান: ‘মনোগামী’তে যে পরকীয়া মতো বিষয় দেখানো হয়েছে, এটা কিন্তু শুধু আমাদের সমাজে নয়, বিশ্বের সব দেশেই পরকীয়া একজিস্ট করে। হয়তো মানুষ এটা নিয়ে কথা বলে না। এটা ট্যাবু টপিক। ‘মনোগামী’তে একটা পার্থক্য দেখানো হয়েছে, বার্তা রয়েছে। সচরাচর যেসব হয়, সেগুলোই কিন্তু গল্পে দেখানো হয়েছে। এখানে গল্পের সঙ্গে কিন্তু অনেকেই রিলেট করতে পেরেছেন। একেকজন একেকটা চরিত্রের সঙ্গে রিলেট করছে। এটা আমি নিজেও শুনেছি। অনেক দর্শক বলছেন, ‘মনোগামী’র সঙ্গে নিজেদের রিলেট করতে পেরেছেন।
প্রথম আলো :
বর্তমান ব্যস্ততা কী?
জেফার রহমান: এখন বেশ কিছু কনসার্টে গান করতে হবে। বৈশাখ দিয়ে শুরু হচ্ছে। বেশ কিছু গান সামনে আসবে। এখনো অভিনয় নিয়ে আপাতত কারও সঙ্গে চূড়ান্ত কথা হয়নি। সময় হলে সব জানাব।