৬৭টি গানের ভিউ কোটি পার হয়েছে

গানের ক্যারিয়ারে ১৬ বছর পার করছেন সংগীতশিল্পী ও পরিচালক ইমরান মাহমুদুল। অডিও ও চলচ্চিত্রের মিলিয়ে মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর বেশ কয়েকটি গান। নতুন গান, ক্যারিয়ারসহ নানা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন শফিক আল মামুন

প্রথম আলো:

আপনার নতুন গান ‘শুধু তোমাকে ছাড়া’তে নতুনত্ব কী আছে?

ইমরান মাহমুদুল : আমি যে ধরনের রোমান্টিক গান করি, অনেকটা সে ধরনেরই এটা। তবে ভিডিওতে ভিন্নতা আছে। বড় ক্যানভাসে সিনেমার গানের আদলে শুট করা হচ্ছে। কিছু অংশের শুটিং দেশের বাইরে হচ্ছে। এটি পরিচালনা করছেন সৈকত রেজা। আমার গানের সুর, গায়কিতে একটি ধাঁচ আছে। তার সঙ্গে আমার দর্শক-শ্রোতারা পরিচিত। সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে ভিডিওতে একটু ভিন্নতা রাখার চেষ্টা করেছি যাতে দর্শক-শ্রোতার কাছে একঘেয়ে না লাগে।

ইমরান মাহমুদুল। প্রথম আলো

প্রথম আলো :

২০০৮ থেকে ২০২৪, আপনার ১৬ বছরের গানের জীবনকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

ইমরান মাহমুদুল : ২০০৮ সালে আমার গানের জীবন শুরু হলেও মূলত ২০১২ সালে পূজার সঙ্গে দ্বৈত গান ‘দূরে দূরে’ দিয়ে আলোচনায় আসি। পরের বছর ‘মানে না মন’, তার পরের বছর ‘জনম জনম’সহ অনেক গানই আলোচিত হয়েছে। ১২ বছর ধরে প্রতি বছরই আমার কোনো কোনো গান দর্শকের পছন্দের তালিকায় ছিল। এটি আমার জন্য আশীর্বাদ। এটা আমাকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার সাহস জুগিয়েছে। একজন শিল্পীর উত্থান-পতন থাকে; কিন্তু দর্শকের ভালোবাসায় আমি সমান গতিতে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছি। চলতি বছরেও ‘রঙে রঙে রঙিন হব’, ‘ভালোবাসি বলে যাও’ ও ‘মেঘের নৌকা’ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে।

প্রথম আলো:

আপনার অনেক গানই তো রেকর্ড ভিউ হয়েছে?

ইমরান মাহমুদুল। ছবি: ফেসবুক থেকে

ইমরান মাহমুদুল : ‘দিল দিল’, ‘তুই কি আমার হবি রে’, ‘ওহে শ্যাম’—এ তিনটি গান ১০০ মিলিয়নের ওপর ভিউ হয়েছে। দ্বৈতকণ্ঠের গান তিনটিতে দিলশাদ নাহার কনাও আছেন। এ ছাড়া আমার একক অডিও গান ‘বলতে বলতে চলতে চলতে’র ভিউ ১০০ মিলিয়নের ওপরে। আমার জানামতে, কোনো একক শিল্পীর এই রেকর্ড নেই। এ ছাড়াও ১০০ মিলিয়ন ছুঁই ছু্ঁই করছে আমার আরও চারটি গান—‘দূরে দূরে’, ‘মন খারাপের দেশে’, ‘এমন একটি তুমি চাই’ ও ‘জনম জনম’। এর বাইরেও আমার ৬৭টি গানের ভিউ কোটি পার হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, অন্য শিল্পীর ঝুলিতে এমন রেকর্ড নেই।

প্রথম আলো :

এই অর্জনকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

ইমরান মাহমুদুল : আমি কখনোই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় গা ভাসাইনি। একটি গান দর্শক পছন্দ করেছেন, পরের গানটি আরও মনোযোগ ও আন্তরিকতা দিয়ে করার চেষ্টা করেছি। নিজের সঙ্গে নিজের প্রতিযোগিতা করতে চেয়েছি। নিজেকে সব সময়ই আপডেট রাখার চেষ্টা করেছি। দর্শক আমার সঙ্গে ছিলেন। তাঁদের ভালো লাগা, ভালোবাসা, তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে চেষ্টা করে গেছি। তাঁরা আমার গান পছন্দ করেছেন। তাদেরই মুখে মুখে দেশ-বিদেশে ছড়িয়েছে আমার গান। আমার চেষ্টা আর দর্শক-শ্রোতার ভালোবাসায় আমি আজ এই জায়গায়।

প্রথম আলো:

অনেক দিন ধরেই অডিও গানের চেয়ে সিনেমার গান আলোচিত হচ্ছে বেশি...

ইমরান মাহমুদুল : একসময় অডিওর যে জোয়ার ছিল, সেটি এখন আর নেই। মাঝেমধ্যে এক-দুটি গান আলোচনায় আসে। তবে আগের মতো ধারাবাহিকভাবে না। আসলে অনেক দিন ধরেই তো অডিও গানের অবস্থা ভালো না। অন্যদিকে প্রতিবছরই কোনো না কোনো সিনেমার গান আলোচিত হচ্ছে, জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অবশ্য এর কারণও আছে। সিনেমার গান প্রচারে এগিয়ে। সিনেমার গানে নায়ক-নায়িকা থাকেন, তাঁদের ভক্তরা সেটি নিয়ে সরব থাকেন। এ ছাড়া সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকেরাও গানের প্রচার করেন। ফলে দ্রুতই গান দর্শক-শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে যায়। অডিও গানে খুবই অবহেলিত। প্রচারের ক্ষেত্রে অডিও গান অনেক পিছিয়ে। শুধু শিল্পী যতটুকু প্রচার করেন, ততটুকুই। ফলে অডিও গান দর্শক-শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাতেও সময় লাগে।

প্রথম আলো :

নতুন কাজের খবর কি?

ইমরান মাহমুদুল : অনেকগুলো বড় প্রজেক্ট হাতে আছে। ‘জংলি’, ‘এশা মার্ডার’, ‘নূর’সহ বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের সিনেমার গান প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া একটি অনুদানের ছবির পাঁচটি গানই আমার সুরে করেছি। এর মধ্যে দুটি গানে আমি নিজেও কণ্ঠ দিয়েছি। ফুয়াদ ভাইয়ের সুরে আমার গাওয়া ‘মন বুঝলি না’ শিরোনামে একটি গান করেছি। কিছুদিনের মধ্যে ভিডিও ধারণ হবে। হাবিব ভাইয়ের সঙ্গে একটি গান নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। গানটি আমি তৈরি করছি। হাবিব ভাইয়ের পছন্দ হলে আমাদের দ্বৈতকণ্ঠে একটি গান আসতে পারে।