‘আসমা’ চরিত্রে আপনার অভিনয় নিয়ে কী বলছেন দর্শকেরা?
সুষমা সরকার: ভালো সাড়া পাচ্ছি। যদিও এটি সব শ্রেণির দর্শক দেখেননি। তারপরও যেসব দর্শক পৃথিবীর নানা প্রান্তের সিনেমা দেখেন, সিনেমা নিয়ে যাঁদের জানাশোনা বেশি; এমন অনেক দর্শকই ছবিটি দেখে তাঁদের মুগ্ধতার কথা বলেছেন। অনেক দর্শকই আমার অভিনয় নিয়ে আলাদা করে বলেছেন।
সেটি কেমন?
সুষমা সরকার: পরিচিত–অপরিচিত অনেক দর্শকই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। সিনেমাটি দেখতে বসে কিছু কিছু দর্শক সিনেমাটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে না পারলেও আলাদা করে আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। আমার ফেসবুক ইনবক্স ও ফোনের মেসেজ বক্স ভরে গেছে এমন বার্তায়। এখানে অভিনয়ের সুযোগও ছিল আমার। ‘আসমা’ বাবার আহ্লাদী মেয়ে। তবে সে প্রতিবাদী। যেটি দর্শকের কাছে আমার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে।
চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল?
সুষমা সরকার: আসমা চরিত্রটি আমার ব্যক্তিজীবনের পুরো উল্টো। চরিত্রটিতে অভিনয় করতে গিয়ে আমাকে প্রচুর গালাগালি করতে হয়েছে। ইদানীং নানা চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে টুকটাক এ ধরনের সংলাপ বলতে হয়। কিন্তু আট বছর আগে যখন ছবিটির শুটিং করি, তখন তো মুখে গালি আনার বিষয়টি ভাবতেই পারিনি। প্রস্তুতির খুব একটা সময় ছিল না। তারপরও আমার সহশিল্পী তারিক ভাই, জয়া আপার কাছ থেকে দারুণ সহযোগিতা পেয়েছি। এ ছাড়া পরিচালক আতিক ভাই তো ছিলেনই। আমি মনে করি, পরিচালকের সঙ্গে শিল্পীর বোঝাপড়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। সেই বোঝাপড়াটা আতিক ভাইয়ের সঙ্গে আমার আগেই ছিল। সব মিলে কাজটির পথ অনেকটাই সহজ হয়েছে।
বড় পর্দায় প্রিমিয়ারের দিন গুণী অভিনেতা আহমেদ রুবেলের আকস্মিক মৃত্যু হয়।
তাঁর সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন যদি বলতেন
সুষমা সরকার: রুবেল ভাইয়ের চলে যাওয়া এখনো ভুলতে পারছি না। প্রিমিয়ার শোর দুই দিন আগে থেকে ছবিটি প্রচার নিয়ে সারা দিনই একসঙ্গে ছিলাম। প্রিমিয়ার শোতে বসে একসঙ্গে সবারই ছবিটি দেখার কথা ছিল। সংশ্লিষ্ট সব শিল্পীরই পরিশ্রমের ছবি এটি। প্রায় আট বছর আগে শুটিং শুরু হওয়া সিনেমা এটি। মুক্তির কারণে আমরা রোমাঞ্চিত ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে গেল, মেনে নেওয়া কঠিন। রুবেল ভাই জাত অভিনেতা ছিলেন। আমাদের এই অঙ্গনে এমন দরাজকণ্ঠের শিল্পী আর আছে বলে মনে হয় না।
আর কী কাজ করছেন?
সুষমা সরকার: আমি যে খুব বেশি বেশি কাজ করি, তা নয়। এর মধ্যে ওটিটির জন্য দুটি সিরিজ শেষ করেছি। ‘এশা মার্ডার’ সিনেমার কাজও শেষ। এ ছাড়া ভোর নামে অনুদানের একটি ছবির শুটিংও শেষ হয়েছে। ‘একাত্তর: করতলে ছিন্নমাথা’ নামে অনুদানের আরেকটি ছবির শুটিংও শেষের পথে। পাশাপাশি বকুলপুর ধারাবাহিক করছি।
নাটকের চেয়ে সিনেমা ও ওটিটির কাজে বেশি সময় দেওয়া হচ্ছে কি
সুষমা সরকার: যেভাবে কাজ আসে, সেভাবেই করার চেষ্টা করি। তবে সিনেমা ও ওয়েবে আগ্রহ বেশি। অনেক সময় নাটক ও সিনেমার শুটিং শিডিউল মিলে যায়। নাটক ছেড়ে সিনেমার শিডিউল দিই। সিনেমা ও ওয়েবের কাজে আনন্দ আছে। সময় নিয়ে প্রস্তুত হয়ে কাজের সুযোগ আছে এখানে। সেটি নাটকে কম। এখানে বাজেটও একটা ব্যাপার।
থিয়েটারের খবর কী?
সুষমা সরকার: প্রায় দুই যুগের কাছাকাছি হয়ে গেল দেশ নাটকের সঙ্গে আছি। বর্তমান ‘নিত্যপুরাণ’ ও ‘জল বাসর’ নামে দুটি নাটকের নিয়মিত শো করি। এ ছাড়া একক নাটক পারো মঞ্চে এসেছে। এখানে একক চরিত্রটি বন্যা মির্জা ও আমি মিলে করেছি। এরই মধ্যে দুটি শো হয়েছে। দুটি শোই বন্যা মির্জা করেছেন। আমি হয়তো সামনে করব। একক অভিনয়ের কারণে নিজের মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছে।