২৯ বছর পর এই প্রথম মৌসুমীকে ছাড়া ঈদ করছি: ওমর সানী

একসময়ের জনপ্রিয় তারকা ওমর সানী। অনেক দিন পর এই ঈদে ‘ডেড বডি’ নামে একটি ছবি মুক্তির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি।। এসব নিয়ে ‘বিনোদন’-এর সঙ্গে কথা বলেছেন ঢালিউডের এই অভিনেতা।

প্রথম আলো:

‘ডেড বডি’ ছবিটি ঈদের তালিকা থেকে ছিটকে গেল কেন?

ওমর সানী: আমাদের হলসংখ্যা এমনিতেই কম। এতগুলো ছবির ভিড়ে মাত্র ৮-১০টি হলে ছবিটি মুক্তি দিয়ে লাভ নেই। এটি এমন একটি ছবি হয়েছে, ৮০-৯০টি হলে মুক্তি পাওয়া উচিত। ‘রাজকুমার’ বেশি হল পাবে, এটি স্বাভাবিক। রানিং বড় তারকা শাকিবের ছবি এটি। এতে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। শাকিবের এমন সময় আমাদেরও ছিল। আমার, মান্না সাহেব, রুবেল ভাইয়ের ঈদের ছবির রমরমা ব্যবসা ছিল। এখন আমাদের সেই অবস্থা নেই। শাকিব খানেরও এখনকার অবস্থা একসময় থাকবে না। দেখা যাবে, শাকিবের ছবি পাঁচটি হলও পাবে না। এটাই বাস্তবতা। এসব নিয়ে চিন্তা করার কারণ নেই। তারপরও আমার ছবিটি না আসার পেছনে প্রযোজক, পরিচালক ভালো বলতে পারবেন।

প্রথম আলো :

কিন্তু শোনা যাচ্ছে, ‘ডেড বডি’ নাকি কোনো হলই পায়নি। সত্যি নাকি?

ওমর সানী: এসব ভুল কথা, ফালতু কথা, এসব মিথ্যা কথা। একশ্রেণির মানুষ এসব রটাচ্ছেন এবং এসব কারা করছেন বা কাদের ইন্ধনে করা হচ্ছে, আমাদের জানা আছে, নলেজে আছে। এসব রটিয়ে কোনো লাভ হবে না, ফায়দা হবে না।

প্রথম আলো:

ছবিটি মুক্তি বাতিলে খারাপ লাগছে না?

ওমর সানী: কেন খারাপ লাগবে? এসব নিয়ে আমি মোটেই চিন্তিত নয়। কারণ, গত ৩২ বছরে বহুবার ঈদ উৎসবে আমার ছবি মুক্তি পেয়েছে। আমার ছবিও হল কাঁপিয়েছে। ফাটিয়ে ব্যবসা করেছে সেসব ছবি। সুতরাং এসব নিয়ে এখন আর ভাবি না। বলতে পারেন, চলচ্চিত্র নিয়েই এখন আর সেভাবে ভাবি না।

ওমর সানী ও মৌসুমী
সংগৃহীত

প্রথম আলো :

কিন্তু আপনার পরিচয়ই চলচ্চিত্র থেকে, চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবছেন না কেন?

ওমর সানী: কারণ, এখন এই জায়গায় নোংরাভাবে রাজনীতি ঢুকে গেছে। রাজনীতি আগেও ছিল, কিন্তু এতটা খারাপ ছিল না। কিছু খারাপ মানুষ এখানে ভিড়ে জায়গায়টি নষ্ট করে ফেলেছে। আর আমার সঙ্গেও এসব রাজনীতি যায়ই না। এসব কারণে আর এখানে কাজ করতে ইচ্ছা হয় না। একসময় মৌসুমী অভিনয় ছাড়তে চেয়েছিল। আমি বলে বলে কাজ করিয়েছি। এখন মনে হয়, সেটা আমার ভুল ছিল। এখন মৌসুমী কাজ না করতে চাইলে আর বাধা দেব না। এখন পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, শাবনূর-পপিরা সরে গেছে, ভালো করেছে। এখন থাকলে হিংসার রাজনীতিতে পড়ে ট্রলের শিকার হতে হতো তাদেরও।

প্রথম আলো:

শুনলাম, পরিবারের সদস্যদের ছাড়াই এবার একা একা ঈদ করবেন।

ওমর সানী: ছেলে ফারদিন দুবাই, বউমা কানাডায়। মৌসুমী ও মেয়ে ফাইজা যুক্তরাষ্ট্রে। সবাই প্রয়োজনেই দেশের বাইরে আছে। বাধ্য হয়েই এখানে আমাকে একা ঈদ করতে হচ্ছে। প্রায় ২৯ বছর পর এই প্রথম মৌসুমীকে ছাড়া ঈদ করছি। তবে তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সারা পৃথিবীই হাতের মুঠোয়। এমনিতে প্রায় প্রতিদিনই ভিডিও কলে সবার সঙ্গে কথা হয়, ঈদের দিনও কথা হবে।

মৌসুমী ও ওমর সানী
সংগৃহীত

প্রথম আলো :

ডেড বডি’ মুক্তির আগে পরিচালক বলেছিলেন, ঈদের অন্য ছবি এই ছবির কাছে পাত্তাই পাবে না। এখন ছবিটি মুক্তি বাতিল হওয়াতে অন্য ছবির ভক্তরা ট্রল করছেন। ছবির একজন শিল্পী হিসেবে মন্তব্য জানতে চাই।

ওমর সানী: আমার কী বলার, এটি পরিচালক বুঝবেন। তবে ফেসবুকে কারা ট্রল করছেন, সেটাও তো দেখছি। ‘রাজকুমার’ আগে রিলিজ হোক, ব্যবসা করুক। তারপর দেখা যাবে। কেন, ‘রাজকুমার’ নিয়েও তো অনেক সমালোচনা হচ্ছে, সেটাও দেখছি আমরা। আমার কাছে মনে হয়, সিনেমা নিয়ে এসব বাজে কালচার এ দেশ থেকে যত দিন না যাবে, তত দিন আর সিনেমার উন্নয়ন হয়তো চোখে দেখব না।